ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটিতেই ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের পঠনপাঠন চালু হওয়ার কথা। নিজস্ব চিত্র।
চলতি ২০২২-’২৩ শিক্ষাবর্ষে ঝাড়গ্রাম গভর্মেন্ট মেডিক্যাল কলেজে পঠনপাঠন শুরু হওয়ার কথা। একশো পড়ুয়াকে ভর্তি নিয়ে চালু হবে মেডিক্যাল কলেজ। কিন্তু পরিকাঠামোগত বিভিন্ন ঘাটতির কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে ‘ডিসঅ্যাপ্রুভাল লেটার’ পাঠাল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (এনএমসি) ‘মেডিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড রেটিং বোর্ড’ (এমএআরবি)। ফলে চলতি শিক্ষাবর্ষে মেডিক্যাল কলেজে পঠনপাঠন শুরুর আগেই দেখা দিয়েছে জট। যদিও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এমএআরবি যে সব শর্তের কথা জানিয়েছে, সেগুলি পূরণ করে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। অনুমোদন মেলার ব্যাপারে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ আশাবাদী।
ঝাড়গ্রাম শহরের বিদ্যাসাগর পল্লিতে মেডিক্যাল কলেজ ভবন তৈরির কাজ গত বছর অগস্টে শুরু হয়েছে। ফলে, জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালটিকেই এখন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে। সেখানেই অস্থায়ী ভাবে মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়েছে। সাবেক জেলা হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের একটি ঘরে বসছেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুদেষ্ণা মজুমদার ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তথা ভাইস প্রিন্সিপাল গৌতমেশ্বর মজুমদার। ইতিপূর্বে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের প্রতিনিধি দল গত ফেব্রুয়ারি মাসে মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য পরিদর্শনে এসেছিল। সেই পরিদর্শনের ভিত্তিতে এমএআরবি-র তরফে গত ২৪ মার্চ ‘ডিসঅ্যাপ্রুভাল লেটার’ পাঠিয়ে পরিকাঠামোগত বেশ কিছু ঘাটতির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
এমএআরবি-র পর্যবেক্ষণ, একশো আসন বিশিষ্ট পড়ুয়ার মেডিক্যাল কলেজে এখনও ৯৫ শতাংশ শিক্ষকের পদ শূন্য। মেডিক্যাল কলেজ ভবন তৈরির কাজ চলায় পঠনপাঠনের উপযোগী লেকচার থিয়েটর, পরিদর্শন কক্ষ, বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষাগার গুলি নেই। বিশেষত, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে জরুরি অ্যানাটমি, ফিজিয়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রির পরীক্ষাগারের ব্যবস্থাও নেই। ওই সব বিভাগে পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষক ও কর্মী এখনও নিয়োগ হয়নি। এমএআরবি-র মতে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল ও আবাসনের ক্ষেত্রে একশো শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। সাবেক সুপার স্পেশালিটি ভবনের তিন তলা ও চারতলায় কলেজের গ্রন্থাগার ও পরীক্ষাগার গুলি তৈরির কাজ হয়নি। এখনও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও গ্রন্থাগারের বই নেই। জরুরি বিভাগের ১২টি শয্যার প্রয়োজনীয় আনুসঙ্গিক সরঞ্জাম নেই। হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের লাইসেন্স নেই। সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোল এই লাইসেন্স দেয়। সবশেষে এমএআরবি বলেছে, ২০২২-’২৩ শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়া ভর্তি নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ চালু করতে হলে ওই সব ঘাটতি পূরণ করে অবিলম্বে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনকে জানাতে হবে। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুদেষ্ণা মজুমদার বলছেন, ‘‘এমএআরবি কিছু শর্তের কথা জানিয়েছে। আমরা সেগুলি পূরণ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছি।
২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তারকেশ্বরের একটি প্রশাসনিকসভা থেকে ঝাড়গ্রাম গর্ভমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়গ্রাম শহরের বিদ্যাসাগর পল্লিতে সরকারি জমিতে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে জমি জট দেখা দেয়। জায়গাটি বনভূমি দাবি করে পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। যদিও জাতীয় পরিবেশ আদালত প্রশাসনির রিপোর্ট খতিয়ে দেখে মামলাটি খারিজ করে দেয়। বিদ্যাসাগর পল্লিতে ২২ একর জমিতে তৈরি হচ্ছে মেডিক্যাল কলেজ। বরাতপ্রাপ্ত সংস্থাটি গত বছর অগস্টে কাজ শুরু করতেই ফের জমির একাংশে তাদের শ্মশান রয়েছে দাবি করে অভিযোগ তোলেন স্থানীয় আদিবাসীদের একাংশ। বিতর্কিত জমিটি বাদ রেখে চলছে মেডিক্যাল কলেজ ভবন তৈরির কাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy