Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

৪৪ লক্ষ টাকার সোনা নিয়ে চম্পট, গুজরাত পুলিশের হাতে পাকড়াও যুবক

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত তুহিন মল্লিক হাওড়া জেলার আমতার কাজিপাড়ার বাসিন্দা। প্রায় ৬ বছর ধরে আমেদাবাদে থাকা বছর আঠাশের  তুহিন দক্ষ সোনার কারিগর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। একাধিক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর অর্ডার অনুযায়ী সোনার গয়না গড়ে দিতেন।

ধৃত তুহিন। নিজস্ব চিত্র

ধৃত তুহিন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ০০:১২
Share: Save:

সোনার কাজ করতে গিয়েছিলেন গুজরাতের আমদাবাদে। কয়েক বছর কাজও করেন। শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে ৪৪ লক্ষ টাকার সোনা চুরি করে আনার অভিযোগে রবিবার ভোরে ওই যুবককে তমলুক থেকে গ্রেফতার করল গুজরাতের পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত তুহিন মল্লিক হাওড়া জেলার আমতার কাজিপাড়ার বাসিন্দা। প্রায় ৬ বছর ধরে আমেদাবাদে থাকা বছর আঠাশের তুহিন দক্ষ সোনার কারিগর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। একাধিক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর অর্ডার অনুযায়ী সোনার গয়না গড়ে দিতেন। কিন্তু দিন দশেক আগে এই ভাবে একাধিক ব্যবসায়ীর কাছ নেওয়া প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকার সোনা-সহ সে চম্পট দেয়। সোনা চুরির ঘটনায় আমদাবাদের কালুপুর থানায় তুহিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যবসায়ীরা। এরপরেই তুহিনের খোঁজে তল্লাশিতে নামে কালুপুর থানার পুলিশ। তুহিনের খোঁজে তারা তিনদিন আগে হানা দিয়েছিল হাওড়া জেলার আমতা থানার উদং গ্রামের কাজিপাড়ায়। কিন্তু সেখানে তুহিনকে না পেয়ে তার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে খোঁজ শুরু হয়। হাওড়া ও হুগলি জেলার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও তুহিনের খোঁজ পায়নি কালুপুর থানার পুলিশ। শেষপর্যন্ত তমলুক থানার পুলিশের সাহায্যে তারা রবিবার ভোররাতে পূর্ব মেদিনীপুরে তমলুকের কাঁকটিয়া বাজারের কাছ থেকে তুহিনকে গ্রেফতার করে। রবিবার তাকে তমলুক আদালতে তোলা হয়। বিচারক তার সাতদিনের ট্রানজিট রিমান্ডের নির্দেশ দেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, তুহিন গত ১৩ নভেম্বর আমদাবাদ থেকে প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকার দামের সোনা নিয়ে চম্পট দেয় তুহিন। কালুপুর থানার সাব-ইনস্পেক্টর এম কে চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচজন পুলিশের একটি দল তুহিনকে ধরার জন্য এ রাজ্যে আসে। প্রথমে তারা হাওড়া জেলায় পৌঁছয়। পুলিশের ওই দলে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী ছিলেন তুহিনকে চিহ্নিত করার জন্য। তাঁর কাছ থেকে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার সোনা নিয়ে তুহিন চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। হাওড়ার পুলিশের সাহায্যে গুজরাত পুলিশের ওই দলটি তুহিনের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। কিন্তু তুহিন নিজের বাড়িতে না থেকে বিভিন্ন আত্মীয়য় বাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। সঙ্গে তার স্ত্রী ও ভাইও ছিল। তুহিনের ভাইও সোনার কারিগরের কাজ করত। সেই সুবাদে তুহিনের ভাইকে চিনতেন ওই ব্যবসায়ী। তুহিনের মোবাইলের ফোনের সূত্র ধরে তার গতিবিধি পরিবর্তনের কথা জানতে পারে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় তমলুক থানার কাঁকটিয়া বাজারে তুহিনের উপস্থিতির কথা জানতে পেরে কালুপুর থানার পুলিশ সাধারণ পোশাকে হানা দেয়। সেখানে তুহিনের ভাইকে চিনতে পারেন ওই ব্যবসায়ী। কিন্তু সাধারণ পোশাকে থাকা গুজরাত পুলিশের দু’জন তুহিনের ভাইকে ধরতে গেলে সে ছুটে পালায়। সেই সময় বাজারে থাকা লোকজন সাধারণ পোশাকে থাকা গুজরাত পুলিশের ওই দু’জনকে চোর ভেবে আটক করে বলে অভিযোগ। যদিও তমলুক থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পরেই খোঁজ নিয়ে জানা যায় কাঁকটিয়া বাজারের কাছে তুহিনের আত্মীয়ের বাড়ি রয়েছে। এরপরেই গুজরাত পুলিশ ও তমলুক থানার পুলিশ শনিবার রাত থেকে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে গাড়ি তল্লাশি শুরু করে। রবিবার ভোরে একটি গাড়িতে চেপে তুহিন, তাঁর স্ত্রী ও ভাই পালানোর সময় পুলিশ তাদের ধরে ফেলে। তুহিনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় তুহিন সোনা চুরির কথা স্বীকার করেছে। তবে তার কাছ থেকে ২০ গ্রাম সোনা উদ্ধার করা গিয়েছে। বাকি সোনা সে আমেদাবাদেই বিক্রি করে দিয়েছে বলে তুহিন পুলিশকে জানিয়েছে। আমদাবাদে কোথায়, কার কাছে তুহিন সোনা বিক্রি করেছে তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হবে বলে সেখানকার পুলিশ জানিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Gujrat Police Gold Arrest Tamluk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy