লালগড়ের আদিবাসী মূলবাসী খুদেদের সঙ্গে জন্মদিন পালন আরিয়া ও তোর্সার। রবিবার টিকারামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ফাইল চিত্র।
বাবা-মায়েরা বছর-বছর প্রযুক্তিবিদ তৈরি করেন। কিন্তু তাঁদের সন্তানদের মন যাতে শুধুমাত্র কেজো-যান্ত্রিক না হয়ে প্রকৃত সংবেদনশীল মন হয়ে ওঠে সেই লক্ষ্যে খড়্গপুর আইআইটি-র অধ্যাপক বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানদের জন্মদিনে নিয়ে গেলেন জঙ্গলমহলের প্রান্তিক গ্রামে। সেখানে সমবয়সী আদিবাসী-মূলবাসী খুদেদের সঙ্গে জন্মদিন পালন করল আরিয়া সর্দার আর তোর্সা গায়েন।
আরিয়া আর তোর্সা দু’জনেই খড়্গপুর আইআইটি চত্বরের বাসিন্দা, সেখানকার অভিজাত স্কুলের পড়ুয়া। রবিবার লালগড়ের বৈতা অঞ্চলের টিকারামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আদিবাসী-মূলবাসী পড়ুয়াদের মাঝে কেক কাটে ওই দুই শহুরে কন্যা। সলমা হেমব্রম, সমাই হেমব্রম, দেবিকা চালক, লক্ষ্মীমণি মান্ডির মতো প্রান্তিক এলাকার ১২০ জন আদিবাসী-মূলবাসী খুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিলেন আরিয়া আর তোর্সার অভিভাবকরাও। বৈতা অঞ্চলের ১১৮ জন খুদেকে শিক্ষাসামগ্রী উপহার দেওয়া হল। মধ্যাহ্নভোজে ভূরিভোজের ব্যবস্থাও ছিল। দিনভর অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক আদান প্রদানও হল। আরিয়া ও তোর্সা রবীন্দ্র নৃত্য পরিবেশন করে। সলমা, লক্ষ্মীমণিরা আদিবাসী নাচ দেখায়।
আরিয়া খড়্গপুর আইআইটি চত্বরের দয়ানন্দ আর্য বিদ্যাপীঠের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। আরিয়ার বাবা আবদুল্লা সর্দার আইআইটির গণিতের প্রশিক্ষক আর মা মৌসুমী মণ্ডল আইআইটির গণিত বিভাগের অধ্যাপক। তোর্সা আইআইটি চত্বরের সেন্ট অ্যাগনেস স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। তার বাবা নির্মল গায়েন কলকাতায় এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিক, মা শিখা হোতা খড়্গপুর আইআইটির এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক। দুই দম্পতি প্রান্তিক এলাকায় গিয়ে সেখানকার খুদেদের সঙ্গে মেয়েদের জন্মদিন পালন করতে চেয়েছিলেন। ঝাড়গ্রামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে তাঁদের ইচ্ছেপূরণ হল এদিন।
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক তপনকুমার পাত্র ও সহ সম্পাদক সুমনকল্যাণ ধাড়া একযোগে জানাচ্ছেন, মূলত উৎসব-অনুষ্ঠানের বাড়তি খাবার প্রান্তিক এলাকায় গিয়ে বিলি করেন তাঁরা। খাবার নষ্ট না করে অন্যের খিদে মেটানোর কর্মসূচি চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এবার খড়্গপুরের দুই অভিভাবকদের ইচ্ছে অনুযায়ী লালগড়ের প্রান্তিক এলাকায় তাঁদের মেয়েদের জন্মদিন পালনে সহযোগিতা করা হল। টিকারামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দীপালি মাহাতো বলছেন, ‘‘আমার স্কুলের পড়ুয়ারা খুব খুশি হয়েছে। এমন জন্মদিন পালনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক দূরত্ব ঘোচানোর বার্তাও দিয়েছেন আরিয়া আর তোর্সার অভিভাবকরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy