Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ফের তৃণমূলে হেমা, বিঁধছে বিরোধীরা

তিনি মহিলা কংগ্রেসের  সাধারণ সম্পাদিকা ছিলেন। বুধবার খড়্গপুর শহরের মালঞ্চের জলযোগে সেই দলবদল হয়।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২০ ০১:০৪
Share: Save:

পুরনো কর্মীদের দলে ফেরানোর ডাক দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে কংগ্রেস থেকে ফের তৃণমূলে ফিরলেন হেমা চৌবে। তিনি মহিলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদিকা ছিলেন। বুধবার খড়্গপুর শহরের মালঞ্চের জলযোগে সেই দলবদল হয়। এ দিন হেমা ছাড়াও কংগ্রেসের প্রাক্তন শহর সভাপতি দেবাংশু গঙ্গোপাধ্যায়ও তৃণমূলে যোগ দেন। শহরের ‘জননেতা’ বলে পরিচিত প্রয়াত প্রাক্তন সিপিআই সাংসদ নারায়ণ চৌবের বৌমা হেমার ফের দলবদল নিয়েই চর্চা চলছে শহরে।

বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “হেমা এর আগেও তৃণমূলে ছিল। কিন্তু তৃণমূল অথবা কংগ্রেস কোথাও প্রতিষ্ঠিত হতে পারেননি। কতবার কোন-কোন দলে গিয়েছে তার হিসেবও নেই!” কংগ্রেসের জেলা কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস ঘোষের কটাক্ষ, “হেমার মতো সুবিধাবাদীরা দল ছেড়ে যাওয়া বা দলে আসায় কিছু যায় আসে না। দলবদল করা ওঁর অভ্যাস। ওখানে কিছু না পেলে হয়তো এর পরে বিজেপিতে যাবে। এতে তৃণমূলের কোনও সুবিধা হবে না।”

জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা অবশ্য বলছেন, বিরোধীরা গুরুত্ব না দিলেও শহর রাজনীতির কিছুটা তাঁকে ঘিরে জড়িয়ে রয়েছে। রেলশহরের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রয়াত প্রাক্তন সিপিআই সাংসদ নারায়ণ চৌবের বড় ছেলে গৌতমের স্ত্রী হলেন হেমা। ২০০১ সালে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন গৌতম। তিনি যে দিন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি হন সে দিনই মালঞ্চের জলযোগে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মালঞ্চ জলযোগে খুন হয়ে যান। তারপর তৃণমূলের হাত ধরেই হেমার রাজনীতিতে উত্থান।

২০০৪ সালে পাঁশকুড়ায় লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হন হেমা। ২০০৬ সালে খড়্গপুর বিধানসভা থেকে প্রার্থী হতে চাওয়ায় হেমার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় দেবাশিস চৌধুরীর। যিনি তাঁর স্বামী গৌতমের ‘ছায়াসঙ্গী’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সেবার দেবাশিস প্রার্থী হওয়ায় বসে যান হেমা। ২০০৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। ২০১১ সালে কংগ্রেসের টিকিটে গড়বেতা বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হন। ২০১৪ সালে ফের কয়েকদিনের জন্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যান হেমা। তারপরে আবার কংগ্রেসে ফেরেন। এ বার ফের তৃণমূলে ফিরে এলেন তিনি।

হেমার কথায়, “তৃণমূল পরিবার আমার কাছে নতুন নয়। তবে দলে মতবিরোধ থাকতেই পারে। তাই কয়েকবছর অন্য জাতীয়তাবাদী দলে কাজ করেছি। কিন্তু চাচাজির পরে কংগ্রেসে কোনও যোগ্য নেতা ছিলেন না। দিদি ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রশান্ত কিশোর আমাকে দিন সাতেক ধরে দলে ফেরার আহ্বান জানান। বিধায়ক প্রদীপ সরকারও বারবার বলছিলেন।”

এ দিন হেমার হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। ছিলেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, শহরের বিধায়ক প্রদীপ সরকার প্রমুখ। যাঁর সঙ্গে বিরোধে একসময়ে বসে গিয়েছিলেন হেমা, সেই দেবাশিসকেও তাঁর পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। তৃণমূলের তরফে ট্যুইট করেও এই দলবদলের কথা জানানো হয়।

দেবাশিস বলেন, “হেমা চৌবেরা আসায় দল অবশ্যই আরও শক্তিশালী হবে। আগামীদিনে হেমা চৌবেদের দলের কর্মসূচিতে যোগদানের মধ্যে দিয়ে নিজেদের তুলে ধরতে হবে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি এ দিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘হেমারা আসায় আমাদের দল সমৃদ্ধ হবে। আগামীদিনে দলে ওঁদের কাজ করার জায়গা করে দেওয়া হবে।”

বিধায়ক প্রদীপ মনে করিয়ে দিয়েছেন, “শহরে আমাদের সকলের রাজনীতির হাতেখড়ি নারায়ণ চৌবে ও গৌতম চৌবের হাত ধরে। সেই পরিবারের সদস্য হেমা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বলেছিলেন যেখানে ওঁর স্বামী খুন হয়েছিল সেখানেই উনি তৃণমূলের পতাকা ধরবেন। আমরা সেটাই করেছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Congress Kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy