শ্যামল আদক। —নিজস্ব চিত্র।
এ বার পদত্যাগ করলেন হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান শ্যামল আদক। তৃণমূল ত্যাগী শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তিনি। শুভেন্দু পদ্মশিবিরে যাওয়ার পর থেকে তাঁকে নিয়েও জল্পনা চলছিল। তাতেই এ বার সিলমোহর পড়ল। শুক্রবার দুপুরে নিজের ইস্তফাপত্রটি হলদিয়া মহকুমা শাসক ও পুরসভার সিইও-র কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি, তবে শ্যামল তৃণমূল ছাড়ছেন কি না, সে ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলেনি।
পদত্যাগপত্র পাঠানোর আগে এ দিন সকালেই আনন্দবাজার ডিজিটালের তরফে শ্যামলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বেলা ১১টা বেজে ৪৫ মিনিট নাগাদ ফোনে তিনি বলেন, ‘‘এখনও পদত্যাগ করিনি। গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে রয়েছি। পদত্যাগ করব কি না, পরে সিদ্ধান্ত নেব।’’ তার পর দুপুর ২টো নাগাদ শ্যামল পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে জানা যায়। ফোন বন্ধ করে দেওয়ায় এর পর অবশ্য আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে হলদিয়ার মহকুমা শাসক অবনিত পুনিয়া বলেন,‘‘আজ দুপুরে হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান শ্যামল আদকের ইস্তফাপত্রটি ইমেলেও পেয়েছি। হাতে পেয়েছি হার্ডকপিও। তিনি বোর্ড অফ কাউন্সিলরকেও পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। পুরসভার সিইও আছেন। তাঁর নেতৃত্বে বোর্ড অফ কাউন্সিলরের বৈঠকে পদত্যাগপত্রটি গৃহীত হলে, তবেই তা বৈধ হবে।’’
শ্যামল আদকের ইস্তফাপত্র। —নিজস্ব চিত্র।
শ্যামলের পদত্যাগ নিয়ে গোষ্ঠীর তৃণমূল নেতা দেবপ্রসাদ মন্ডলের দাবি, ‘‘এটা প্রত্যাশিতই ছিল। দাদা শুভেন্দু এখন গেরুয়া শিবিরে। তাঁর একান্ত অনুরাগী শ্যামলবাবু পুরসভা থেকে পদত্যাগ না করলে বিজেপিতে যাবেন কী ভাবে? উনি পদ ছেড়েছেন, এবার কাউন্সিলর ও দল কাকে চেয়ারম্যান করবে, তা তারাই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তমলুকের বাসিন্দা শ্যামল এক সময় হলদিয়ার প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। লক্ষ্মণের হাত ধরেই হলদিয়া বন্দর এলাকায় একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে ওঠেন তিনি। পরে রাজ্যে পালাবদলের পর তিনি শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এবং তাঁর ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। তৃণমূলে শুভেন্দু বিরোধী শিবিরকে কোণঠাসা করতে সিপিএমের একটা অংশ শ্যামলের হাত ধরেই শাসক দলে যোগ দেয়। হলদিয়া জুড়ে শ্যামলের কর্তৃত্ব কায়েম হয়।
কিন্তু শুভেন্দু দল বদলে গেরুয়া শিবিরে চলে যাওয়ার পর থেকেই শ্যামল একা হয়ে পড়েন। বরং একসময় শুভেন্দু যাঁদের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিলেন, সেই দেবপ্রসাদ মণ্ডল ও তাঁর অনুগামীরাই এখন হলদিয়ায় নতুন করে ক্ষমতার শীর্ষে চলে এসেছেন। তার মধ্যেই সম্প্রতি টাউনশিপে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের বৈঠকে শ্যামলের উপর হামলা হয়। তার পর থেকেই তাঁর পদত্যাগ ঘিরে জল্পনা শুরু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy