E-Paper

শাহের সভায় জড়তা কাটবে, আশায় বিজেপি

দু'দিন আগে দাসপুরে এসে কার্যকর্তাদের ধর্মতলার সভায় বিপুল সংখ্যক লোক নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

ধর্মতলার পথে দাসপুরের বিজেপি নেতা-কর্মীরা।

ধর্মতলার পথে দাসপুরের বিজেপি নেতা-কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:০০
Share
Save

শাহি সভায় উজ্জীবিত হলেও ঘরমুখো বিজেপি কর্মীদের চিন্তায় রাখছে নিচুতলায় সাংগঠনিক দুর্বলতা।

বুধবার ধর্মতলায় দলের সভা উপলক্ষে দিন দশেক ধরে টানা প্রচার-প্রস্তুতিতে দলের কার্যকর্তারা কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, প্রতি বুথ থেকে যত বেশি সংখ্যক মানুষকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার। সেইমতো এ দিন বাসে, ট্রেনে, ছোট গাড়ি করে কলকাতায় যান কর্মী সমর্থকেরা। দিনের শেষে বিজেপি নেতৃত্ব বলছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে ৭-৮ হাজার কর্মী সমর্থক কলকাতার সভায় গিয়েছেন। ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে অবশ্য এ দিন অল্পসংখ্যক লোককে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সভা ফেরত এক বিজেপি নেতা ফোনে বললেন, "নেতৃত্বের বক্তব্যে আমরা উজ্জীবিত। কিন্তু নিচুতলায় সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটাতে হবে।"

এ দিন সাতসকালে ট্রেন ধরতে গড়বেতা স্টেশনে এসেছিলেন বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা। স্টেশনে পিএম কিসানের প্রচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাট আউট দেওয়া আছে। সেই কাট আউটে প্রণাম করে, প্রধানমন্ত্রীর ছবির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সভার উদ্দেশে ট্রেনে চাপেন তাঁরা। খড়্গপুরে সাংসদ দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে কলকাতায় অমিত শাহের সভার উদ্দেশে রওনা দেন রেলশহরের বিজেপি নেতা-কর্মীরা। এ দিন সকালে খড়্গপুর স্টেশন থেকে বিভিন্ন ট্রেন ধরে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেয় তাঁরা। খড়্গপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ বলেন, "মনে পড়ছে ২০১৪ সালে আমরা আদালতের অনুমতি নিয়েই এই ধর্মতলায় সভা করেছিলাম। সেই সময়েও আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতি হিসাবে অমিত শাহ ওই সভার প্রধান বক্তা ছিলেন। আমাদের দলের যেটুকু জড়তা ছিল এ বার তা-ও কেটে যাবে।" এদিন কেশিয়াড়ি, দাঁতন, মোহনপুর থেকে সভায় যান বহু বিজেপি কর্মী সমর্থক। এই এলাকার এক বিজেপি নেতা বলেন, "ধান কাটার মরসুম হওয়ায় অনেকের ইচ্ছে থাকলেও যেতে পারেনি।"

দু'দিন আগে দাসপুরে এসে কার্যকর্তাদের ধর্মতলার সভায় বিপুল সংখ্যক লোক নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এ দিন ঘাটাল থেকেই ৪০টি বাসে করে কয়েক হাজার কর্মী সমর্থক ধর্মতলায় যান। চন্দ্রকোনা, দাসপুর থেকেও বাস, ছোট গাড়ি করে সভার উদ্দেশে রওনা হন। অনেকে বাসে চেপে পাঁশকুড়া স্টেশনে নেমে ট্রেন ধরে কলকাতা যান। তৃণমূল অবশ্য বিজেপির কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরার কথায়, "শুধু ভাষণ দিলে হবে না, রেশন দিতে হবে। ভাষণ দিয়ে ভোট পাওয়া যায় না।"

জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রাম থেকে অমিত শাহের সভায় ছ’হাজার লোকজন নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, অল্প সংখ্যক দলের কর্মীকে ট্রেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দিলীপকুমার পাল জানাচ্ছেন, তাঁদের সংগঠনভুক্ত ২০-২৫টি বাস নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু শেষ বেলায় তারা বাস নিতে চায়নি। সূত্রের খবর, বিজেপির বর্তমান জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে পুরনো গোষ্ঠীর সংঘাত এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যে ধর্মতলায় শাহের সভায় নিয়ে যাওয়ার জন্য লোকজনই পাওয়া যায়নি। যদিও বিজেপি সূত্রের দাবি, ঝাড়গ্রাম থেকে হাওড়াগামী ট্রেনের যোগাযোগ ভাল থাকায় রাজ্য থেকেই বাসের বুকিং বাতিল করতে বলা হয়। বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলার পর্যবেক্ষক সুজিত অগস্তি বলছেন, ‘‘প্রায় হাজার চারেক কর্মী ট্রেনে সভায় যান।’’ জেলার এক প্রাক্তন বিজেপি পদাধিকারী বলছেন, ‘‘সভায় যাইনি। সংগঠনের যা অবস্থা তাতে নিজেকে হাস্যকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলার ইচ্ছে হয়নি।’’ যুবমোর্চার এক নিষ্ক্রিয় প্রাক্তন নেতা বলছেন, ‘‘দল থেকে সরে এসেছি। সভায় যাওয়ার প্রশ্নই উঠছে না।’’

ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমও শাহের সভায় যাননি। বিজেপি সূত্রের খবর, কুনারের ঘনিষ্ঠ কর্মীদের দলে ক্রমাগত কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। কুনার ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তুলে বহিষ্কারও করেছিলেন বর্তমান নেতৃত্ব। কুনার অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি খুবই অসুস্থ। ফুসফুসে সংক্রমণের জন্য বাড়িতে আছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Amit Shah Dharmatala BJP

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।