Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Fishes

দিঘার সৈকতে ‘মাছে’র দেহ, দূষণের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ‘মাছ’গুলির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নিয়ে গিয়েছেন মহিষাদল রাজ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কয়েকজন পড়ুয়া।

নিউ দিঘার সৈকত জুড়ে ‘পাফার্স ফিসে’র দেহ।

নিউ দিঘার সৈকত জুড়ে ‘পাফার্স ফিসে’র দেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দিঘা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২১ ০৬:৫০
Share: Save:

সৈকতের শয়ে শয়ে পড়ে রয়েছে মাছের মতো দেখতে প্রাণীর দেহ। মুখের কাছে খানিকটা ব্যাঙের মতো ফোলা। যা দেখতে সোমবার বিকেল থেকে নিউ দিঘার সৈকতে আসছেন বহু মানুষ।

‘ইয়াস’-এর জলোচ্ছ্বাসের পরে বর্তমানে ওই মৃত প্রাণী ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সৈকত শহরে। নিউ দিঘার পুলিশ হলিডে হোম স্নানঘাটের কাছে কোথাও সমুদ্রের জলে মৃত অবস্থায় সেগুলি ভাসছে। আবার কোথাও ভাটার সময় বালির উপরে পেট ফোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয়দের কাছে এগুলি সমুদ্র ব্যাঙ বলে পরিচিত। দিঘা, শঙ্করপুর এলাকায় ‘কুটুনিয়া’ নামেও পরিচিত। তবে দেহগুলি ‘পাফার্স ফিসে’র বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। একে বেলুন বা বাবল ফিস বলেও। এরা যথেষ্ট বিষাক্ত। এদের বিজ্ঞানসম্মত নাম, টেট্রাওদন কুটুনিয়া।

মঙ্গলবার ‘মাছ’গুলির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নিয়ে গিয়েছেন মহিষাদল রাজ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কয়েকজন পড়ুয়া। সংশ্লিষ্ট কলেজে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শুভাশিস দাস বলছেন, ‘‘এ ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী মূলত সমুদ্রের নোনা জলে থাকতে পছন্দ করে। গিরগিটির মতো রং বদলাতে পারে। বিশালাকৃতির মাছ এদের খেতে গেলে, এরা পেট ফুলিয়ে নেয়।’’

ওই অধ্যাপক জানাচ্ছেন, এদের গায়ের চামড়া অত্যন্ত শক্ত। একে ছুঁলে হাতের নরম অংশে চুলকানি হতে পারে। এমনকী, শরীর অসাড় হয়ে প্যারালাইসিস পর্যন্ত হতে পারে।

এ ধরনের ‘সামুদ্রিক ব্যাঙ’ আগে বহুবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূল এলাকায় দু-একটা দেখা গিয়েছে। তবে এখন ঝাঁকে ঝাঁকে মৃত অবস্থায় মেলায় উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞেরা। শুভাশিস বলছেন, ‘‘গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে উপকূলবর্তী এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে। এর ফলে সমুদ্রের জলের লবনতা কিছুটা কমে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রেও প্রাণীগুলি তাদের পছন্দের জায়গা খোঁজার উদ্দেশ্যে হয়তো সমুদ্র পাড়ের দিকে চলে এসেছে। তাতেই মারা গিয়েছে।’’

এ ধরনের বিষাক্ত প্রাণী বিপুল সংখ্যায় সমুদ্র সৈকতের ধারে পড়ে থাকায় দূষণের সম্ভাবনা দেখছেন পরিবেশবিদরা। এ ব্যাপারে দিঘা বিজ্ঞান কেন্দ্রর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক নারায়ণচন্দ্র গুপ্ত বলেন, ‘‘উপকূলবর্তী এলাকায় বাস্তুতন্ত্রের উপরে একটা প্রভাব ফেলবে। পার্শ্ববর্তী এলাকায় দূষণ ছড়িয়ে পড়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়।’’

এই বিশেষ ধরনের সামুদ্রিক প্রাণীকে নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ প্রশাসনিকভাবে করা হয়নি। এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বন আধিকারিক অনুপম খান বলেন, ‘‘যেসব সামুদ্রিক প্রাণী মৃত অবস্থায় ভেসে এসেছে, তাদের সংরক্ষণ কারা করবে, তা নিয়ে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

digha Fishes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy