রক্তদান শিবিরে সুশান্ত ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
শাসকের ডিম-ভাত এ বার বিরোধীর হাতিয়ার।
এতদিন তৃণমূলের কর্মসূচিতে হাজির কর্মী-সমর্থকদের ডিম-ভাতের আয়োজন করা হত। তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে কটাক্ষ করতে ছাড়তেন না বাম মনোভাবাপন্ন নেটিজ়েনরা। এ বার সিপিএমের কর্মসূচিতেই হাজির সেই ডিম-ভাত। ১২ বছর পর গোয়ালতোড়ের গোহালডাঙা অঞ্চলে আয়োজিত দলীয় এক কর্মসূচিতে গ্রামের মানুষকে ডিম -ভাত খাওয়াল সিপিএম। কর্মসূচি শেষে সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক বললেন, ‘‘এলাকার মানুষের ভাল সাড়া পেয়েছি। মানুষের সাহায্য নিয়ে ওই এলাকায় আরও কর্মসূচি করব।’’
গোয়ালতোড়ের গোহালডাঙা অঞ্চলের লোগিনোহারি গ্রাম। মঙ্গলবার এই গ্রামের হাটতলা কার্যত মুড়ে ফেলা হয়েছিল লাল পতাকায়। উপলক্ষ ছিল সিপিএমের গোয়ালতোড় এরিয়া কমিটির উদ্যোগে রক্তদান শিবির। এই এলাকায় নানা কারণে মৃত দলের ১১ জন 'কমরেডে’র স্মরণে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিল সিপিএম। সেইসব প্রয়াত কর্মীদের নাম লেখা ফ্লেক্স দেওয়া মঞ্চ করে একটি সভারও আয়োজন করা হয়। সিপিএমের স্থানীয় নেতা - কর্মীরা বললেন, ‘‘২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের পর এই অঞ্চলে এই প্রথম দলের ব্যানারে কোনও কর্মসূচি হল। পার্টি অফিস খোলা হয়েছিল কিছুদিন আগে।’’
বাম আমলে যে কায়দায় দলীয় কর্মসূচি হত, সে রকম ভাবেই এই কর্মসূচি সফল করতে পথে নামেন সিপিএমের কর্মীরা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে কৌটো নিয়ে অর্থ সংগ্রহ, পতাকা বাঁধা সবই করতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। দলের এরিয়া কমিটির সম্পাদক তপন পাল বলছিলেন, ‘‘ অঞ্চলের ১২ টি বুথেই প্রচার প্রস্তুতিতে যাওয়া হয়, বাড়ি বাড়িও যাই। এমনকি যে যেমন দিতে পারেন, সে রকম ভাবেই অর্থ সংগ্রহ করা হয়। এলাকার মানুষের ভাল সাড়া পেয়েছি।’’ জঙ্গলে ঘেরা এই অঞ্চলে ১২ বছর পর দলের কর্মসূচিতে ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণপ্রসাদ দুলে, সৌগত পণ্ডা, প্রসেনজিৎ মুদি সহ অনেকেই। সভায় সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন তৃণমূল - বিজেপি নামক লুঠেরাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে। মানুষকে সঙ্গে নিয়েই ঘুরে দাঁড়াবে সিপিএম।"
সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার লোগিনোহারির হাটতলায় আয়োজিত শিবিরে রক্তদাতা ৮২ জনকে তো বটেই, দুপুরে গ্রামের আরও প্রায় ৫০০-৫৫০ জন মানুষকে পাতপেড়ে খাওয়ানো হয়। তবে বাম আমলের মতো মাংস - ভাত বা খাওয়াদাওয়ার এলাহি আয়োজন ছিল না। সাদা ভাতের সঙ্গে ছিল ডিমের ঝোল আর আনাজের তরকারি। স্থানীয়েরাও অনেকেই এসে খেয়ে যান। তাঁদের হাসিমুখেই খাবার পরিবেশন করেন সিপিএম কর্মীরা। এই ডিম ভাত রান্নার আয়োজনে খরচ কে দিল? এক সিপিএম নেতা বললেন, "কেউ আলু - আনাজ দিয়েছেন, কেউ জ্বালানি, ডিমও দিয়েছেন এলাকার মানুষ। কিছুই কিনতে হয়নি।’’
পার্টির কাজে মানুষের এই এগিয়ে আসাতে নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখছে সিপিএম। যা শুনে গোয়ালতোড়ের তৃণমূল নেতা জেলাপরিষদের কর্মাধ্যক্ষ চন্দন সাহার কটাক্ষ, ‘‘নখ- দাঁত বার করে সিপিএম সেই পুরনো কায়দায় গ্রামের মানুষকে ডিম-ভাত খাইয়ে ভুল বোঝাতে নেমেছে। মানুষই তাঁদের উচিত শিক্ষা দিয়েছে, আরও দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy