কুরবান শাহ
পাঁশকুড়ার নিহত তৃণমূল নেতা কুরবান শা’র দাদা আফজলের গাড়ি আটকানোর অভিযোগ উঠল পাঁচজন অপরিচিত যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর নিরাপত্তার অভাব বোধ করে পুলিশ সুপারকে চিঠি দিলেন নিহতের দাদা। সেইসঙ্গে স্বামী খুন হওয়ার পর প্রায় দু’মাস কেটে গেলেও অভিযুক্ত বাকি আটজনকে পুলিশ এখনও ধরতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কুরবানের স্ত্রী।
গত অক্টোবরের ৭ তারিখ মাইশোরায় দলীয় কার্যালয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি তথা পাঁশকুড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কুরবান শা। কুরবান খুন হওয়ার পর মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে রাজনীতিতে পা রাখেন আফজল। মাইশোরায় দলের কোর কমিটির প্রধান করা হয় আফজলকে। প্রতিদিনই বিভিন্ন কাজে তাঁকে যেতে হয় মাইশোরার বাইরে। কুরবান খুন হওয়ার পর আফজলকে একজন সরকারি নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে।
আফজলের দাবি, গত ৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কলকাতা থেকে তিনি মাইশোরায় ফিরছিলেন। সেই সময় জনা পাঁচেক অপরিচিত যুবক কৃষ্ণগঞ্জ এলাকায় রাস্তার ওপর আড়াআড়ি ভাবে মোটর বাইক রেখে তাঁর গাড়ির পথ আটকায়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যদিন ভাইয়ের ব্যবহার করা গাড়িতে চড়লেও, ওই দিন ভাইয়ের দু’টি গাড়ির কোনওটিই নিয়ে যাননি আফজল। তিনি ছিলেন তাঁর এক পরিচিতর গাড়িতে। গাড়িতে ছিলেন আফজল, তাঁর দেহরক্ষী ও গাড়ির চালক। আফজলের অভিযোগ, অচেনা ওই যুবকেরা তিনি যে গাড়িতে ছিলেন তার সামনে এসে গাড়ির নম্বর প্লেট দেখে বলতে থাকে ‘এটা নয়’। এরপর আফজলের গাড়ির চালক রাস্তার ডানদিক ঘেঁসে গাড়ি নিয়ে দ্রুত ওই এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। ঘটনার পর নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার আশঙ্কা করে জেলা পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছেন আফজল। তিনি বলেন, ‘‘আমার ভাইয়ের ব্যবহার করা দুটি গাড়ির নম্বরই সবার চেনা। আমি ওই দিন অন্য গাড়িতে ফিরছিলাম। ভাইয়ের গাড়িতে থাকলে হয়তো ওরা আমার ওপর আক্রমণ করত। আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’
ঘটনায় আতঙ্কিত কুরবানের স্ত্রী তথা মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শাবানা বানু খাতুনও। তাঁর কথায়, ‘‘একজন শ্যুটারকে পুলিশ ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে নিল। অথচ এখনও বাকি শ্যুটারদের ধরতেই পারল না। আমাদের আশঙ্কা, ফেরার অভিযুক্তরা আমাদের উপরে হামলা করতে পারে। পুলিশ কেন বাকিদের ধরতে পারছে না? আমরা তো এই জন্যই সিআইডি তদন্ত চেয়েছিলাম।’’ এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন করা হলে ঘটনার তদন্তকারী অফিসার অজয় মিশ্র কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
যে পাঁচজন দুষ্কৃতী ঘটনার রাতে বাইকে চেপে এসে কুরবানকে খুন করেছিল তাদের মধ্যে মাত্র একজনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ। মূল শ্যুটার তসলিম আরিফ ওরফে রাজা গ্রেফতার করলেও বাকি চারজনের এখনও হদিস নেই। মাইশোরা এলাকার ফেরার দুই অভিযুক্ত শীতল মান্না ও গোলাম মেহাদি ওরফে কালুকেও ধরতে পারেনি পুলিশ। তাদের নামে হুলিয়া জারি হয়েছে।
এতজন অভিযুক্ত পুলিশের নাগালের বাইরে থাকায় নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত আফজল বলেন, ‘‘দলের কাজের সঙ্গে মামলার স্বার্থে আমাকে প্রায়ই বাইরে যেতে হয়। যেহেতু আমি মামলা চালাচ্ছি তাই ওদের ‘টার্গেট’-হয়ে গেছি। আমি চাই বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy