কোলাঘাট ফুলবাজারে বিক্রি হচ্ছে পদ্ম। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর মুখে বন্যায় ভেসেছে জেলার ফুলের উপত্যকা পাঁশকুড়া। পচে নষ্ট হয়েছে মাঠভরা ফুল। ভারী বৃষ্টিতে অন্য জেলাগুলিতেও ফুলচাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে পুজোর ফুলের বাজারে। পুজোয় এক একটি পদ্মের দাম পৌঁছেছে ৩৫ টাকায়। আকাশছোঁয়া দাম অন্য ফুলেরও।
ফুল চাষের নিরিখে রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফুল চাষ হয় পাঁশকুড়ায়। পাঁশকুড়ার পাশাপাশি কোলাঘাট ব্লকেও ফুলচাষের হার ভাল। নিম্নচাপের জেরে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে জেলায় ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে প্রবল বর্ষণ। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। বৃষ্টির জেরে ফুলবাগানগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
১৮ সেপ্টেম্বর পাঁশকুড়া এলাকায় মোট চারটি জায়গায় কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা হয়। বন্যার জলে ডুবে যায় ঘোষপুর, হাউর, পাঁশকুড়া ১ সহ একাধিক এলাকার ফুলের বাগান। প্রবল বর্ষণে জলমগ্ন হয় কোলাঘাটের বৃন্দাবনচক, সিদ্ধা ১, খন্যাডিহি, সাগরবার, পুলশিটা-র মতো এলাকার সমস্ত ফুলের বাগান। পুজোর বাজার ধরার জন্য ফুলচাষিরা এ বার মূলত পদ্ম, গাঁদা, রজনীগন্ধা, দোপাটি ইত্যাদি ফুলের চাষ করেছিলেন। সেগুলি অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কংসাবতীর প্লাবনে নদী চরের গোলাপ বাগানও শেষ হয়ে গিয়েছে। পড়শি জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের ফুলচাষও মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
দুর্গাপুজো এবং লক্ষ্মীপুজোয় পদ্ম একটি অত্যাবশ্যক ফুল। বন্যা এবং ভারী বৃষ্টিতে পূর্ব মেদিনীপুর ও পাশাপাশি জেলার পদ্ম ব্যাপক হারে নষ্ট হয়েছে। প্রতি বছর এ রাজ্যে পুজোয় প্রায় ১ কোটি পদ্মফুল লাগে। এ বছর পরিস্থিতি সামলাতে ওড়িশার সম্বলপুর থেকে পদ্ম আমদানি করতে হচ্ছে। পঞ্চমীর দিন থেকেই ফুলবাজারগুলিতে পদ্ম কেনার হিড়িক পড়ে যায়। কোলাঘাট-সহ দুই মেদিনীপুরের সমস্ত ফুলবাজারে পদ্ম বিক্রি হচ্ছে এক-একটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে। দাম বাড়ায় সমস্যায় পড়েছেন পুজো-উদ্যোক্তারা। যাঁদের বাড়িতে পুজো তাঁদেরও মাথায় হাত দামের বহরে।
পাঁশকুড়ার মৌচাক সেবাশ্রম দুর্গা পুজোর সম্পাদক অদ্বৈত্য দোলই বলেন, ‘‘এ বছর পদ্মর পাশাপাশি সব ফুলের দাম বেশি। ফুল কম কেনা হয়েছে।’’ সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘বন্যা এবং অতি বর্ষণের কারণে দুই মেদিনীপুর, হাওড়া এবং দুই ২৪ পরগনায় ফুল চাষে ক্ষতি হয়েছে। পুজোয় জোগান স্বভাবিক রাখতে ভিন্ রাজ্য থেকেও আমদানি করতে হয়েছে। তাই এবার ফুলের দাম বেড়েছে। তবে জোগানে ঘাটতি নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy