নজরদারি: কর্নেলগোলার এই এলাকাতেই রবিবার রাতে অশান্তি হয়। সোমবার সেখানে পুলিশের নজরদারি ছিল। নিজস্ব চিত্র
কালীপুজোর রাত। রাস্তায় উৎসবমুখর জনতার ভিড়। তারই মাঝে বাধল বিপত্তি। পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল এক যুবককে। রবিবার, কালীপুজোর রাতে এমন ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে মেদিনীপুর শহরের নিরাপত্তা।
মৃতের নাম রাজু নিমাই (২১)। বাড়ি নিমতলাচকের কাছে। মারধরে গুরুতর জখম হয়েছেন আরও তিনজন যুবক। জখমদের মধ্যে দু’জন মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। অন্য একজনকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালে ময়না তদন্তের পরে সন্ধ্যায় রাজুর মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় তার পরিজনেদের হাতে। পরিজনেরা দেহ নিয়ে নিমতলাচকের কাছে পথ অবরোধ করেন। তাঁদের দাবি, অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
পুলিশের এক সূত্রের দাবি, দু’দল দুষ্কৃতীর মধ্যে গোলমালেই এই ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, পুরনো শত্রুতার জেরেই এই খুন। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পুরনো শত্রুতা থাকতে পারে।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, মারধরে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবারই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই ধৃতদের নাম সামনে আনছে না পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনায় জড়িত বাকিদের নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘আশা করি, শীঘ্রই ঘটনার কিনারা করা সম্ভব হবে।’’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার গভীর রাতে শহরের কর্নেলগোলার কাছে ঘটনাটি ঘটে। রাজুরা ৫- ৬ জন ছিল। তারা বাইকে গোলকুয়াচক পেরিয়ে কর্নেলগোলার উপর দিয়ে ধর্মার দিকে যাচ্ছিল। কর্নেলগোলার কাছে রাস্তার উপরই তাদের ঘিরে ধরে একদল যুবক। জখম সুরজিৎ দাসের কথায়, ‘‘রবিবার রাতে আমরা কালীঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলাম। কর্নেলগোলার কাছে একদল যুবক আমাদের ঘিরে ধরে। অনেকের হাতে রড, লাঠিসোটা ছিল। কিছু বোঝার আগেই পেটাতে শুরু করে। কেন আমাদের মারধর করা হল বুঝতে পারছি না।’’ রাজুর বন্ধু প্রশান্ত দোলইয়ের দাবি, ‘‘রাজু ভাল ছেলে। কারও সঙ্গে গোলমাল করেনি।’’ ছেলেকে হারিয়ে হাহাকার করছেন রাজুর মা সন্ধ্যা নিমাই। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে যারা এ ভাবে খুন করেছে, আমি তাদের শাস্তি চাই।’’
মাস কয়েক আগে মেদিনীপুরে এক যুবক খুন হন। ধর্মার কাছে গুলি করে মারা হয়েছিল তাকে। ওই ঘটনার সঙ্গে রাজ কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তদন্তে তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে যাদের দিকে অভিযোগের তির, তাদের কয়েকজনের নামে আগেও দুষ্কর্মের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তকারীদের অনুমান, পূর্ব পরিকল্পনামাফিক কালীপুজোর রাতে গোলমালের ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। রাজুরা যে ধর্মার দিকে যাচ্ছে, সম্ভবত সে খবরও ছিল অভিযুক্ত যুবকদের কাছে। রাতের শহরে পুলিশি নজরদারি থাকার কথা। তাও কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, প্রশ্ন উঠছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলের আশপাশে একাধিক সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের অনুমান, ফুটেজ থেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে। তদন্তে কি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে? পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার মানছেন, ‘‘তদন্তে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তা খতিয়েও দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy