প্রতীকী ছবি
তিনি জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি। জেলা পরিষদের সদস্যও। নিষ্ক্রিয় কর্মীদের তালিকায় তাঁর নামই প্রথমে।
স্বাভাবিক ভাবে রবিবার ‘স্বীকৃতি সম্মেলনে’ ডাক পেয়েছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য সূর্যকান্ত অট্ট। সম্মেলনে এলেন না তিনি। উল্টে প্রশ্ন তুললেন তালিকা নিয়েই। অনুপস্থিতির কারণ ব্যাখ্যা করে সূর্যকান্ত বললেন, ‘‘এই তালিকা দল করেনি। পিকের টিম এটা করেছে। ফলে এটা দলের কোনও কর্মসূচি নয়। তাই আমি যাইনি।’’ গত ২ মার্চ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভা থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচি শুরু করেছেন। সেই কর্মসূচির একটি অংশ স্বীকৃতি সম্মেলন। যেখানে পুরনো, অভিজ্ঞ কর্মীদের সংবর্ধনা জানানোর কথা বলা হয়েছে।
খাতায়, কলমে পুরনো, অভিজ্ঞ কর্মীদের সংবর্ধনার কথা বলা হলেও তৃণমূল সূত্রের খবর, আসলে এ ভাবে পুরভোট এবং বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠন চাঙ্গা করারই কৌশল নেওয়া হয়েছে। মূলত যে সব নেতা, কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন, স্বীকৃতি সম্মেলনে ডাকা হচ্ছে তাঁদেরকেই।
এ দিন বাখরাবাদ অঞ্চল তৃণমূল কার্যালয়ে ছিল স্বীকৃতি সম্মেলন। ছিলেন বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ, ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ, জেলা সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান সেক কাওসার আলি,এসটি সেলের জেলা সভাপতি ভদ্র হেমব্রম। তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিনের সম্মেলনের জন্য রাজ্য কমিটির পাঠানো তালিকায় ৩৫ জনের নাম ছিল। সূর্যকান্ত ছাড়া সেই তালিকায় আর যাঁদের নাম রয়েছে তাঁদের অধিকাংশই তাঁর অনুগামী বলে পরিচিত। ৩৫ জনের মধ্যে এ দিন উপস্থিত ছিলেন ১২ জন। সূর্যকান্তের পাশাপাশি তাঁর অনুগামীদের অধিকাংশই সম্মেলনে যাননি।
সূর্যকান্ত দলের ব্লক সভাপতি মিহির চন্দের বিরোধী গোষ্ঠী বলেই পরিচিত। দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে একাধিকবার ‘অস্বস্তিকর’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় টিকিট বিলি নিয়ে প্রকট হয় দ্বন্দ্ব। ২০১৩-’১৮ জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সূর্যকান্ত গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতেছেন। তবে এ বার আর দল তাঁকে কর্মাধ্যক্ষ করেনি। ভোটের পরে মকরামপুর দলীয় কার্যালয়ে বিস্ফোরণ ও ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর পর সূর্যকান্তের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল মৃতের পরিবার-সহ ব্লক তৃণমূল। এরপর যত দিন গিয়েছে ততই কোণঠাসা হয়েছেন সূর্যকান্ত। শেষে নিষ্ক্রিয় নেতা, কর্মীদের তালিকায় উঠল নাম। যদিও এসব কিছুই মানতে নারাজ সূর্যকান্ত। তিনি বলছেন, ‘‘দল পিকের নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এ দিনের সম্মেলনকে দলের মিটিং বা প্রক্রিয়া বলে মনে করি না।’’ এনিয়ে ব্লক সভাপতি মিহিরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দল যা নির্দেশ দিয়েছে সে ভাবেই আমরা কর্মসূচি করছি। কে মানবে এবং মানবে না সেটা তার ব্যাপার। কে তালিকা করেছে সেটা রাজ্য কমিটি বলবে।’’
এ দিন চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কাননের সভাকক্ষে ছিল শালবনি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের ‘স্বীকৃতি সম্মেলন’। সেই সম্মেলনে স্বীকৃতি দেওয়ার তালিকায় নয়াবসত অঞ্চলের এক কর্মীর নাম থাকায় সভায় উপস্থিত দলীয় কর্মীদের একাংশের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়। অনুষ্ঠান স্থলেই দলের মনোমালিন্য প্রকাশ্যে আসে। বিরক্ত হয়ে কয়েকজন কর্মী অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে যান। বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘এদিনের স্বীকৃতি সম্মেলন সুষ্ঠভাবেই হয়েছে, বাইরে কিছু হয়েছে কিনা জানি না।’’
নিষ্ক্রিয় কর্মী কি স্বীকৃতি পেলেই সক্রিয় হবেন! প্রশ্ন তুলছেন তৃণমূলকর্মীদের একাংশ। অন্য অংশের অবশ্য বক্তব্য, চেষ্টায় ক্ষতি কী!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy