Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Sitrang

মাঝারি বৃষ্টি, প্রাথমিক স্বস্তি সিত্রাং ঝড়ে

রবিবার থেকেই জেলার সমুদ্র উপকূল ও নদীতীরবর্তী এলাকাগুলি থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানো শুরু হয়েছিল। সোমবার সকাল থেকেও বাসিন্দাদের সরানোর কাজ অব্যাহত ছিল।

কালীপুজোর দিন সকালে বাদলা আবহাওয়ায় দিঘায় সৌন্দর্য উপভোগ পর্যটকদের।

কালীপুজোর দিন সকালে বাদলা আবহাওয়ায় দিঘায় সৌন্দর্য উপভোগ পর্যটকদের।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২২ ০৯:২৬
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় সহ ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা ছিলই। পরিস্থিতি মোকাবিলায় যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসন ও বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দফতর। নিম্নচাপের প্রভাবে রবিবার থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় হাল্কা বৃষ্টি শুরু হয়। সোমবার সকাল থেকে উপকূল এলাকা সহ জেলার প্রায় সর্বত্রই হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সাথে ঝোড়ো হাওয়া বইতে থাকে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় বা ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে প্রশাসন।

রবিবার থেকেই জেলার সমুদ্র উপকূল ও নদীতীরবর্তী এলাকাগুলি থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানো শুরু হয়েছিল। সোমবার সকাল থেকেও বাসিন্দাদের সরানোর কাজ অব্যাহত ছিল। এদিন দুপুরের মধ্যে দিঘা, রামনগর, কাঁথি, খেজুরি, নন্দীগ্রাম ও হলদিয়ার উপকূল এলাকা থেকে প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দাকে সরানো হয়েছে। এঁদের মধ্যে ১৬ হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলিতে রাখা হয়েছে। বাকিরা আত্মীয়-পরিজনদের বাড়িতে চলে যান বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। তবে

এদিন হলদিয়ায় হলদি নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরাতে গেলে অদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরি হয়। ত্রাণ শিবিরের পরিবর্তে অনেকে হলদিয়া ভবনেই থাকার দাবি করেন। তাঁরা হলদিয়া ভবন ছাড়া অন্য জায়গায় যাবেন না বলে জানান। হলদিয়া ভবন জেলার সার্কিট হাউসের মান্যতা পায়। ফলে বিস্মিত হন প্রশাসনের আধিকারিকরা। যদিও পরে তাঁদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেল প্রশাসনিক কর্তারা। নন্দীগ্রাম ব্লক মৎস্য আধিকারিক সুমন কুমার সাহু হলদি ও হুগলী নদীর তীরবর্তী এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছেন যাতে কোনও মৎস্যজীবী সমুদ্রে বা নদীতে না যায়। পঞ্চমখন্ড জালপাই , কেন্দেমারি চর, কাঁটাখালি, তালপাটি, গাঙরাচর প্রভৃতি নদী তীরবর্তী এলাকার মৎস্যজীবিদের সতর্ক করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির আশঙ্কার পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়িয়েছে সোমবার থেকে অমাবস্যার ভরা কোটালের জোয়ার। এদিন সকালে জোয়ারে সময়ে দিঘার সমুদ্র ও রূপনারায়ণ, হুগলি হলদি নদীতে জলস্তর অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। সমুদ্র ও নদীতে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের সতর্ক করতে দিঘা, হলদিয়া সহ বিভিন্ন নদীতীরের এলাকাগুলিতে প্রশাসনের তরফে মাইক প্রচার করা হয়। জোয়ারের সময় সমুদ্র বা নদীতে জলোচ্ছ্বাসের জেরে বাঁধ ভেঙে যাওয়া রুখতে সেচ দফতরের তরফে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘উপকূলবর্তী এলাকার ৩০ হাজার মানুষকে সরানো হয়েছে। উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সমুদ্র-নদী বাঁধের পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।’’ জেলা সভাধিপতি উত্তম বারিক দিঘা ও রামনগরে সমুদ্র বাঁধ পরিদর্শনে যান। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ স্বপন দাস খেজুরির উপকূল এলাকায় বাঁধ ও স্থানীয় আশ্রয় কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করেন। তমলুকে রূপনারায়ণের বাঁধ পরিদর্শনে যান তমলুকের মহকুমাশাসক সৌভিক ভট্টাচার্য

সোমবার বেলা যত বেড়েছে ততই বেড়েছে হাওয়ার দাপট। কিছুটা ফুলে ফেঁপে উঠে দিঘার সমুদ্র। তবে সেই ঢেউ গার্ডওয়াল পেরোয়নি। দীপাবলি থেকে ভাইফোঁটা পর্যন্ত টানা লম্বা ছুটি থাকলেও অনেকটা ফাঁকা ছিল দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুর, তাজপুরের সৈকত। সৈকতের ধারে অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। হাতে গোনা কয়েকজন পর্যটক সৈকতে ঘরাঘুরি করেন। দুপুরে কিছু পর্যটক সমুদ্রে নামার চেষ্টা করলে তাঁদের সরিয়ে দেয় পুলিশ এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। তাজপুরের কাছে নিচু অংশে যেখানে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে সেখানে এদিন বোল্ডার ফেলা হয় সেচ দফতরের তরফে। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আধিকারিক মৃত্যঞ্জয় হালদার বলেন, ‘‘নদীতে জোয়ারের জলের স্তর কিছুটা বেড়েছে। তবে এখনও তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Sitrang midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy