—প্রতীকী চিত্র।
ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় দিন। কিন্তু খাস হলদিয়া শহরের বুকে তেরো বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা এখনও দগদগে। এলাকার বাসিন্দারা ভাবতে পারছেন না, ফুটফুটে মেয়েটা আর নেই। সেই সঙ্গে তাঁরা এখনও মানতে পারছেন না, প্রতিবেশী যে যুবককে ‘কাকু’ বলে ডাকত মেয়েটা, সে-ই এমন সর্বনাশা কাণ্ড ঘটিয়েছে।
ঘটনায় অভিযুক্ত সুজন পাত্রকে শনিবারই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। রবিবার তাকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে হাজির করা হলে এক দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। যদিও পুলিশের তরফে সাত দিনের হেফাজতের আবেদন করা হয়েছিল। তবে রবিবার ছুটির দিনে পকসো আদালত বন্ধ থাকায় একদিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়। আজ, সোমবার ধৃতকে ফের অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানো হবে। আর ওই নাবালিকার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে।
নিহত নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা পেশায় টোটো চালক। তার এক ভাই ও বোনও রয়েছে। বাবার পাশে দাঁড়াতে চেষ্টার কসুর ছিল না সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর। অভাবের সঙ্গে লড়াই করেই পড়াশোনা করছিল সে। সেই সঙ্গে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফুল বিক্রি করত। কখনও আবার ফুলের দোকানে গিয়ে মালা গেঁথে রোজগারের চেষ্টা করত সংসারের কিছুটা সুরাহার জন্য।
সেই মেয়ের এমন মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। অনেকে আবার আতঙ্কিতও। এলাকার বাসিন্দা কাজল দাস বলেন, ‘‘প্রায় সতেরো বছর ধরে এ পাড়ায় রয়েছি। কোনও দিন এই ঘটনা ঘটেনি। প্রতিবেশীরাই যদি এমন কাণ্ড ঘটায়, বিশ্বাস করব কাকে! নিজের মেয়েকে নিয়েও দুশ্চিন্তা হচ্ছে।’’ এলাকায় ফিরে এসেছে অভিযুক্ত সুজনের পরিবার। পুলিশ সুজনের বাড়ি ‘সিল’ করে দেওয়ায় তার স্ত্রী পূর্ণিমা রয়েছেন ওই এলাকাতেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে। পূর্ণিমাও কড়া গলায় বলছেন, ‘‘যে বাড়িতে আমার স্বামী এই নোংরা কাজ করতে পেরেছে, সেই বাড়িতে আমি আর ঢুকব না।’’
এই ঘটনায় ঘুচে গিয়েছে রাজনীতির দূরত্বও। রবিবার নিহত নাবালিকার বাড়িতে যান হলদিয়ার সিপিএ বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের পাশে আছি। অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’’ এলাকার তৃণমূল নেত্রী গার্গী মুখোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, ‘‘একটা ফুটফুটে কিশোরীর এই পরিণতি কোনও ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। দোষীকে শাস্তি পেতেই হবে।’’ বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী নমিতা সামন্তের কথায়, ‘‘আমরা প্রশাসনের কাছে দোষীর শাস্তির আর্জি জানাব। সব রকম ভাবেই ওই পরিবারের পাশে থাকবে আমাদের দল।’’
এ সব ছাপিয়ে নিহত নাবালিকার মায়ের হাহাকার, ‘‘এক ছুটে যে মেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল, সে আর ফিরল না। এ রকম মর্মান্তিক ভাবে কেউ কাউকে মারতে পারে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy