শুক্রবার ছুটির দিনেও শুনশান মন্দারমণির সৈকত। নিজস্ব চিত্র।
শনি-রবি সপ্তাহান্তের ছুটির সঙ্গে জুড়ছে শুক্রবার গুরু নানকের জন্মদিনের ছুটি। তিন দিনের এই টানা ছুটিতেও ভিড় নেই মন্দারণিতে।
কিন্তু কেন?
জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে বেআইনি নির্মাণের জন্য মন্দারমণির ১৪০টি হোটেল ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তার উপর উৎসবের মরসুম হওয়ায় হোটেল,লজে নিয়মিত পুলিশি অভিযানও চলছে। তাই ঝুটঝামেলা এড়াতে পর্যটকেরা মন্দারমণি এড়াচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এতে মাথায় হাত মন্দারমণির হোটেল মালিকদের। রুটি-রুজি জোগাড় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলে।
১১ নভেম্বর সিআরজেড (কোস্টাল রেগুলেটেড জ়োন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি)-র জেলা কমিটির তরফে মন্দারমণি এবং সংলগ্ন আরও চারটি মৌজায় ১৪০টি হোটেল, লজ, রিসর্ট এবং হোম স্টে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০ নভেম্বরে মধ্যে ওই সব বেআইনি নির্মাণ ভেঙে জায়গা পরিষ্কার করতে হবে, নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০২২ সালে এই বেআইনি হোটেলগুলি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কারণ, হোটেলগুলি উপকূল বিধি না মেনেই গড়ে উঠেছিল। এর মধ্যে শুধু দাদনপাত্রবাড়েই রয়েছে ৫০টি হোটেল, সংলগ্ন সোনামুইয়ে ৩৬টি, সিলামপুরে ২৭টি, মন্দারমণিতে ৩০টি হোটেল এবং দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর মৌজায় একটি লজ রয়েছে। এ সবই ভাঙা পড়ার কথা।
এই আবহে তিনদিনের টানা ছুটিতেও মন্দারমণি প্রায় শুনশান। শুক্রবার বিকেলে দাদনপাত্রবাড়ে বিশ্ববাংলা পার্কের কাছে পর্যটকদের সামান্য ভিড় ছিল। বাকি মন্দারমণির সমুদ্র সৈকত ছিল ফাঁকা। রাস্তাঘাটেও ভিড় ছিল না। ডিসেম্বরে ভরা পর্যটন মরসুম শুরু হবে। তার আগে হতাশ ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় বাসিন্দা, পেশায় ফটোগ্রাফার সোমনাথ প্রধান বলেন, ‘‘অন্যের থেকে টাকা ধার দিয়ে ক্যামেরা কিনেছি। পর্যটকদের ছবি তুলে দুটো টাকা উপার্জন করতাম। এখন যদি হোটেল ভেঙে দেয়, তাহলে আর পর্যটকরা আসবে কেন!’’ স্থানীয় দোকানদার অশোক পন্ডাও বলেন, ‘‘পর্যটকরাই আমাদের লক্ষ্মী। হোটেল-লজ ভেঙে দিলে আমরা যে লক্ষ্মীছাড়া হয়ে যাব।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, মন্দারমণি এবং সংলগ্ন চারটি মৌজায় কমবেশি ২৫০টি হোটেল-লজ রয়েছে। দশ হাজারের কাছাকাছি মানুষের রুটিরুজি এর উপর নির্ভরশীল। স্থানীয় বহু মৎস্যজীবীও পেশা বদলে হোটেলে কাজ করছেন। মন্দারমণিহোটেল মালিক সংগঠনের সভাপতি মমরেজ আলি বলেন, ‘‘প্রশাসনিক নির্দেশ কার্যকর হলে মন্দারমণিতে সকলেই ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগের উপরে আস্থা হারাবেন শিল্পপতিরা। আগামী দিনেকী হবে, তা নিয়ে সকলেই চিন্তিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy