Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
laxman seth

Laxman Seth: রাজনীতিতেই থাকতে চাই, প্রথম পছন্দ তৃণমূল, না হলে আপ, বললেন লক্ষ্মণ

লক্ষ্মণের শাসকদলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ জেলার তৃণমূল নেতারা। আপ বলল, পরে ভেবে দেখা হবে।

লক্ষ্মণ শেঠ

লক্ষ্মণ শেঠ

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২২ ২২:২৭
Share: Save:

ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন এক কালের দাপুটে সিপিএম নেতা লক্ষ্ণণ শেঠ। সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হয়ে প্রথমে বিজেপি তার পর কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তিন দলের সঙ্গেই তাঁর আর কোনও সম্পর্ক নেই এখন। মাঝে মাঝেই তিনি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দেন বটে। রাজনীতির মূলস্রোতে ফিরে আসতে চেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও বলেছেন কয়েক বার। বৃহস্পতিবার আবারও তৃণমূলে যোগদানের সেই ইচ্ছার কথা জানালেন লক্ষ্মণ। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের এক সময়ের ‘বেতাজ বাদশা’ জানিয়েছেন, মমতার তৃণমূলই তাঁর প্রথম পছন্দ। সেই সুযোগ না এলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি (আপ)-তে যেতেও তিনি রাজি আছেন।

শেষ বার ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে তমলুক থেকে লড়ে হেরেছিলেন লক্ষ্মণ। ওই হারের পর থেকে এত দিন পর্যন্ত বাংলার রাজনীতির ময়দানে নিষ্ক্রিয়ই ছিলেন তিনি। মাঝে বেশ কয়েক বার তাঁর তৃণমূলে যোগদান নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু তার বেশি আর কিছু ঘটেনি। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘আমার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড আছে। সারা জীবন রাজনীতি করেই কাটিয়েছি। সুযোগ পেলে আবার রাজনীতিতে ফিরব।’’ কিন্তু কোন দলে ফিরতে চান লক্ষ্মণ? প্রাক্তন সিপিএম সাংসদের কথায়, ‘‘তৃণমূলই আমার প্রথম পছন্দ। তবে সেখানে না হলে আপের হাত ধরতে রাজি আছি।’’

প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন লক্ষ্মণ। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূলে যোগ দিতে ভীষণ ভাবে আগ্রহী। একাধিক বার দিদির কাছে বার্তা পাঠিয়েছি।’’ পাশাপাশি লক্ষ্মণ জানিয়েছিলেন, দিদির তরফে কোনও ইতিবাচক জবাব পাননি তিনি। তবে, নেতিবাচক জবাবও যে মেলেনি, তা-ও স্পষ্ট করেছিলেন লক্ষ্ণণ। সেই সময় তৃণমূলের সর্বময় নেত্রীর কাজকর্মের ঢালাও প্রশংসা করে তিনি দাবি করেছিলেন, মমতার মধ্যে বামপন্থী ছোঁয়া আছে। তাঁর তৃণমূলে যোগদান যে নেত্রীর ইচ্ছাতেই সম্ভব, স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন লক্ষ্মণ।

এক সময় শ্রমিক আন্দোলনের হাত ধরেই হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে লক্ষ্মণের উত্থান ঘটে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর নজরে পড়েই তাঁর সিপিএমে অন্তর্ভুক্তি। হলদিয়ায় শিল্প কারখানা গড়তে জমি অধিগ্রহণ থেকে নির্মাণকার্যে একচ্ছত্র দাপট ছিল লক্ষ্মণের। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে শিল্প গড়ার ‘ভাবনা’ এবং ‘পদক্ষেপ’ ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছিল লক্ষ্মণের জীবনে। বাম শাসনের পতনেই প্রাক্তন সিপিএম নেতার রাজনৈতিক জীবন কার্যত শেষ হয়ে যায়।

জনসমক্ষে দলের ভাবমূর্তিকে হেয় করার অভিযোগে ২০১৪ সালে সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হন লক্ষ্মণ। পরে নিজের দল ‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’ গড়েছিলেন। এর পর ২০১৬ সালে লক্ষ্মণ যোগ দেন বিজেপিতে। ২০১৮ সালে গেরুয়া শিবির থেকেও বহিষ্কৃত হওয়ার পর ২০১৯-এ কংগ্রেসের টিকিটে লোকসভা নির্বাচনে লড়েন। কিন্তু জামানত বাঁচাতে পারেননি লক্ষ্মণ। এর পর দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে কংগ্রেসের সঙ্গেও তাঁর দূরত্ব বাড়তে থাকে। তার পর থেকেই শুরু হয় লক্ষ্মণের তৃণমূল-যোগের জল্পনা।

যদিও লক্ষ্মণের শাসকদলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ জেলার তৃণমূল নেতারা। জেলার এক নেতার কথায়, ‘‘লক্ষ্মণের দাবি অনুযায়ী, তিনি সরাসরি দলনেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। যদি তাই সত্যি হয়ে থাকে, তা হলে সে ক্ষেত্রে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিষয়টির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তা নিয়ে আগ বাড়িয়ে মন্তব্য করা অনুচিত।’’

আপ-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ইনচার্জ সৌরভ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘লক্ষ্মণ শেঠ আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি। ফলে উনি কতটা নিশ্চিত ভাবে বলছেন, তা জানি না। তাই এ নিয়ে কিছু বলার জায়গায় আমরা নেই। সাধারণত কারও দলে যোগদানের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়— করাপশন (দুর্নীতি), ক্রিমিনাল (ফৌজদারি অপরাধ) এবং কমিউনাল (সাম্প্রদায়িক)। যখন কেউ আমাদের দলে আসার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন, তখন এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হয়। নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে আবেদন করলে লক্ষ্মণ শেঠের ক্ষেত্রেও এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

laxman seth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy