Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Egra

এক টাকায় বিক্রি লক্ষ্মীপালি, হতাশ খড়িয়াল শিল্পীরা

ধান কৃষকের ঘরে উঠলে নবান্ন উৎসবের আয়োজন হবে। এ ছাড়াও অগ্রহায়ণ থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত গোলায় ধান তোলা চলে। এই মাসগুলোয় বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুজো হয় ঘরে ঘরে।

লক্ষ্মীপালি বানানো হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

লক্ষ্মীপালি বানানো হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

গোপাল পাত্র
এগরা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৪৮
Share: Save:

খড়ি ঘাসের তৈরি লক্ষ্মীপালি। বুনতে বেশ সময় লাগে। কিন্তু বিক্রি হয় মাত্র এক টাকায়। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে যা বিশ্বাস করাই শক্ত। উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় নবান্ন উৎসবের আগে খুশি নেই খড়িয়াল পাড়া। অথচ লক্ষ্মীপালির চাহিদা আছে। এগরার কুদি ছত্রী, আলংগিরি, পটাশপুরের পালপাড়া, খড়িগেড়িয়া, গোকুলপুর, অমরপুর, শুকেশ্বর-সহ একাধিক গ্রামের খড়িয়াল শিল্পীরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন।

মাঠে সোনালি ধান। ধান কৃষকের ঘরে উঠলে নবান্ন উৎসবের আয়োজন হবে। এ ছাড়াও অগ্রহায়ণ থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত গোলায় ধান তোলা চলে। এই মাসগুলোয় বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুজো হয় ঘরে ঘরে। অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার বাজার থেকে মাটির লক্ষ্মী ও গণেশ ঠাকুর-সহ লক্ষ্মীপালি কেনে কৃষক পরিবারগুলো। লক্ষ্মীপালিতে নতুন ধান দিয়ে লক্ষ্মীকে উৎসর্গ করা হয়। লক্ষ্মীপালি আসলে খড়ি ঘাসের তৈরি একধরনের ঝুড়ি।

খড়িয়াল শিল্পীদের সমস্যা আসলে দ্বিমুখী। শুধু দাম নয়, খড়িঘাসেরও অভাব এখন। আগে কেলেঘাই নদীর তীরে এবং খাল বিলে খড়িঘাস প্রচুর জন্মাত। খড়িয়াল সম্প্রদায়ের লোকেরা খড়িঘাস কেটে, শুকনো করে বিভিন্ন ধরনের ঝুড়ি, লক্ষ্মীপালি-সহ অন্য গৃহস্থালির সরঞ্জাম তৈরি করেন। কিন্তু আধুনিক কৃষিপদ্ধতি ও জলাভূমি দূষণের ফলে খড়িঘাস তেমন জন্মায় না। অল্প কিছু জলাভূমিতে এখন খড়িঘাস পাওয়া যায়।

খড়িঘাসের অভাবে বাজারে লক্ষ্মীপালি খুব বেশি দেখা যায় না। অনেকে কৃষক প্লাস্টিকের ঝুড়ি দিয়ে পুজোর আয়োজন করেন। আবার চাহিদা থাকলেও সেই তুলনায় লক্ষ্মীপালির দাম বাড়েনি। এখনও খুচরো বাজারে এক টাকা মূল্যে লক্ষ্মীপালি বিক্রি হয়। লাভ না থাকায় নতুন প্রজন্ম এই কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। শুধুমাত্র বৃদ্ধ ও মহিলারা হাতখরচের জন্য এই পেশায় টিকে রয়েছেন। একজন সারাদিনে ৩০-৩৫ লক্ষ্মীপালি তৈরি করতে পারেন। মজুরি পড়ে ২০-২৫ টাকা।

লোকসানের কারণে এই পেশা অবলুপ্ত হয়ে যাবে বলে মত পটাশপুরের খড়িয়াল সম্প্রদায়ের পাতা নায়েক, মলয় হাজরা, অর্পিতা নায়কদের। মলয় বললেন, ‘‘খড়িঘাস আগের মতো পাওয়া যায় না। দূর থেকে খড়ি সংগ্রহ করে লক্ষ্মীপালি তৈরি করে এক টাকায় বিক্রি করে লোকসান হয়। শুধুমাত্র প্রথা ধরে রাখতে লক্ষ্মীপালি তৈরি করতে হচ্ছে। উপার্জন না হওয়ায় আগামী প্রজন্ম এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Egra artist financial crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy