নিজের তৈরি আলোর কারিকুরি নিয়ে মেতে সপ্তর্ষি। ছবি: আরিফ ইকবাল খান
নামের অদ্ভূত সমাপতন। এক সপ্তর্ষি মণ্ডলে ভরে থাকে আকাশ। আর একজনের হাতের জাদুতে এবার আলোকিত মহিষাদল। যার হাতের জাদুতে এবার কাটছে মহিষাদলের দীপাবলি খুদে সেই শিল্পীর নামও সপ্তর্ষি, সপ্তর্ষি মণ্ডল।
মাত্র এগার বছর বয়সে তাক লাগিয়ে দিয়েছে মহিষাদল অ্যাপেক্স অ্যাকাডেমির চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সপ্তর্ষি। দীপাবলিকে আলোয় সাজাতে নিজেই তৈরি করেছে একাধিক এলইডি বাহারি আলোর বাতি, টুনি বালব, ব্লু টুথ নিয়ন্ত্রিত আলোকিত গাড়ি, রেলগাড়ি। খুদে পড়ুয়ার তৈরি সেই আলো অনেক বেশি নিরাপদও। কারণ আলোর যাবতীয় কারিকুরি সবই ব্যাটারি নির্ভর। বাড়িতেই রীতিমত মিনি ওয়ার্কশপ করে ফেলেছে সপ্তর্ষি। প্রিয় সামগ্রী ব্যাটারি। শতাধিক ব্যাটারি রয়েছে তার। সে সব নিয়ে চলে তার নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা। প্রথম দিকে ইউটিউব দেখে শিখলেও পরে নিজেই ছবি এঁকে সার্কিট, ডিজাইন তৈরি করতে শুরু করে। বাড়ির বড়দের কাছে তার বায়না কোনও খেলনা নয়। বরং ব্যাটারি, টুনি বালব, লাইট স্ট্রিপ। দীপাবলিতে সেই সব নিয়েই আলোয় সাজিয়েছে বাড়ি। অনেকেই নানা রঙের আলোর বিচিত্র কারিকুরি দেখে বিস্মিত। ফেসবুকের দৌলতে সপ্তর্ষির এই কাজ প্রশংসা পাচ্ছে নেটিজেনদের।
নিজের এমন কাজ নিয়ে কী বলছে সপ্তর্ষি!
তার কথায়, ‘‘করোনার জন্য বাড়িতে কড়াকড়ি। কোথাও যাওয়া হয়নি। তাই সময় কাটাতে বাড়িতেই বসে বসে এ সব বানিয়েছি। বৃষ্টিতে যাতে নষ্ট না হয় সে ব্যবস্থাও করেছি। এলইডি আলোয় নানা কাজ করা যায়। লাল, সবুজ ও নীল তিন ধরনের আলো মিশিয়ে নানা রঙ বের করি। এতেই আমার আনন্দ।’’
মা স্বর্ণালী পন্ডা মণ্ডল স্থানীয় একটি জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক। বাবা কুন্তল মণ্ডলের ব্যবসা রয়েছে। স্বর্ণালী বলেন, ‘‘লকডাউনের জন্য স্কুলে যাওয়া নেই। বাড়িতে ইউটিউব দেখে দেখে প্রথম প্রথম নানা ধরনের সার্কিট আঁকত ছেলে। পরে নিজেই তৈরি করতে শুরু করে। প্রিয় জিনিস হল এলইডি ব্যাটারি। ওর কাছে ৯০টার মতো ব্যাটারি রয়েছে। কী কী কিনতে হবে মাঝেমধ্যেইও লিখে দেয় । ওর বাবা দোকান থেকে কিনে আনে। পড়ার পাশাপাশি এ সব নিয়েই মেতে আছে ছেলে।’’
তবে সপ্তর্ষির তৈরি আলোর দাম খুব বেশি নয়। একশো থেকে দেড়শো টাকার মধ্যেই মেলে। হলদিয়ার একটি আইটিআই কলেজের ইলেকট্রিকাল বিভাগের প্রধান দেবপ্রসাদ মহাপাত্র জানান, ৯ ভোল্টের এলইডি ব্যাটারি নিয়ে আলোর এই কারিকুরি সত্যিই প্রশংসনীয়। এলইডি থেকে যে আলোর বিচ্ছুরণ হয় তাকে যথাযথ সার্কিট দিয়ে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে গণিত মেনেই কাজ করতে হয়। প্রাথমিকের এই ছাত্র সত্যি অন্য মেধার। একে লালন করা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy