খুদে ছাত্রদের হাতে কলমে বোঝাচ্ছেন বিডিও। নিজস্ব চিত্র
রাজনীতির লড়াই আর রক্তপাতের সূত্রেই খেজুরিকে চেনেন রাজ্যবাসী। সেই খেজুরিতেই এ বার এক অন্য ‘লড়াই’। সেই লড়াই প্লাস্টিক মুক্ত পরিবেশ গড়ার।
খেজুরি ২-এর বিডিও রমনসিংহ বিরদী এলাকা প্লাস্টিক মুক্ত করতে অভিনব এক পদক্ষেপ করেছেন। ব্লক প্রশাসনের তরফে এলাকাবাসীকে জানানো হয়েছে, প্লাস্টিকের বোতলের মধ্যে পলিথিন, প্লাস্টিক র্যাপার ইত্যাদি পুরে তা ব্লক অফিসে জমা দিতে হবে। ইনাম হিসেবে হাতে হাতে মিলবে টাকাও। দু’লিটারের বোতল ভর্তি প্লাস্টিক, পলিথিন জমা দিলে মিলবে ১০ টাকা, আর ছোট বোতলের জন্য পাঁচ টাকা। খুদেরাও যাতে এই উদ্যোগে শামিল হয়, সেই ভাবনাও রয়েছে। বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ইতিমধ্যে প্রচার করেছেন বিডিও। শিক্ষার্থী এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, ছাত্রছাত্রীর এই কাজে যে টাকা পাবে, তা ব্যবহার করা হবে মিড-ডে মিলের খাদ্যগুণ বৃদ্ধিতে।
মাস আটেক হল খেজুরিতে এসেছেন রমনসিংহ। তিনি জানালেন, প্লাস্টিক বন্ধে তিনি নিজে যথেষ্ট সতর্ক। ঘরের আশেপাশে কোথাও প্লাস্টিকের র্যাপার বা পলিথিন পড়ে থাকতে দেখলেই প্লাস্টিকের বোতলে ভরে রাখতেন। তাতেই খেয়াল করেন, একটি বোতলেই অনেক পলিথিন জমা করা যাচ্ছে। এই অভ্যাস তাই শুধু নিজের বাড়ি বা অফিসে সীমাবদ্ধ না রেখে গোটা ব্লকে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছেন বিডিও।
বিডিও’র উদ্যোগে ইতিমধ্যে সাড়াও মিলেছে। খেজুরির বেশ কিছু গ্রামের বাসিন্দা কয়েক বস্তা বোতল বন্দি প্লাস্টিক বিডিওর হাতে তুলে দিয়েছেন। তবে বিনিময়ে তাঁরা কোনও টাকা নেননি। খেজুরির বাসিন্দা সুদর্শন সেন বলছিলেন, “প্লাস্টিক মুক্ত পরিবেশ গড়তে বিডিওর ভাবনাকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি।’’ খেজুরির ব্যবসায়ী সমর মাইতি বলেন, “আমরা এমনিতেই অনেক প্লাস্টিক ফেলে দিতাম। এখন আর সেগুলি ফেলি না। বোতলে জমিয়ে রাখছি। বোতল ভরলে তা ব্লক প্রশাসনের কাছে গিয়ে দিয়ে দিই। এভাবে আমরা একটা মহৎ উদ্যোগের শরিক হতে চাই।’’
কিন্তু জমা পড়া প্লাস্টিক ভর্তি এত বোতল নিয়ে ব্লক প্রশাসন করবেটা কী?
ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, হলুদবাড়ি এলাকায় একটি ‘ন্যাচারাল স্টেডিয়াম’ তৈরি হচ্ছে। এই প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে স্টেডিয়ামের সিঁড়ি, বেঞ্চ তৈরি করা হবে। ব্লকের নিজ কসবা গ্রাম পঞ্চায়েতে তৈরি হবে ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্প। সেখানেই প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার কাজ হবে।
বিডিও বলছিলেন, “ইতিমধ্যে গোটা পরিকল্পনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বাসিন্দারা যে ভাবে এগিয়ে আসছেন, তাতে আমি অভিভূত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy