সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীরই ফোন!
মোবাইলে কল এসেছিল। আর পাঁচটা কলের মতোই। নম্বরটা ছিল অচেনা। কলটা রিসিভ করতেই চমকে ওঠেন মেদিনীপুরের বাসিন্দাটি। ওপ্রান্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্ঠস্বর। ‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছি...।’ মেদিনীপুরের বাসিন্দাটি বলছেন, ‘‘অচেনা নম্বর। স্বভাবতই নম্বরটা মোবাইলে সেভ ছিল না। রিসিভ করতেই শুনি মুখ্যমন্ত্রীর কন্ঠস্বর।’’ তিনি জুড়ছেন, ‘‘এমন কল এই প্রথম পেলাম। এক কথায় তো এটা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীরই ফোন! হোক না তাঁর কন্ঠস্বরের অডিয়ো রেকর্ড। আমি আপ্লুত!’’
সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে আজ, শনিবার থেকে ফের শুরু হচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। এ বারে শিবির নিয়ে যাওয়া হচ্ছে একেবারে বুথে। শিবিরের প্রচারে মুখ্যমন্ত্রীও। মুখ্যমন্ত্রীর অডিয়ো বার্তা পাচ্ছেন আমজনতা। বার্তায় জানানো হচ্ছে, ‘প্রত্যেকটি মানুষ যাতে আমাদের মা-মাটি-মানুষের সরকারের পরিষেবা হাতের নাগাল পান, তাই আমাদের সরকার ১ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত দুয়ারে সরকার কর্মসূচি করছে। আপনারা পরিষেবা পেতে নিকটবর্তী ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করুন’। সরকারি পরিষেবা হাতের নাগালে পৌঁছে দিতেই শিবির, মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা পৌঁছচ্ছে আমজনতার কাছে। এই বার্তাও দেওয়া হচ্ছে, পরিষেবা নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে শিবিরে যান। মমতার বার্তা, ‘বাংলার উন্নয়নে এই মহাযজ্ঞে শামিল হন। আমাদের ধন্য করুন।’
এ বার ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির ষষ্ঠ পর্ব। অনেকে মনে করাচ্ছেন, শিবিরের এমন প্রচার এই প্রথম। পঞ্চায়েত ভোট দোরগোড়ায়। তাই কী এমন অভিনব প্রচারের পরিকল্পনা, চর্চা অব্যাহত। বিভিন্ন মহল মনে করাচ্ছে, গত বিধানসভা ভোটের আগে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃতীয়বার মমতাকে নবান্নে ফিরতে সাহায্য করেছিল এই কর্মসূচি। গত বছরের শেষে কর্মসূচির পঞ্চম পর্ব হয়েছে। এ বার ওই কর্মসূচির ষষ্ঠ পর্ব। আজ, ১ এপ্রিল, শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে এই শিবির। চলবে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত। পরবর্তী ১০ দিনে, অর্থাৎ ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সুবিধাপ্রদান করা হবে।
শিবির আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি সারা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। এ বার বুথভিত্তিক শিবির হবে। জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরী বলেন, ‘‘জেলায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিবির হতে চলেছে এ বার। এটা একটা বিরাট কর্মসূচি। প্রস্তুতি সারা হয়েছে।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, এই পর্বে পশ্চিম মেদিনীপুরে সবমিলিয়ে প্রায় ৫,৩০০টি শিবির হতে পারে। এর মধ্যে ৪,২০০টি শিবির হতে পারে কোনও না কোনও বুথ এলাকায়। বাকি ১,১০০টি শিবির হতে পারে ভ্রাম্যমাণ। জেলায় ২১টি ব্লক এবং ৭টি পুরসভা রয়েছে। প্রায় ৫,৩০০টি শিবিরের মধ্যে প্রায় ৪,৬০০টি শিবির হতে পারে গ্রামাঞ্চলে। প্রায় ৭০০টি শিবির হতে পারে শহরাঞ্চলে। শিবির নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর অব্যাহত। বিজেপির রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়াচ্ছে তৃণমূলের মন্ত্রী, নেতাদের। এ ভাবে ভাবমূর্তি রক্ষা করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির পাল্টা, ‘‘এক ছাদের তলায় বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মেলে। বিরোধীরা কোনও ভাল দেখতেপায় না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy