জেসিবি মেশিন ঘিরে বিক্ষোভ স্থানীয় চাষিদের। নিজস্ব চিত্র
দো-ফসলি চাষের জমিতে ভেড়ি তৈরির চেষ্টাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল কোলাঘাটে। মাটি কাটার জন্য আনা জেসিবি মেশিনের সামনে রুখে দাঁড়ালেন চাষিরা। তাঁদের প্রশ্ন— ‘জমি গেলে খাব কী’?
লকডাউনে কোলাঘাটের সাগরবাড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নহলা মৌজায় প্রায় ৩৫ বিঘা জমিতে ভেড়ি বানাতে উদ্যোগী হন এক ব্যক্তি। শুরু হয় জমি মাপার কাজ। তবে দাবি, ভেড়ির এলাকায় জমি দিতে রাজি হননি এলাকার কয়েকজন চাষি। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে ভেড়ি তৈরি রুখতে ‘নহলা মাছের ঝিল বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটি’ কয়েকদিন আগে কোলাঘাটের বিডিওকে স্মারকলিপি দিয়েছি। এর পরে গত সোমবার ভেড়ি মালিকের লোকজন জমি মাপতে এলে অনিচ্ছুক কৃষকরা বিক্ষোভ দেখান।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার সকালে জেসিবি মেশিন নিয়ে হাজির হয় ভেড়ির মালিক এবং তাঁর লোকজন। খবর পেয়ে অনিচ্ছুক কৃষকেরা এসে মেশিনের সামনে দাঁড়িয়ে পথ আটকে দে। শুরু হয় বিক্ষোভ। চাষের জমিতে ভেড়ি তৈরি করা যাবে না বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন তাঁরা। কৃশকদের অভিযোগ, বহিরাগত লোকেরা এসে ওই ভেড়ি করার চেষ্টা করছে। শ্রীকান্ত মাইতি নামে স্থানীয় কৃষক বলেন, ‘‘ভেড়ি হলে মাঠের বাকি জমিগুলিতে আর চাষ হবে না। আমাদের না জানিয়েই মাঠে মাটির কাটার জন্য জেসিবি মেশিন নিয়ে আসা হয়। সকলেই বাইরের লোক। এলাকার কয়েকজন কৃষক এঁদের মদত দিয়ে নিয়ে এসেছেন। এখন জমিতে আমন ধান রোয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। জমি গেলে খাব কী?’’
আশিস ভৌমিক নামে আরেক কৃষক বলেন, ‘‘এই জায়গায় ভেড়ি হলে নহলা এবং সারদাবসান মৌজার নিকাশি বেহাল হবে। বাকি জমিগুলিতেও চাষ করা সম্ভব হবে না। আমরা কোনও ভাবেই এখানে ভেড়ি করতে দেব না।’’
এ দিনের ঘটনার পরে কোলাঘাট থানার ওসিকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আবেদন জানায় কোলাঘাট ব্লক মাছের ঝিল বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটি। সংগঠনের উপদেষ্টা নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘পুলিশকে জানিয়েছি এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য।’’ অভিযোগ পাওয়ার পরই কোলাঘাট থানার পুলিশ গিয়ে জমি থেকে জেসিবি মেশিন বাইরে বের করে দেয়। কোলাঘাট থানার ওসি রাজকুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, যাঁরা ভেড়ি তৈরি করতে চেয়েছিলেন, তাঁদের ভেড়ি তৈরি সংক্রান্ত বৈধ নথিপত্র ও প্রশাসনিক অনুমতিপত্র দেখাতে বলা হয়েছে। তার পরেই ভেড়ি করতে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy