মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেব। মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে দাসপুরের সোনার হাব-সহ ঘাটাল মহকুমায় একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মুখে শোনা গেল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথাও। বহু প্রতীক্ষিত এই প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রকেই নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন মেদিনীপুরের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত হয়ে গেলে ১৭ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। আমাদের মন্ত্রীরা দিল্লিতে তিন-চার বার গিয়ে দরবার করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত ছাড়পত্র দিচ্ছে না।” মমতার আরও দাবি, “আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে কিছু কাজ করেছি। বেশ কিছু খালের পুনঃখনন হয়েছে। এতে ঘাটাল সংলগ্ন পাঁশকুড়া এলাকার মানুষের সুবিধা হবে। তাছাড়া কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-বাগুই খাল ৬৫০ কোটি টাকা দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। এতে ১৪ টি ব্লকের চার লক্ষের বেশি মানুষ উপকৃত হবেন।”
কেশপুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় না থাকলেও এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব। সভায় দেব বলেছেন, ‘‘আমি একটাই কথা বলব, আমাদের দিদি শুধু কথা দেয় না, কথা রাখে। এটাই হচ্ছে (এত পরিষেবা প্রদান) সবচেয়ে বড় প্রমাণ। অন্য নেতা কিংবা অন্য মুখ্যমন্ত্রীর কথা যদি বলি, তাঁরা কথা দেন, আবার যখন নির্বাচন আসে তখন আবার কথা দেন। আমাদের দিদি কথা রাখে। এই কারণে দিদিকে এত মানুষ ভালবাসে। এই ভালবাসা যেন দিদির প্রতি অটুট থাকে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তারকা সাংসদের মন্তব্য, ‘‘দিদি, আমরাও আপনাকে খুব ভালবাসি।’’
উল্লেখ্য, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রসঙ্গ সংসদে তুলেছিলেন দেবও। গত বছর ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পে ‘ইনভেস্টমেন্ট ক্লিয়ারেন্স’ দেয় কেন্দ্র। এ বার বাজেটে এই প্রকল্পের জন্য কোনও টাকা বরাদ্দ করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। বছর দু’-তিনেক আগে থেকেই অবশ্য মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণে উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য। বিক্ষিপ্ত ভাবে টাকা বরাদ্দ হয়। ইতিমধ্যেই বছর খানেক আগে দাসপুরের পলাশপাই খাল খননের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে দাসপুরের গোমরাই, চন্দ্রেশ্বর খালের সংস্কার কাজও শেষ। দুর্বাচটি খাল সংস্কারও শেষ। সংস্কার হওয়া সবকটি খাল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জরুরি অংশ বলে সেচ দফতর জানিয়েছে। এখনও একাধিক খালের সংস্কার চলছে। খালগুলি সংস্কারের ফলে জলধারণ ক্ষমতা বাড়বে। টাকা বরাদ্দ হলেই দ্রুত কাজ শুরুর লক্ষ্যে প্রকল্পের অধীন ৩৫৮ কিলোমিটার নদীবাঁধের উপর সমীক্ষার কাজ শেষ করেছে রাজ্য সরকার। প্রাথমিক সমীক্ষায় প্রকল্পের সার্বিক বাস্তবায়নের জন্য নানা তথ্য সংগ্রহ করেছে সমীক্ষক দলের প্রতিনিধিরা। কোথায় কোথায় নতুন নদীবাঁধ নির্মাণ করা জরুরি, কোথায় নদী কতটা চওড়া হবে,কোন নদীর কোথায় কতটা খনন করতে হবে তার প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়েছে।
প্রশাসনিক সভা থেকে দাসপুরে সোনার হাবের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২০ সালে খড়্গপুরের প্রশাসনিক সভায় এই হাব গড়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক মাস আগে দাসপুর-২ ব্লকের ফরিদপুরের জন্য জমি চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন। দাসপুরের অনেকেই সোনার কাজের যুক্ত। হাব হলে এই এলাকায় সোনার গয়না উৎপাদন এবং বাজার তৈরি হবে বলে দাবি প্রশাসনের। এদিন দাসপুর-২ ব্লকের জলজীবন মিশন প্রকল্পে তিনটি নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহের শিলান্যাস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দাসপুর-১ ব্লক ও ঘাটালে চারটি কঠিন বর্জ্য নিষ্কাষণ ব্যবস্থাপনা, ঘাটাল ব্লকের সুলতনপুরে রাস্তা, রাধানগরে আদিবাসীদের কমিউনিটি হল এবং বীরসিংহে পানীয় জল প্রকল্পের উন্নিতকরণের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের কঠিন বর্জ্য নিষ্কাষণ, রামগড়ে রাস্তার শিলান্যাস হয়। ১,২০০ জনকে সবুজসাথীর সাইকেল দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy