মেদিনীপুর মেডিক্যালে। রবিবার।
শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে আসা শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও। প্রতিদিনই এমন উপসর্গের শিশুরা আসছে। উদ্বিগ্ন তাদের অভিভাবকেরা। জানা যাচ্ছে, এখনই শিশু ওয়ার্ডের প্রায় সব শয্যাই ভর্তি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, শয্যার সমস্যা নেই। নতুন পরিকাঠামোও গড়ে উঠছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ‘‘সিজ়নাল জ্বর বলেই মনে হচ্ছে। মূলত মরসুম বদলের সময়ে এমনটা হয়। উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমরা সতর্ক আছি।’’ হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তারাপদ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘প্রথম দিকে সর্দি- কাশি হচ্ছে অনেকের। পরে শ্বাসকষ্ট বা অনান্য উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। উপসর্গ অনুযায়ী ওষুধ দিতে হচ্ছে।’’ তিনি মানছেন, ‘‘এখন যে সব শিশু ভর্তি রয়েছে, তাদের অনেকের শ্বাসকষ্টের উপসর্গ রয়েছে। তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’’ ভর্তি থাকা শিশুদের কারও বমি, কারও পেটের সমস্যাও রয়েছে। কমবেশি জ্বর থাকছে বেশিরভাগেরই। এক শিশু চিকিৎসক জানাচ্ছেন, প্রত্যেকের জ্বরের কারণ যে একই, তা কিন্তু নয়। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুরা বেশি রকম আক্রান্ত হবে, এমন সতর্কবার্তা রয়েছেই। হাসপাতালের এক শিশু চিকিৎসকের অবশ্য দাবি, ‘‘এই জ্বর, শ্বাসকষ্টের সঙ্গে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। কিছু ভাইরাস শিশু শরীরে ঢুকে সমস্যা তৈরি করছে। আমরা ভাইরাসের চরিত্র ধরার চেষ্টা করছি।’’
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রায় ১৮০টি (এসএনসিইউ-সহ) শয্যা রয়েছে। জানা যাচ্ছে, প্রায় ৯০ শতাংশ শয্যাই দখল রয়েছে। শনিবার নতুন করে ২৬ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। ২৪ জনেরই জ্বর, শ্বাসকষ্টের উপসর্গ রয়েছে। শিশু চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ, শিশুদের মধ্যে বাড়ছে ভাইরাল নিউমোনিয়া। এটি সাধারণত শীতের শুরু বা শেষের দিকে দেখা যায়। এ বার এখনই এর প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। এক চিকিৎসকের মতে, ‘‘এটা আবহাওয়া পরিবর্তনের জেরে ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধির ফল। বাড়ির বড়রা আগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সেখান থেকে সংক্রমিত হচ্ছে ছোটরা।’’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘বড়রা আক্রান্ত হলে ছোটদের থেকে দূের রাখুন। ছোটরা আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।’’
শুধু মেদিনীপুর মেডিক্যাল নয়, জেলার অনান্য হাসপাতালেও শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিশুদের জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের উপসর্গ সম্পর্কে এক গাইডলাইন তৈরি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। ওই গাইডলাইন হাসপাতালগুলিতে পাঠানো হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আক্রান্ত শিশুকে পর্যবেক্ষণের পদ্ধতি, তার চিকিৎসা, কী ভাবে পূর্বাভাস বুঝে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে, সে সবই বলা রয়েছে গাইডলাইনে।
তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যে হাসপাতালের পুরনো ভবনে শিশু-চিকিৎসায় নতুন পরিকাঠামো গড়ে উঠছে মেডিক্যালে। সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক রশ্মি কমল। ছিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের আধিকারিকেরাও। সেখানে ওই পরিকাঠামোর বিষয়ে কথা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy