ধৃত তসলিম আরিফ (রাজা)
তমলুক আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানালেন কুরবান শা হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান।
আগামী ৪ নভেম্বর শুনানি। আনিসুরের আগাম জামিনের বিরোধিতা করতে ইতিমধ্যেই উঠেপড়ে লেগেছে পুলিশ। পাশাপাশি রয়েছে কুরবান শা হত্যাকাণ্ডে ধৃত আনিসুর ঘনিষ্ঠদের বয়ানও। কুরবান হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার শ্যুটার তসলিম আরিফ ওরফে রাজার টিআই প্যারেড হয় বুধবার তমলুক আদালতে। পুলিশের দাবি, ঘটনার চার প্রত্যক্ষদর্শীই এদিন আদালতে রাজাকে শনাক্ত করেছেন।
কুরবান হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে। পুলিশ সূত্রে খবর, কুরবান খুন হওয়ার ছ’দিন আগে আততায়ীরা মাইশোরা এলাকায় ঘাঁটি গাড়ে। তাদের আশ্রয় দিয়েছিল আনিসুর ঘনিষ্ঠ মাইশোরার দু’জন ব্যক্তি। সম্প্রতি মাইশোরা থেকে ওই দুই সন্দেহভাজন ফেরার হওয়ায় সেই তথ্য আরও জোরাল হয়েছে। তদন্তে জানা এসেছে, কুরবান খুনের পরিকল্পনা যার, তার কাছ থেকে মাত্র ৫ লক্ষ টাকায় সুপারি নিয়েছিল শ্যুটার তসলিম আরিফ ওরফে রাজা। রাজার বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থানার কুলদা গ্রামে। খড়্গপুড়ে রাজা একটি লোহার গ্রিল কারখানায় কাজ করত। কুরবানের নিজের এলাকা মাইশোরা থেকে ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ আগেই জানিয়েছিল, ধৃতরা কুরবান খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
কুরবান হত্যাকাণ্ডে মাইশোরা এলাকায় গ্রেফতার ও ফেরার ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ্যে আসার পর এলাকায় উত্তেজনা বেড়েছে। মঙ্গলবার ধৃত নবারুণ মিশ্রর বাবা নয়ন মিশ্র দাবি করেছিলেন, কুরবানের অনুগামীরা সিমলা হাটে তাঁর হার্ডওয়্যারের দোকানটি বন্ধ রাখার জন্য বলেছেন। এদিন সকাল থেকে দোকান খোলেননি নয়ন। তিনি বলেন, ‘‘কুরবানের অনুগামীরা বাজার কমিটির সম্পাদকের মারফত আমাকে বলেছে দোকান বন্ধ রাখতে। নিরাপত্তার আশঙ্কায় দোকান খুলিনি।’’ মাইশোরার রাজশহর গ্রামের ফেরার প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যের ফুলের আড়তও কুরবানের লোকজন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বলে অভিযোগ। ফেরার ওই নেতার দাদা বলেন, ‘‘ভয়ে আড়তে যেতে পারছি না। আপাতত আড়ত বন্ধ রয়েছে।’’
এ প্রসঙ্গে কুরবানের দাদা আফজল বলেন, ‘‘আমার ভাইয়ের খুনের ঘটনায় যাদের ধরা হয়েছে তাদের নামে আমরা কোনও অভিযোগ করিনি। পুলিশ তদন্তে নেমে মূল অভিযুক্তের সঙ্গে তাদের যোগ পেয়েছে। তাই এলাকার মানুষ উত্তেজিত। আমাদের লোকজন কাউকে দোকান বন্ধ রাখতে বলেনি। এটা সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।’’
কুরবান হত্যাকাণ্ডে আনিসুর রহমান সহ চার অভিযুক্ত এখনও ফেরার। আইনজীবী মারফত তমলুক আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছেন মূল অভিযুক্ত আনিসুর রহমান। আগামী ৪ নভেম্বর শুনানিতে আনিসুরের আগাম জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সরকারি আইনজীবী সফিকুল খান বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাজাকে আদালতে তোলা হবে। তাকে পুলিশ হেফাজতের নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হবে।’’
তমলুকের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম হাসান বলেন, ‘‘খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত যাদের ধরা হয়েছে তাদের জেরা করে অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই বাকিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy