প্রতীকী ছবি।
রেলের দুই বিভাগে দুই নিয়ম!
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে ব্যাঙ্ককর্মীদের যাতায়াতের অনুমতি নেই। স্টাফ স্পেশালে চড়লেই ব্যাঙ্ক কর্মীদের থেকে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। অথচ পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশন কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্টাফ স্পেশালে ব্যাঙ্ককর্মীদের যাতায়াতের অনুমতি দিয়েছেন। ভিন্ন নিয়মের গেরোয় মেদিনীপুর-টিকিয়াপাড়ার মধ্যে আপ ও ডাউনে যে চারজোড়া স্টাফ স্পেশাল লোকাল ট্রেন চলছে, তাতে ঠাঁই হচ্ছে না ‘ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার’ ব্যাঙ্ককর্মীদের। কেউ বাধ্য হয়ে উঠে ধরা পড়লে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। নয়তো ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সমস্যার কথা ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রমের কাছে লিখিতভাবে জানিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছেন বিভিন্ন ব্যাঙ্কে কর্মরত কর্মীদের একাংশ।
রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য দুই নিয়মের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘রেল রক্ষণাবেক্ষণের জরুরি কর্মীদের জন্য স্টাফ স্পেশালগুলি চলছে। রাজ্য সরকারের অনুরোধে কিছু কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্থার কর্মীদের যাতায়াতের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পূর্ব রেলে শহরতলির ট্রেনের সংখ্যা এবং তার ব্যাপ্তি দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সঙ্গে তুলনীয় নয়।’’ দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, হাওড়া ডিভিশনের স্টাফ স্পেশালের তুলনায় খড়্গপুর ডিভিশনে স্টাফ স্পেশালের সংখ্যাটা অনেক কম। তাই করোনা আবহে ভিড় এড়াতে সবাইকে অনুমতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
রেল কর্মী বাদে যাঁরা স্টাফ স্পেশালে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন, তাঁরা বিভাগীয় দফতরের পরিচয়পত্র দেখিয়ে রেলের কাউন্টার থেকে মাসিক টিকিট কাটতে পারছেন। কিন্তু ব্যাঙ্ককর্মীরা পারছেন না। ফলে, ভোগান্তি চলছে। ঝাড়গ্রামের লোধাশুলির বাসিন্দা রহিন মাহাতো একটি সমবায় ব্যাঙ্কের পাঁশকুড়া শাখার কর্মী। রহিন বলছেন, ‘‘তাই গাড়ি ভাড়া করে যাতায়াত করছি। সময়ও বেশি লাগছে। বিস্তর খরচও হচ্ছে। স্টাফ স্পেশালে চড়ার অনুমতি পেলে সহজে পাঁশকুড়ায় যাতায়াত করতে পারতাম।’’ হাওড়ার বাগনানের বাসিন্দা শেখ হাপিজুর রহমানের খেদ, ‘‘আমরাও তো ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার। আগে ট্রেনেই বাগনান-পাঁশকুড়া যাতায়াত করতাম। এখন বাইকে প্রতিদিন ৮০ কিমি যাতায়াত করছিলাম। বাইক দুর্ঘটনায় জখমও হই। সেই কারণে পুরনো মান্থলি সিজিন টিকিট নিয়েই গত মঙ্গলবার স্টাফ স্পেশালে চড়েছিলাম। কিন্তু পাঁশকুড়ায় ট্রেন থেকে নামতেই টিকিট চেকার আমাকে ফাইন করেন। ব্যাঙ্কের পরিচয়পত্র দেখালেও কাজ হয়নি।’’
শুধু ব্যাঙ্ককর্মী নন, স্টাফ স্পেশালে চড়তে না পেরে সমস্যায় পড়েছেন খড়্গপুরের বাসিন্দা আলিপুর আবহাওয়া দফতরের কর্মী প্রদীপ দে-র মতো অনেকেই। মেদিনীপুর-খড়্গপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জয় দত্ত বলছেন, ‘‘পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনে স্টাফ স্পেশালে অন্যান্য জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মী ও ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনে কিন্তু সেই সুযোগ মিলছে না। টাটা-হাওড়া স্টিল এক্সপ্রেসটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বার বার আবেদনেও কাজ হচ্ছে না।’’ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম বিষয়টি নিয়ে রেলের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy