ভিড়ে ভিড়াক্কার দিঘা। —নিজস্ব চিত্র।
তোলা হয়েছে নিজস্বী। তা সে সমুদ্রপাড়ে বসে হোক বা সাগরজলে পা ডুবিয়ে! কিন্তু সেই ছবি কোনও ভাবেই নেটমাধ্যমে পোস্ট করা যাচ্ছে না। শুধু ছবি কেন, অনেকে ভিডিয়ো-ও তুলেছেন। কিন্তু তার অবস্থাও তথৈবচ। আর লাইভ! সে তো দূরঅস্ত্! দিঘায় এতটাই খারাপ ইন্টারনেটের অবস্থা। ভিড়ে ভিড়াক্কার দিঘা-সহ মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্কারপুরে তাই ছন্দ হারাচ্ছে পর্যটকের ছুটির মজা।
অতিমারিতে দীর্ঘ ‘গৃহবন্দি দশা’ কাটিয়ে পুজোর ছুটির আমেজ উপভোগ করতে অনেকেই হাজির হয়েছেন দিঘায়। তবে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ের চাপে দিঘা জুড়েই শুরু হয়েছে ইন্টারনেটের জন্য হাহাকার। ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা পর্যন্ত প্রায় সমস্ত হোটেলই পর্যটকে ভরা। সকাল-বিকেল তাঁরা ভিড় করছেন সমুদ্রের পাড়ে। তবে সেখানে বসে নিজস্বী বা ভিডিয়ো তুলে ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করার জেরে প্রায় সমস্ত সংস্থার ইন্টারনেট পরিষেবাই ডাহা ফেল করেছে বলে পর্যটকদের দাবি।
দিঘা হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুজোর আগে থেকেই পর্যটকদের থিকথিকে ভিড়ে ফের চেনা ছন্দে দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুর। তাঁর কথায়, ‘‘পুজোর কয়েক দিন আগে থেকেই অধিকাংশ হোটেলে পর্যটকেরা আসতে শুরু করেছেন। অনেকেই আগাম বুকিং সেরে এখানে এসেছেন। অনেকে আবার টিকার শংসাপত্র বা কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট হাতে নিয়ে দিঘায় সটান হাজির হয়ে হোটেল ভাড়া নিচ্ছেন।’’ তিনি আও বলেন, ‘‘ইয়াসের ক্ষত সারিয়ে সদ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে দিঘা। লোকসানের ধাক্কা সামলে পুজোর ক’দিন ব্যবসাও বেশ ভাল। লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত ভিড় হবে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু ভিড়ের চাপেই হয়তো দিঘার নেট পরিষেবা ধাক্কা খাচ্ছে।’’
তবে পর্যটকদের ভিড়ই যে তাঁদের পুজোর আনন্দ মাটি করে দেবে, তা ভাবেননি অনেকেই। দিঘায় সপরিবার এসেছেন বেহালার বাসিন্দা তপন বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘নবমী পর্যন্ত কলকাতায় ঠাকুর দেখেছি। দশমীতে পরিবার নিয়ে দিঘায় এসে উঠেছি। রবিবারটা এখানে কাটিয়ে সোমবার সকালে বাড়ি ফিরব। তবে দিঘায় এসে ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে ভিডিয়ো বা ছবি পোস্ট না করলে বেড়ানোর আনন্দটাই মাটি। অথচ এখানে এসে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পাওয়াই মুশকিল!’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, অতিবৃষ্টির জেরে কেলেঘাইয়ের বাঁধ ভেঙে পটাশপুর, এগরা, ভগবানপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার জেরে এই এলাকাগুলিতে থাকা প্রায় ৪৮টি টাওয়ারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। জেনারেটর চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও মাঝেমধ্যেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি দিঘা, মন্দারমণিতেও বিদ্যুৎ সংযোগের সমস্যার জন্য জেনারেটর চালিয়ে টাওয়ার চালু রাখা হচ্ছে। যদিও জেলার মোবাইল টাওয়ারকর্মী ইউনিয়নের নেতা তথা পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক উত্তমকুমার বারিকের দাবি, ‘‘এমন সমস্যার কথা জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy