মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে প্রশান্ত। নিজস্ব চিত্র
তবে কি মুখ্যমন্ত্রীর কান ভাঙিয়েছে কেউ! ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক সভায় শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রশান্ত রায়কে দলে থাকা-না থাকা নিয়ে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি প্রশ্ন করার পরে এমনই গুঞ্জন দলের অন্দরে। সমাজমাধ্যমেও ‘কান-ভাঙানি’দের বিরুদ্ধে সরবও হয়েছেন একাংশ তৃণমূল কর্মী।
বছর বাষট্টির প্রশান্ত পেশায় আইনজীবী। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে তিনি আছেন। চার বারের প্রাক্তন কাউন্সিলর, এখন ঝাড়গ্রামের পুর-প্রশাসনিক বোর্ডের সরকার মনোনীত সদস্য। বুধবার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশান্ত জানান, ঝাড়গ্রাম শহরের বস্তি এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দার খাস জমিতে বাস। অভাবী পরিবারগুলির রায়তি জমির স্বত্ব না থাকায় তাঁরা ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে বাড়ি পাচ্ছেন না। এরপরই মমতার প্রশ্ন, ‘‘আপনি কোর্টের অ্যাডভোকেট তো! আপনি আমাকে কথা দিতে পরেন, আপনি আমাদের সঙ্গে থেকে কাজ করবেন। কাল কেউ আপনাকে বললে আপনি চলে যাবেন না!’’ থতমত খেয়ে প্রশান্ত বলেন, ‘‘আমি তো আছি ম্যাডাম।’’ তখন মমতার প্রতিক্রিয়া, ‘‘মানুষের কথার দাম কিন্তু সবচেয়ে বেশি।’’ সমস্যা মেটাতে ভূমি দফতরের প্রধান সচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত বছর লোকসভায় ধাক্কার পরে শুভেন্দু অধিকারীকে ঝাড়গ্রাম জেলা পর্যবেক্ষকের দয়িত্ব দেন মমতা। তারপর শুভেন্দু শহরে নানা কর্মসূচি করেন। ওই সময় প্রশান্তের সঙ্গে শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠতার কথা শোনা যায়। তবে প্রশান্ত শুভেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত নন। সম্প্রতি শুভেন্দু অনুগামীদের দলহীন কোনও কর্মসূচিতেও তাঁকে দেখা যায়নি। বরং এক সময় মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে দলীয় সূত্রের খবর। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রশান্তের সঙ্গে বিরোধী রাজনীতির কোনও যোগসূত্রের প্রমাণ মেলেনি।
শহরের গরিব মানুষের দাবি নিয়ে সব সময় সরব প্রশান্ত। তাঁর রাশভারী আচরণ নিয়ে দলে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর ক্ষোভও আছে। তিনি সবাইকে নিয়ে চলতে পারেন না বলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে নালিশ হয়েছিল। প্রাক্তন জেলা তৃণমূল সভাপতি বিরবাহা সরেনের সঙ্গেও প্রশান্তের বনিবনা নেই বলে খবর। বিরবাহা এখন জেলা চেয়ারম্যান। তাঁর ঘনিষ্ঠ অজিত মাহাতো জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর। সূত্রের খবর, প্রশান্তকে শহর সভাপতির পদ থেকে সরাতে চেয়েছিলেন জেলা তৃণমূলের একাংশ। তবে বিধানসভা ভোটের আগে প্রশান্তকে পদ থেকে সরানো হয়নি। ফের তাঁকে শহর সভাপতি পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। তবে তাঁর সঙ্গে ছোটন মান্না ও প্রাক্তন পুর-কাউন্সিলর গোবিন্দ সোমানিকে দুই সহ-সভাপতি হিসেবে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, ভরা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলায় নাম না করে বিরবাহা ও অজিতকেই নিশানা করেছেন প্রশান্তের অনুগামীরা। শহর তৃণমূলের কর্মী অনিল দাস, সমরেশ বেরা বলছেন, ‘‘দলের একাংশ প্রশান্তদার সম্পর্কে দলনেত্রীর কান ভারী করেছেন।’’ প্রশান্তও বলছেন, ‘‘কেউ হয়তো মুখ্যমন্ত্রীকে আমার সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়েছেন।’’ বিরবাহার যদিও দাবি, ‘‘কারও বিরুদ্ধে বলা আমার স্বভাব নয়।’’ অজিত মাহাতো অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy