প্রতীকী ছবি।
এগরা: রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে জমা পড়া রেশনকার্ড সংক্রান্ত আবেদন পত্রের আশি শতাংশই বাতিল হয়েছে। পুনরায় নতুন করে ইন্টারনেটে আবেদন জানাতে হবে বাতিল হওয়া ফর্মের আবেদনকারীদের। অভিযোগ, খাদ্য দফতরে কম্পিউটারে সফটঅয়্যায় পরিবর্তনের কারণেই এই সব আবেদন বাতিল হয়। ফলে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
ভোটের আগে রাজ্য সরকার তড়িঘড়ি মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে ‘দুয়ারে সরকার’ চালু করে। জানুয়ারি মাস থেকে জেলার প্রতিটি পঞ্চায়েতে চারটি করে শিবিরের আয়োজন করা হয়। ব্লক প্রশাসনিক দফতরের খাদ্য, কৃষি দফতর থেকে ভূমি ও রাজস্বের মতো প্রায় এগারোটি দফতর এই শিবিরে উপস্থিত ছিল। পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা শিবিরে গিয়ে নির্দিষ্ট দফতরে তাঁদের সমস্যা জানিয়ে আবেদন জমা দিয়েছিলেন। সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়ে স্বাস্থ্যসাথী এবং রেশন কার্ড সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে। এগরা মহকুমার পাঁচটি ব্লকে শুধু রেশনকার্ড সংক্রান্ত ২৬ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল। যার অধিকাংশই ছিল কার্ডে তথ্যের ভুল সংশোধন ও নতুন কার্ডের আবেদন।
সূত্রের খবর, ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে খাদ্য দফতরের আগের নিয়ম অনুযায়ী আবেদন জমা নেওয়া হয়। সেই নিয়মে নতুন ডিজিটাল রেশনকার্ডের জন্য আবেদন পত্রের সঙ্গে পরিবারের যে কোনও একজন সদস্যের রেশনকার্ডের জেরক্স জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। অভিযোগ, ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির শেষ হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরেই খাদ্য দফতরে পুরনো সফটঅয়্যারের পরিবর্তে নতুন সফটওয়্যার আসে। অভিযোগ, নতুন সফটঅয়্যারে আগের বহু নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে। যেখানে নতুন রেশনকার্ডের আবেদন পত্রের জন্য ওই পরিবারে আর যাঁরা আছেন তাঁদের সকলের রেশনকার্ডের জেরক্স দেওয়া বাধ্যতামূলক। এতে সমস্যা তৈরি হয়। আগের নিয়মের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হওয়ায় ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে যাঁরা নতুন কার্ডের জন্য আবেদন জমা দিয়েছিলেন নতুন সফটঅয়্যারে তা বাতিল হয়। আবেদন বাতিল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার আবেদনকারী। অনেকেরই এই বিষয়টি জানা না থাকায় নতুন রেশনকার্ড পাওয়ার আশায় হন্যে হয়ে ঘুরছেন খাদ্য দফতরে। যাঁরা নতুন রেশনকার্ডের খোঁজে খাদ্য দফতরে আসছেন তাঁদের ফের নতুন করে অনলাইনে আবেদন করতে বলা হচ্ছে।
খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, পটাশপুর-২ ব্লকে ৬ হাজার আবেদনপত্রের মধ্যে সাড়ে পাঁচহাজার বাতিল হয়েছে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে খাদ্য দফতরের নিচুতলার কর্মীদের। খতিবাড় এলাকার এক ব্যক্তি জানান, ‘দুয়ার সরকার’ শিবিরে নতুন রেশন কার্ডের জন্য আবেদন জমা দিয়েছিলেন। নতুন রেশন কার্ড এসেছে কি না খাদ্য দফতরে খোঁজ করতে গিয়ে তিনি এই বিভ্রান্তির কথা জানতে পারেন। তাঁর কথায়, ‘‘খামোখা ‘দুয়ারে শিবির’ করে সাধারণ মানুষকে হয়রান করার কোনও দরকার ছিল না।’’
পটাশপুর-২ ব্লক খাদ্য দফতরের আধিকারিক হিমাদ্রি রাউৎ বলেন, ‘‘নতুন সফটওয়্যার এসেছে। যাঁরা ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে চার নম্বর ফর্মে আবেদন জানিয়েছেন তাঁদের অনলাইনে ফের আবেদন জানাতে হবে। সেই আবেদন গ্রাহ্য হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy