Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Martyr's Day

নন্দীগ্রামে থেকেও ‘গর্বে’ নেই শুভেন্দু

শনিবার, ১৪ মার্চ ছিল নন্দীগ্রামের ‘শহিদ দিবস’।

শনিবার শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র

শনিবার শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০৬:২১
Share: Save:

একই দিনে দু’টি অনুষ্ঠান হল জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘরে। একটিতে সকাল-সন্ধ্যা দু’বেলাই হাজির স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। আর অন্য কর্মসূচিটি সারলেন তাঁর বিধানসভা প্রতিনিধি।

শনিবার, ১৪ মার্চ ছিল নন্দীগ্রামের ‘শহিদ দিবস’। প্রতিবারের মতো এ দিন সেই স্মৃতিতর্পণ মঞ্চেই হাজির ছিলেন শুভেন্দু। মূল অনুষ্ঠানটি হয়েছে সকালে। সন্ধ্যাতেও মোমবাতি মিছিলে হাজির ছিলেন শুভেন্দু। আর এ দিনই নন্দীগ্রামে হয়েছে তৃণমূলের নতুন জনসংযোগ কর্মসূচি ‘বাংলার গর্ব মমতা’। সেখানে হাজির ছিলেন দলের বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান তথা ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পাল।

বস্তুত, ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচি যে দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় ঘোষণা করেছিলেন, সে দিনও অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিলেন শুভেন্দু। ছিলেন না ‘অধিকারী পরিবারে’র কেউই। তারপর থেকে নানা জল্পনা চলছে।

এ দিন নিজের বিধানসভা এলাকায় হাজির থেকেও ‘গর্বে’র প্রচারে থাকলেন না কেন?

শুভেন্দুর জবাব, ‘‘আমি তো নন্দীগ্রামের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে ছিলাম। আমার বিধানসভা প্রতিনিধি হিসাবে মেঘনাদ পাল ওই কর্মসূচি করেছেন। এতে তো অসুবিধার কিছু নেই।’’ মেঘনাদও বলছেন, ‘‘শুভেন্দুবাবু তাঁর বিধানসভা প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা পালন করেছি।’’

হলদিয়ায় মা ও মেয়ে খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত শেখ সাদ্দামের সঙ্গে শুভেন্দুর ছবি ঘিরে সাম্প্রতিক কালে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। এমন ছবি ছড়িয়ে শুভেন্দুর মানহানির অভিযোগে এক বৃদ্ধ বামকর্মী গ্রেফতারও হয়েছেন। এ দিন নন্দীগ্রামের শহিদ স্মরণ মঞ্চে সাদ্দাম প্রসঙ্গে মুখ খোলেন শুভেন্দু। ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘আমি হলদিয়ার দুর্গাচকে সাদ্দামের দাদা আফতাবের বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলাম। পারিবারিক অনুষ্ঠানে সাদ্দাম আমার ছবি তুলেছিল। সেই ছবি নিয়ে সিপিএম-বিজেপি পোস্টার করেছে।’’

এ দিন সকাল সাড়ে দশটায় নন্দীগ্রামের অধিকারী পাড়ায় শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রামের ভাঙাবেড়ার শহিদ মিনারে মাল্যদান করে শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ দিন আগাগোড়াই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের স্মৃতি উস্কে বামেদের বিঁধেছেন শুভেন্দু। ‘‘২০০৭ সালে বহু মানুষকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছিল। নিজেদের ভূমি রক্ষা করার জন্য তাঁরা প্রাণ দিয়েছিলেন। তৎকালীন সরকারের হার্মাদ বাহিনী মহিলার সম্মান হরণও করেছে।’’ পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের গণহত্যাকারীরা এখনও কেন বাইরে থাকবে? সিবিআই তদন্ত করে উল্টে আন্দোলনকারীদের উপর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের দায় চাপিয়েছে। ১৯৮৪ সালের শিখ আন্দোলন, ১৯৯৬ সালে ভাগলপুর আন্দোলনের বিচার হলে নন্দীগ্রামের আন্দোলন বিচার হবে না কেন?’’

এ প্রসঙ্গে সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির বক্তব্য, ‘‘শুভেন্দুবাবু মিথ্যাচার করছেন। সাদ্দামের ফেসবুকে বিয়েবাড়ি ছাড়াও অসংখ্য শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে ছবি আছে। বোঝাই যাচ্ছে পোস্টার শুভেন্দুবাবুর গায়ে লেগেছে খুব। তাই তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে যারা যারা পোস্টার লাগিয়েছিল তাদের জেলে রাখতে চাইছেন।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘২০০৭ সালে মহিলাদের উপর অত্যাচারীদের এখনও শাস্তি না হওয়ার ব্যর্থতা তো শুভেন্দুবাবু ও তাঁদের সরকারের। কারণ, গত ৯ বছর তো শুভেন্দুবাবুরাই ক্ষমতায় আছেন।’’

বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েকেরও কটাক্ষ, ‘‘শুভেন্দুবাবুর মিথ্যাচার হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছেন হলদিয়ার মানুষ। তাঁরা জানেন তৃণমূলের নেতারা চারপাশে কাদের নিয়ে ঘুরে বেড়ান। এই সাদ্দাম লোকসভায় তৃণমূলের হয়ে ভোট লুট করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল। কোন এক মন্ত্রীর নির্দেশে তিন দিনের মধ্যে জামিন পেয়েছিল তা-ও হলদিয়াবাসী জানেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Martyr's Day Nandigram TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE