বুধবার মাধ্যমিক পরীক্ষা চলার সময় খোলা রয়েছে জেরক্সের দোকান।
এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ অব্যাহত। তারমধ্যেই পরীক্ষা কেন্দ্র লাগোয়া দোকানগুলিতে প্রকাশ্যে ‘জেরক্স’-এর কারবার নিয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।
খাস কাঁথি শহরে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন এভাবে বেশ কয়েকটি দোকানে জেরক্স করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল গত মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুর দিন থেকেই। বুধবার সেই অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি দোকানে ঘুরতে চোখে পড়ল সেই ছবি। কাঁথি শহরের করকুলি এলাকায় রাখালচন্দ্র বিদ্যাপীঠে এ বার এলাকার একাধিক স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে। ওই পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে মেরেকেটে ২০০ মিটার দূরে জনৈকের বাড়ির নীচতলায় সাইবার কাফের ভিতরে জেরক্স করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় শহরের মধ্যস্থলে ক্যানাল পাড় এলাকাতেও একটি দোকানে পান ব্যবসার আড়ালে জেরক্স করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন স্থানীয়রা। চৌমাথা মোড়ে ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্বে সিভিক ভলান্টিয়ার কর্মী থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে প্রকাশ্যে ওই দোকানে জেরক্স চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। দোকান থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে কাঁথি জাতীয় বিদ্যালয় স্কুলেও এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন এমন অনিয়মের অভিযোগ আরও একাধিক দোকানে গিয়ে চোখে পড়ল।
প্রসঙ্গত, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন ইন্টারনেট এবং জেরক্স দোকান খোলা রাখা যাবে না বলে প্রতি বছর আগাম নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য সরকার। পরীক্ষা চলাকালীন জেরক্স কিংবা ইন্টারনেট পরিষেবা সচল রাখা হয়েছে এমন অভিযোগ হাতেনাতে প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ। এমনকী তথ্য পাচার করার চেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার আইনি বিধিও রয়েছে।
এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুরের সব মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন জেলাশাসক। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বছর কাঁথি মহকুমায় ৩১টি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। যার অধিকাংশ কাঁথি শহর এলাকায়। পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ১০০ মিটার দূরত্বে পরীক্ষা চলাকালীন ইন্টারনেট পরিষেবা এবং জেরক্স বন্ধ রাখার কথা ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল। নির্দেশ কতটা কার্যকর করা হচ্ছে তা দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের। এমনকী মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারিও করেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। কিন্তু সে সব বিধি অগ্রাহ্য করে কী ভাবে এই সব কর্মকাণ্ড চলছে তা নিয়ে চিন্তিত মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কর্তৃপক্ষ।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিযুক্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়ক জয়ন্ত কুমার দাস বলেন, ‘‘পরীক্ষা চলাকালীন কোথাও জেরক্স কিংবা ইন্টারনেট পরিষেবা সচল রয়েছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব পুলিশের। তবে কাঁথি শহর এলাকায় আদালত, মহকুমা শাসকের দফতর সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কাজে প্রচুর মানুষের আনাগোনা থাকে। তাই পুলিশ কর্তারা সেই বিধি কিছুটা শিথিল করেছেন বলে মনে হয়। তবে এমন সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।’’
এই বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার চেষ্ট করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি মোবাইল ফোন ধরেননি। তবে জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এই সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ এখনও পাইনি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy