মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। —ফাইল ছবি
মেদিনীপুর জেলে তাঁর যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না। পরিজনেদের কাছে এমনই নালিশ জানিয়েছেন এক মাওবাদী বন্দি। শিলদা মামলায় অভিযুক্ত ওই মাওবাদী বন্দির নাম বুদ্ধদেব মাহাতো। বাড়ি ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে। তিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। সূত্রের খবর, প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়ে জেল- কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন বুদ্ধদেব। ছত্রধর মাহাতোর কাছেও না কি এক চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি মেদিনীপুর জেলে এসে বুদ্ধদেবের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন তাঁর মা নিয়তি মাহাতো। তিনি জেল- কর্তৃপক্ষের কাছে ছেলের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছেন। নিয়তি বলেন, ‘‘রোগ শরীরে বাসা বাঁধলেও যথাযথ চিকিৎসার অভাবে আমার ছেলে সমস্যায় পড়েছে।’’জেল- কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, ওই বন্দির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। কয়েকদিন আগেই তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছিল। চিকিৎসকেরা তাঁকে দেখেছেন। দেশদ্রোহের অভিযোগ থাকায় বর্তমান আইন অনুযায়ী বুদ্ধদেব এখন রাজনৈতিক বন্দির তকমা পান না। ওই মাওবাদী বন্দির চিকিৎসা নিয়ে সরকারি স্তরে অবহেলা করা হচ্ছে বলে দাবি মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর- এরও। এপিডিআর- এর জেলা সম্পাদক বাণীকান্ত বারিক বলেন, ‘‘বন্দি হলেও তো ওর যথাযথ চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তা অবহেলিত থাকবে কেন? শীঘ্রই আমরা জেল- কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করব। ওর যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানাব।’’
সূত্রের খবর, ছত্রধর মাহাতোর কাছে পাঠানো চিঠিতে বুদ্ধদেব না কি লিখেছেন, ‘আমার শরীর খুবই খারাপ। কিডনির সমস্যা ধরা পড়েছে। এত বছর বলে বলে যেই বিভিন্ন পরীক্ষা- নিরীক্ষা হল, কিডনির সমস্যা ধরা পড়ল। চিকিৎসার কোনও গুরুত্ব নেই। যে কোনও দিন কিছু একটা হয়ে যেতে পারে’। ছত্রধর এখন প্যারোলে রয়েছেন।
প্রায় ন’বছর ধরে জেলবন্দি রয়েছেন বুদ্ধদেব। বাবা শঙ্কর মাহাতো খেতমজুর। বুদ্ধদেব শিলদা কলেজের ছাত্র ছিলেন। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, ২০১০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। ওই দিন কলেজ থেকে বাড়িতে ফিরে বইখাতা রেখে জলঢালা ভাত খেতে বসেছিলেন ওই যুবক, তখনই বেলপাহাড়ি থানার পুলিশ এসে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়ে যায়, বুদ্ধদেব মাওবাদী। শিলদা মামলায় অভিযুক্ত। তাই এই গ্রেফতার। ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছিল মাওবাদীরা। প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৪ জন জওয়ান।
পরিজনেদের কাছে বুদ্ধদেবের নালিশ, তাঁর ঠিকঠাক চিকিৎসা হচ্ছে না। তাঁকে জোর করে মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। ওই জানিয়েছেন, তাঁর কোনও মানসিক সমস্যা নেই। যত শীঘ্র সম্ভব কলকাতার হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ বুদ্ধদেবের।
মেদিনীপুর জেলের সুপার সৌমিক সরকার বলছেন, ‘‘আমি এমন কোনও চিঠি পাইনি। আর সংশোধনাগারের আবাসিকদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপই করা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy