ধৃত: স্বপন শর ওরফে শেখ খাদেম।
অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী খুনের ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এল গুজরাত যোগ।
বুধবার ভোরে কেশপুর থেকে স্বপন শর ওরফে শেখ খাদেম এবং শেখ মিজারুলকে গ্রেফতার করে খড়্গপুর টাউন পুলিশ। আপাতত পুলিশের হেফাজতেই রয়েছে তারা।
গত ১৩ জানুয়ারি নিউ সেটলমেন্টের রেল কোয়াটার্স থেকে উদ্ধার হয়েছিল অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী জেবি সুব্রহ্মণ্যমের দেহ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই খুনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছে ৬জন। এ ছাড়াও ১ জন লুটের সামগ্রী নিজের কাছে রাখায় গ্রেফতার হয়েছে। সবমিলিয়ে খুনে জড়িতের সংখ্যা ৭জন। খুনের তিনদিনের মাথায় সুব্রহ্মণ্যমের পড়শি ওই রেল কলোনির বাসিন্দা সুধীর দাস, পাশের কলোনির টি শঙ্কর রাও ও লুটের সামগ্রী রাখা মালঞ্চের মোহন রাওকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের জেরা ও ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মানিব্যাগ থেকে অসমের যুবক অশোক বিশ্বাসের নাম পায় পুলিশ। দিন কয়েক আগেই অসম থেকে অশোক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে পুলিশ। এ ছাড়াও মেদিনীপুরের দু’জন এই খুনে যুক্ত ছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। তাদের মোবাইল টাওয়ার লোকেশন কেশপুর দেখায়। তার পরেই মঙ্গলবার তদন্তকারী অফিসার স্বরাজ রায়চৌধুরী, সাব ইন্সপেক্টর বাদল ঘোষের নেতৃত্ব পুলিশের দল রাতভর তল্লাশি চালায় কেশপুরে। সেই তল্লাশিতেই বুধবার ভোরে গ্রেফতার করা হয় স্বপন শর ও শেখ মিজারুলকে। স্বপন কাঁথির খেজুরির বাসিন্দা। তবে ধর্ম পরিবর্তনের পরে থাকত কেশপুরের সরিষাখোলায়। আরেক ধৃত মিজারুলের বাড়ি কেশপুরের আখরাপোতায়।
কী ভাবে খুনের ঘটনায় গুজরাত যোগ উঠে এল?
পুলিশের দাবি, একসময়ে অসমের যুবক অশোক গুজরাতে জরির কাজ করত। সেই সময়েই গুজরাতে হোটেলে কর্মরত কাঁথির স্বপনের সঙ্গে তার আলাপ। সেখান থেকেই বড় একটি দল তৈরি করে চুরি-ডাকাতির মতো নানা দুষ্কর্মে জড়িয়ে পড়েছিল তারা। সেই দলেই ছিল সুব্রহ্মণ্যমের পড়শি সুধীরের এক পরিচিত। সেই সূত্রেই অশোকের সঙ্গে সুধীরের আলাপ। এর পরে সুব্রহ্মণ্যমের বাড়িতে ডাকাতির পরিকল্পনা। তাতেই ডাক পড়েছিল অশোকের পুরনো সঙ্গীদের। এমনকি, এই পরিকল্পনায় সফল হলে ওই রেল কলোনিতে একা থাকা বৃদ্ধ দম্পতি, বালাজি মন্দির-সহ বেশ কয়েকটি ডাকাতির ছক ছিল নবগঠিত এই দলের। এমনটাই জেরায় জানা গিয়েছে বলে টাউন পুলিশের দাবি। যদিও ডাকাতি করতে গিয়ে সুব্রহ্মণ্যমকে খুনে সেই ছক বানচাল হয়ে গেল বলে মনে করছে পুলিশ। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “এটা আমাদের বড় সাফল্য। কারণ, এই দলটির সঙ্গে গুজরাতে সঙ্ঘবদ্ধ হওয়া একটি দলের যোগ রয়েছে। এর পরে শহরে আরও দুষ্কর্মের পরিকল্পনা ছিল ওদের। তার আগেই আমরা সকলকে প্রায় গ্রেফতার করেছি।”
প্রাথমিক পর্যায়ে ধৃতরা প্রত্যেকেই পুলিশি জেরায় খুনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ কবুল করেনি। সকলেই দাবি করেছে অধরা থাকা অভিযুক্তরা ওই খুনে সরাসরি যুক্ত। যদিও পুলিশের দাবি, সকলেই খুনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছে। তাই পলাতকদের খোঁজে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশির পরে ধৃতের সংখ্যা বেড়েছে। এর জেরে ক্রমেই এই খুনের মামলা নয়া মোড় নিচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy