ফুলবাজারের বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে অগস্টের ১৪ তারিখ ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করেছিলেন সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক। গত মাসে দিঘা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী কোলাঘাট ফুলবাজার অন্যত্র স্থানান্তর করা যায় কিনা পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী কোলাঘাট ফুলবাজার রেলের জায়গা থেকে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উপ-নগরী এলাকায় সরানোর প্রস্তাব দেয় জেলা উদ্যানপালন দফতর। বিষয়টি নিয়ে কোলাঘাট বিডিও অফিসে বৃহস্পতিবার বৈঠক ডেকেছিলেন জেলা উদ্যান পালন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর মানস রঞ্জন ভট্টাচার্য। যদিও প্রস্তাবিত এলাকায় ফুলবাজার সরানোয় অসম্মতি প্রকাশ করেছেন ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা। ফলে ফুলবাজার স্থানান্তর নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তই নেওয়া গেল না।
ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, স্থান নির্বাচন সঠিক না হওয়ায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কিসান মান্ডিগুলি কার্যত কোনও কাজেই আসেনি। এই পরিস্থিতিতে ফুলবাজার কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ উপনগরী এলাকায় নিয়ে গেলে রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে।
রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুলবাজার কোলাঘাট। প্রতিদিন দুই মেদিনীপুর ও হাওড়ার প্রায় ৪ হাজার ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী এখানে বেচা-কেনা করেন। কোলাঘাট রেল স্টেশনের নীচে রেলের প্রায় দেড়হাজার বর্গমিটার জায়গায় ৬০ বছর ধরে চলে আসছে ফুলবাজার। জায়গার ভাড়া হিসেবে রেল প্রতিদিন প্রত্যেক ফুলচাষির কাছ থেকে ১০ টাকা করে নেয়। অথচ ফুলবাজারের পরিকাঠামোর কোনও উন্নয়ন তারা করেনি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে রেলের কাছে বার বার আবেদনেও সুরাহা না হয়নি বলে অভিযোগ ফুলচাষিদের। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ফুলবাজার রেলের জায়গা থেকে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু তাতে নারাজ ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বিষয়ে আলোচনার জন্য উদ্যান পালন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর গত ৫ সেপ্টেম্বর কোলাঘাটের বিডিওকে চিঠি দেন। সেই অনুযায়ী এদিন কোলাঘাটের বিডিও অফিসে বৈঠক হয়। সেখানে ফুলচাষি, ফুলব্যবসায়ীরা ৬ ও ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগস্থলে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জায়গায় ফুলবাজার স্থানান্তরে আপত্তি জানান। তাঁদের যুক্তি, রেলস্টেশনের ধারে বর্তমান বাজারে ফুলচাষিরা খুব অল্প সময়ে ফুল কেনাবেচা করে কলকাতার মল্লিকঘাট ফুলবাজার সহ বিভিন্ন স্থানে রেল যোগাযোগের মাধ্যমে সহজেই পৌঁছে যেতে পারেন। কিন্তু নতুন জায়গাটি জাতীয় সড়কের ধারে হলেও কোলাঘাট ও মেচেদা স্টেশন থেকে অনেকটাই দূরে। ফলে পরিবহণ খরচ বেড়ে যাবে। অনেক সময়ও নষ্ট হবে। যার প্রভাবে ব্যবসায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘এর আগে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে দেউলিয়া ফুলবাজার আধ কিলোমিটার দূরে পানশিলায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আজও সেই কাজ এগোয়নি। অবস্থানগত সমস্যার জন্য পাঁশকুড়া ফুলবাজারের অবস্থাও খারাপ। তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা দরকার।’’
জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কোলাঘাট ফুলবাজার অন্যত্র সরানো নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত জানতে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। নতুন জায়গায় ফুলবাজার স্থানান্তর নিয়ে ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা তাঁদের মতামত দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি।’’”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy