Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
midnapore

Arrest: আদিবাসী মহিলার টাকা আত্মসাতে গ্রেফতার

বিনপুরের কানিমহুলি গ্রামের বাসিন্দা উমা কিস্কুর স্বামী মঙ্গল কিস্কু গত বছর মারা যান। পেশায় প্রান্তিক চাষি মঙ্গল কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় ছিলেন।

ঝাড়গ্রাম সদরের মহকুমাশাসকের কাছে উমা কিস্কু।

ঝাড়গ্রাম সদরের মহকুমাশাসকের কাছে উমা কিস্কু। নিজস্ব চিত্র।

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২২ ০৬:৩৯
Share: Save:

ঝাড়গ্রাম সদরের মহকুমাশাসকের তৎপরতায় আর্থিক প্রতারণার হাত থেকে বাঁচলেন এক বিধবা আদিবাসী মহিলা। তবে ইতিমধ্যেই মহিলাকে ভুল বুঝিয়ে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে সরকারি কৃষক বন্ধু প্রকল্পে স্বামীর ‘ডেথ বেনিফিট’ বাবদ জমা পড়া দু’লক্ষ টাকার মধ্যে ৩৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন অভিযুক্ত প্রতারক। অভিযুক্ত অশেষ কল্যার বাড়ি বিনপুর থানার শিলদা অঞ্চলের জামিরাশুলি গ্রামে। বুধবার বিকেলে জামিরাশুলি গ্রাম থেকে অশেষকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও আদিবাসী নিপীড়ন প্রতিরোধ আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছে বিনপুর থানার পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে হাজির করা হবে।

বিনপুরের কানিমহুলি গ্রামের বাসিন্দা উমা কিস্কুর স্বামী মঙ্গল কিস্কু গত বছর মারা যান। পেশায় প্রান্তিক চাষি মঙ্গল কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় ছিলেন। ওই প্রকল্পে মৃত্যুকালীন দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন মৃতের নিকটাত্মীয়, বিষয়টি জানার পরে উমা বেলপাহাড়ি ব্লক সহ-কৃষি অধিকর্তার দফতরে আবেদন করেন। উমা কেবল নিজের নামটুকু সই করতে পারেন। ফলে তাঁকে আবেদনপত্র পূরণে ও আবেদনপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছিলেন পাশের জামিরাশুলি গ্রামের পেশায় মুরগি ব্যবসায়ী অশেষ কল্যা। উমার অভিযোগ, আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময়ে উমা ও তাঁর প্রয়াত স্বামীর ভোটার কার্ড, আধার কার্ড ও স্বামীর মৃত্যুর শংসাপত্র অশেষ নিজের কাছে রেখে দেন। সেগুলি আর উমা ফেরত পাননি। এরপরে অশেষ সপ্তাহখানেক আগে উমাকে জানান, ‘ডেথ বেনিফিট’ পাওয়ার আবেদন মঞ্জুর হয়েছে।

এরপরই গত ৯ জুলাই জামিরাশুলি গ্রামে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে (কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট) উমাকে নিয়ে যান অশেষ। সেখানকার গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে বায়ো-মেট্রিক পদ্ধতিতে উমার আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। উমার দাবি, আঙুলের ছাপ নেওয়ার পরে অশেষ জানান, উমার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে। কিন্তু পরে উমা পরে জানতে পারেন, তাঁর আঙুলের ছাপ নিয়ে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫ হাজার টাকা অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে এবং দশ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে উমা জানিয়েছেন, টাকা, ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড ফেরত চাইলে অশেষ আরও এক লক্ষ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে উমা প্রাপ্য টাকা পাবেন না বলে জানিয়ে দেন অশেষ। উমার অভিযোগ, এরপর অশেষ তাঁর ‘জাত’ তুলেও অসম্মানজনক মন্তব্য করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।

এরপর মঙ্গলবার উমা নিজেই হাজির হন ঝাড়গ্রাম সদরের মহকুমাশাসক বাবুলাল মাহাতোর কাছে। মহকুমাশাসককে লিখিত অভিযোগ করেন উমা। উমার অভিযোগপত্রটি বিনপুর থানার আইসির কাছে পাঠিয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেন মহকুমাশাসক। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে বুধবার অশেষকে গ্রেফতার করা হয়। অশেষ গ্রেফতার হতেই তাঁর ঘনিষ্ঠজনরা উমাকে নানা ভাবে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারে চাপ দেন বলে অভিযোগ। বুধবার সন্ধ্যায় ফের মহকুমাশাসকের কাছে এসে নালিশ জানান উমা। এ দিন উমা বলেন, ‘‘আমি লেখাপড়া জানি না বলেই আমাকে ঠকিয়েছে অশেষ।’’ মহকুমাশাসক (সদর) বাবুলাল মাহাতো বলেন, ‘‘অসহায় আদিবাসী মহিলাকে ঠকানোর এই দুষ্কর্মে আরও কেউ যুক্ত কি না, সেটা খতিয়ে দেখতে বলেছি।’’ এই প্রসঙ্গে এসডিপিও (বেলপাহাড়ি) উত্তম গরাঁইন বলেন, ‘‘মহকুমাশাসক বিষয়টি আমাদের জানান। এরপরে উমা কিস্কুর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে অশেষ কল্যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

midnapore Fraud
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy