দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন নন্দীগ্রাম। নিজস্ব চিত্র।
মাঝ বর্ষায় বানভাসী হল নন্দীগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। টানা দু’দিনের লাগাতার বৃষ্টিপাতে ডুবে গিয়েছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। একাধিক গ্রামের রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে জলের ধারা। জনবসতিতে জমে গিয়েছে জল। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পরিস্থিতির খোঁজ নিতে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না কোনও ‘ভিআইপি’-কেই।
বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-শুভেন্দু অধিকারীর দ্বৈরথ ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছিল নন্দীগ্রাম। যুযুধান দুই শিবিরের আনাগোনায় নীলবাড়ির লড়াইয়ের কয়েকটা মাস সরগরম হয়ে উঠেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের এই বিধানসভা কেন্দ্রটি। ঘটনাচক্রে, পরজিত এবং জয়ী প্রার্থী এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা। কিন্তু বৃষ্টি-বিপর্যয়ের আবহে তাঁরা নন্দীগ্রামের খোঁজ রাখেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, নিষ্ক্রিয় দু’দলের নেতারাও।
নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি, তৃণমূল নেতা আবু তাহের শুক্রবার বলেন, “বৃষ্টির জমা জলে নন্দীগ্রামের অধিকাংশ এলাকায় চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। অনেক জায়গাতেই রাস্তাঘাটের ওপর দিয়ে জল বইছে। খাল-বিল জলে পূর্ণ। তবে বন্যা না হওয়ায় এখনও কিছুটা স্বস্তি।’’ তাঁর আশা, বৃষ্টি থামলেই নদীতে ভাটার সময় ধীরে ধীরে জল নামতে শুরু করবে। তবে বাড়িঘর ভেঙে পড়ার কোনও খবর নেই বলেই জানিয়েছেন তাহের।
বৃষ্টিতে চাষের ক্ষতি সম্পর্কে তাহের বলেন, “সদ্য আমন ধানের চারা রোয়ার কাজ শেষ হয়েছিল। টানা বৃষ্টিতে সব জলের তলায় চলে গিয়েছে। জল নামলে বোঝা যাবে ঠিক কতটা ক্ষতি হয়েছে এলাকায়। ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। শীঘ্রই ব্লক প্রশাসনের তরফে জেলায় রিপোর্ট পাঠানো হবে।’’
তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি সম্পর্কে কি কোনও খোঁজ নিয়েছেন? এই বিষয়ে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট আবু সুফিয়ানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা হলেও ফোন ধরেননি তিনি।
তবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের দিকে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন নন্দীগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি স্বদেশ দাস। তাঁর দাবি, “বৃষ্টি বিপর্যস্ত মানুষদের পাশে দেখা যায়নি এলাকার বিধায়ক বা সাংসদকে। রাজনীতি করার সময় সকলে হাজির হয়ে যান। অথচ বিপদের সময় জনপ্রতিনিধিদের দেখা পাচ্ছেন না মানুষ।’’ নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকাটি তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। এই কেন্দ্রের সাংসদ শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। দিব্যেন্দু এখনও তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেননি।
অন্যদিকে, নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর বিধায়ক অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত নয়ন সামন্ত বলেন, “দু’দিনের ভারী বৃষ্টিতে জল জমেছে। বিধায়ক নির্দেশ দিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই গোটা এলাকার পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে রিপোর্ট তৈরি করা হবে।’’ তৃণমূলের অভিযোগ খারিজ করে নয়নের দাবি, “নিয়ম করে পরিস্থিতির খবর নিচ্ছেন আমাদের বিধায়ক। নন্দীগ্রামের মানুষের সমস্যার খবর পেলেই তিনি দ্রুত ছুটে আসেন। তিনি সব সময় মানুষের পাশেই থাকেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy