কলেজে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকে!
পঠনপাঠন শুরু হয়ে গিয়েছে কয়েক মাস আগেই। স্নাতকোত্তরে তা-ও আসন ফাঁকা। সেই আসনে যাতে যোগ্য ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে পারেন, সে জন্য ফেসবুকে ‘বিজ্ঞাপন’ দিলেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান। মহিষাদল রাজ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এই ঘটনায় আলোড়ন জেলার শিক্ষা মহলে। কলেজ সূত্রের খবর, শুধু স্নাতকোত্তর নয়, স্নাতক স্তরেরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে ফাঁকা থেকে গিয়েছে আসন।
মহিষাদল রাজ কলেজের প্রাণিবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান শুভময় দাস। সম্প্রতি তিনি তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জুলজিতে বিভাগে এমএসসি-তে কেউ কি ভর্তি হতে চায়? সুযোগ পাচ্ছ না? রেগুলার মোড– বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে’। এর পরে নিজের দু’টি ফোন নম্বর দিয়েছেন শুভময়। বিষয়টি নিয়ে এর মধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কেউ কেউ অধ্যাপকের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানালেও অনেকেরই প্রশ্ন, এ ভাবে কোনও অধ্যাপক সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কি ‘প্রচার’ করতে পারেন? অনেকের আবার প্রশ্ন, এতে কি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ভাঙা হচ্ছে না! অনেকের আবার কটাক্ষ, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার যা দশা, তাতে উচ্চ শিক্ষাতেও ছাত্রছাত্রী বাড়ন্ত। এ ভাবে কি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভর্তির আবেদন করা যায়? জবাবে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, আসন ফাঁকা থাকলে কলেজ ভর্তি নিতে পারে। তবে কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে করতে হবে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে জানাতে হবে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর সাফ কথা, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় এভাবে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া যায় না।’’
শুভময় অবশ্য এতে অন্যায় দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘‘প্রাণিবিদ্যা বিভাগে স্নাতকোত্তরে ২০টি আসন। ১৮টি আসনে ছেলেমেয়েরা ভর্তি হয়েছেন। ফাঁকা দুটি আসনে যাতে যোগ্য ছেলেমেয়েরা ভর্তি হতে পারে, সে বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেরই মেধা তালিকায় প্রথম দিকে স্থান হয় না। পরে আবার অনেক কলেজে আসন ফাঁকা থাকে। যোগাযোগের অভাবে অনেকে জানতে পারেন না। তাই পোস্ট দেওয়া হয়েছে। তা দেখে অনেকেই যোগাযোগ করেছেন।’’
কলেজ সূত্রের খবর, স্নাতকোত্তর ছাড়াও স্নাতকেও ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, শিক্ষাবিদ্যা বিভাগে যথাক্রমে ১০টি, ১৫টি এবং ১০টি আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে। কলেজের অসীমকুমার বেরা বলেন, ‘‘স্নাতকোত্তরে কেবল মাত্র প্রাণিবিদ্যায় আসন ফাঁকা রয়েছে। ওই আসনে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের দুই পড়ুয়া আবেদন করেছেন। চলতি শিক্ষাবর্ষ না হওয়ায় ওই দুই পড়ুয়া অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন না। ওঁদের আবেদন আমরা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পাঠিয়েছি।’’ পাশাপাশি, অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘স্নাতকের বিভিন্ন বিষয়ে অবশ্য আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে। গত বছরের থেকে এ বারে সেই সংখ্যাটা অনেক বেশি। অর্থনীতিতে ৭০টি আসনের মধ্যে মাত্র তিন জন ভর্তি হয়েছেন।’’
ভর্তির প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি রুখতে সরকারের তরফে এ বছর থেকে অনলাইন পদ্ধতি চালু হয়েছে। কিন্তু এর পরেও এত সংখ্যায় আসন ফাঁকা থেকে যাচ্ছে কেন? সে নিয়ে অবশ্য সদুত্তর পাওয়া যায়নি অধ্যক্ষের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy