Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

বেহাত হওয়া জমি ফেরাতে ঝাঁপাচ্ছে জেলা পরিষদ

তৎপরতা এতটাই যে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদ জেলা ভূমি সংস্কার দফতরকে চিঠি দিয়েছে। জেলা পরিষদ এবং প্রশাসন সূত্রে খবর, কাঁথি, পাঁশকুড়া, তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী, সুতাহাটা, এগরা-সহ বিভিন্ন ব্লকে জেলা পরিষদের মালিকানায় বহু জমি রয়েছে। ওই সব জমির বেশিরভাগ (প্রায় ৮০ শতাংশ) অংশে রাস্তা রয়েছে।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

সরকারি জমি দখল করে নির্মাণের অভিযোগ ওঠে হামেশাই। এমন কী সরকারি জমি ব্যক্তিগত হিসাবে নথিবদ্ধ করে নেওয়ার অভিযোগও কম নয়। বেদখল হয়ে যাওয়া সরকারি সেই সব জমি উদ্ধারে এ বার প্রশাসনিক ভাবে তৎপর হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ।

তৎপরতা এতটাই যে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদ জেলা ভূমি সংস্কার দফতরকে চিঠি দিয়েছে। জেলা পরিষদ এবং প্রশাসন সূত্রে খবর, কাঁথি, পাঁশকুড়া, তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী, সুতাহাটা, এগরা-সহ বিভিন্ন ব্লকে জেলা পরিষদের মালিকানায় বহু জমি রয়েছে। ওই সব জমির বেশিরভাগ (প্রায় ৮০ শতাংশ) অংশে রাস্তা রয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কিছু সাধারণ জমি ও নয়ানজুলি রয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় থাকা ওইসব নয়ানজুলি ও জমি স্বল্প মেয়াদে (২ বছর) লিজ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। ২০০২ সালে অবিভিক্ত মেদিনীপুর ভেঙে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা গঠন হয়। আর তার পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অংশের জমি লিজ দেওয়ার বন্দোবস্ত করে আসছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। সম্প্রতি জেলা পরিষদের ভূমি দফতর বিভিন্ন এলাকায় থাকা জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমি নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারে বিভিন্ন ব্লকে থাকা ওই সব জমির বেশকিছু দখল হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ কিছু জমি নিজেদের নামে নথিভুক্তও করে নিয়েছেন। এ বিষয়ে রিপোর্ট এলে নড়েচড়ে বসেছে জেলাপরিষদ।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি শহরে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন একটি জমি দখল করে থাকা এক ব্যক্তি নথিপত্র দেখিয়ে নিজের বলে দাবি করেছিলেন। জেলা পরিষদের তরফে ওই জমির মালিকানা দাবি করে মামলা দায়ের করা হয়। শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে ওই জমি পুনরুদ্ধার করেছে জেলা পরিষদ। পাঁশকুড়া-১ ব্লকের পুরুষোত্তমপুর, প্রতাপপুর, বাহারগ্রাম ও তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী, এগরা, সুতাহাটা ব্লকেও জেলাপরিষদের জমি বেহাত হয়েছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি জেলা পরিষদের বন ও ভূমি সংস্কার স্থায়ী সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জেলা পরিষদের যে সমস্ত জমি বেআইনি ভাবে অন্য নামে নথিভুক্ত হয়ে রয়েছে সেই সমস্ত জমির রেকর্ড সংশোধন করে জেলা পরিষদের নামে নথিভুক্ত করতে জেলা ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরকে চিঠি দেওয়া হবে। তমলুক শহরে নিমতৌড়ির কাছে সিপিএম জেলা কার্যালয়ের সামনে সড়ক সংলগ্ন সরকারি জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ সরকারি ওই জমি ঘিরে দলীয় কার্যলয়ের সামনের দিকের সীমানা প্রাচীর দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার না করলেও সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির দাবি, ‘‘দলীয় কার্যালয়ের সামনে সড়কের ধারে কিছু সরকারি জমি রয়েছে। তবে সড়ক সম্প্রসারণের জন্য সরকার ওই জমি ব্যবহার করলে আমাদের আপত্তি থাকবে না।’’

জেলা পরিষদের বন ও ভূমি সংস্কার কর্মাধ্যক্ষ মৃণালকান্তি দাস বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের কিছু জমি বেআইনি ভাবে অন্য ব্যক্তির নামে নথিভুক্ত করে নেওয়ার বিষয়টি নজরে এসেছে। এ নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করে জমিগুলিকে চিহ্নিত করে তা পুনরায় জেলা পরিষদের নামে নথিভুক্ত করার জন্য ভূমি সংস্কার দফতরে জানানো হয়েছে।’’ জেলা সভাধিপতি দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন এলাকায় জেলা পরিষদের জমি বেদখল হওয়ার বিষয়টি নজরে এসেছে। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘বেদখল হয়ে থাকা জেলা পরিষদের জমি পুনরুদ্ধারে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jila Parishad Illegally Occupied Land
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy