শীতে শুরু হওয়া ‘ইভেন্ট ট্যুরিজ়ম’ ঝাড়গ্রামে চলবে দোলযাত্রা পর্যন্ত। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
অস্টিন শহরটা আমেরিকার টেক্সাস প্রদেশে। এখানে প্রতি বছর মার্চে ‘সাউথ বাই সাউথওয়েস্ট’ নামে একটি উৎসব হয়। সিনেমা, সঙ্গীতের উৎসব। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে বহু রসিক যান অস্টিনে। উৎসবের আমেজ উপভোগ করতে। এই ধরনের আয়োজন কেন্দ্রিক সফর বা ‘ইভেন্ট ট্যুরিজ়ম’ বিশ্ব জুড়ে জনপ্রিয় হচ্ছে। জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামেও জনপ্রিয় হচ্ছে ‘ইভেন্ট ট্যুরিজ়ম’। নাট্যোৎসব, খাদ্যমেলা, শিল্পকলা প্রদর্শনীর মতো স্থানীয় উৎসব-অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কলকাতার পর্যটন সংস্থাগুলি পর্যটকদের ঝাড়গ্রামে আনছেন।
শীতে শুরু হওয়া ‘ইভেন্ট ট্যুরিজ়ম’ ঝাড়গ্রামে চলবে দোলযাত্রা পর্যন্ত। এই ধরনের সফরকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সব দেশেই। কারণ স্থানীয় আর্থ-সামাজিক বিকাশে গুরুত্ব রয়েছে ‘ইভেন্ট ট্যুরিজ়ম’-এর। কাজের সুযোগ তৈরি করে, আবার স্থানীয় কলা-সংস্কৃতি-খাদ্য ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পায়। নতুন ধরনের সফরে উপকৃত হচ্ছে ঝাড়গ্রামের নানা হোম স্টে-ও। কারণ পর্যটন সংস্থাগুলি আগাম ঘর বুকিং করে আগ্রহী পর্যটকদের নিয়ে আসছে ঝাড়গ্রামে।
আমলাশোলের একটি হোম স্টে-র কর্ত্রী সায়ন্তনী দত্ত বলছেন, ‘‘দোল উপলক্ষে ১৩ ও ১৪ মার্চ সমস্ত ঘর অগ্রিম বুকিং করে নিয়েছে কলকাতার একটি পর্যটন সংস্থা। এ ধরনের ইভেন্ট ট্যুরিজ়ম আমাদের হোম স্টে-তে প্রথম হচ্ছে। হোম স্টে চত্বরে ওই সংস্থাটিই বসন্তোৎসবের আয়োজন করবে।’’ কলকাতার পর্যটন সংস্থাটির কর্ত্রী দেবিকা রায় বলছেন, ‘‘আমলাশোলের ওই হোম স্টে-র ঘরগুলি অগ্রিম বুকিং করে রাখা হয়েছে। কলকাতা থেকে বসন্তোৎসবের জন্য পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হবে। ভাল সাড়া পাচ্ছি।’’
সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম কথাকৃতি নাট্য সংস্থার বার্ষিক ‘নাট্যমিলনী’র আয়োজন হয় রাজা নরসিংহ মল্লদেব স্মৃতি মঞ্চে। চার সন্ধ্যার নাট্যোৎসবে জনা দশেক পর্যটককে নিয়ে এসেছিল কলকাতার এক পর্যটন সংস্থা। ওই সংস্থার কর্তা শ্রয়ণ সেন বলেন, ‘‘আমাদের এই ইভেন্ট ট্যুরিজ়মর প্রথম শর্ত ছিল, যাঁরা প্রকৃত নাট্যমোদী, তাঁদের জন্যই চার রাত-পাঁচ দিনের পর্যটন প্যাকেজ। কলকাতা থেকে গাড়িতে এসে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে সন্ধ্যায় নাটক দেখা। কথাকৃতির নাট্য প্রযোজনা দেখে পর্যটকেরা খুবই খুশি হন। কথাকৃতির তরফে পর্যটকদের সংবর্ধনাও দেওয়া হয়।’’ কথাকৃতির সভানেত্রী দেবলীনা দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘এ ধরনের ইভেন্ট ট্যুরিজ়ম-এর ফলে ঝাড়গ্রামের নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চার বিষয়গুলি বাইরে অনেকের কাছে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে।’’
ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমন ট্যুরিজ়ম জেলার পর্যটন ও স্থানীয় শিল্প-সংস্কৃতির প্রসারে খুব সহায়ক হচ্ছে।’’ শিবাশিস জানাচ্ছেন, পর্যটকেরা ব্যক্তিগত ভাবেও ফোন করে স্থানীয় পালা-পার্বণের বিষয়ে জানতে চান। সেই মতো বুকিং করেন। মকর পরবের সময়ে টুসু ভাসান দেখতে ও মাংসপিঠের স্বাদ নিতে অনেকে আসেন। ঝাড়গ্রাম মেলা ও যুব উৎসব (২৩ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি) দেখার জন্যও পর্যটকেরা আসছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy