তালিকায় ‘ভূতুড়ে’ ক্লাবের নাম (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র
ক্লাবের অস্তিত্ব নেই। অথচ সেই ক্লাবের নামে আসছে সরকারি অনুদানের টাকা। আর ওই টাকা কেউ বা কারা তুলেও নিচ্ছেন!
সম্প্রতি এমনই অভিযোগ উঠেছে পটাশপুর-২ ব্লকের পঁচেটগড়ে। পটাশপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা পঁচেটগড় অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি নীলমাধব দাস এ নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক জ্যোতির্ময় করের কাছে মৌখিক অভিযোগও জানিয়েছেন।
এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কাজের জন্য সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত ক্লাবগুলিকে অর্থ অনুদান দেয় রাজ্য সরকার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া শংসাপত্র অনুসারে ক্লাবের তালিকা রাজ্যে পাঠানো হয়। এ বছর এক লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে ক্লাবগুলিকে। এ নিয়ে পটাশপুর বিধানসভা এলাকার ৫০টি ক্লাবের অনুদানের নামের তালিকা এসেছে। থানা থেকে সেই তালিকা গিয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে।
ক্লাবের ওই তালিকায় ‘পঁচেটগড় হিউম্যান ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ নামে একটি ক্লাবের উল্লেখ রয়েছে। অভিযোগ, ওই ক্লাবটির বাস্তবে কোনও অস্তিত্বই নেই। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, ক্লাবটি যেমন নেই, তেমনই ক্লাবের সঙ্গে কারা যুক্ত, কে কর্মকর্তা, সে নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। অভিযোগ, গত বছর ওই ‘ভূতুড়ে ক্লাব’ দু’লক্ষ টাকার সরকারি অনুদানও তুলেছে। সে সময় ক্লাবের নামের তালিকা জনসমক্ষে না আসায় বিষয়টি অজানা ছিল। এবারে স্থানীয় থানা থেকে ক্লাবগুলিকে ওই টাকার চেক দেওয়া হবে। সেই চেক থানায় এসেও গিয়েছে। আর ক্লাবের নামের তালিকাটি সামনে আসায় এবার বিষয়টি জানাজানি হয়েছে।
এ নিয়ে পটাশপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা পঁচেটগড় অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি নীলমাধব দাস অধিকারী স্থানীয় বিধায়কের কাছে অভিযোগ করেছেন। কেউ যাতে ওই টাকা তুলতে না পারেন, সে বিষয়ে আর্জি জানানো হয়েছে। নীলমাধব বলেন, ‘‘পঁচেটগড় হিউম্যান ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে কোনও ক্লাব এলাকায় নেই। কেউ ভুয়ো ক্লাব বানিয়ে টাকা তুলছেন। কে এটা করছেন, তা আমাদের অজানা। দলের কিছু লোক এই কাজের পিছনে জড়িত রয়েছে বলে আমার অনুমান। বিধায়কের কাছে এই বিষয়ে তদন্তের জন্য অভিযোগ জানিয়েছি।’’
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই, একই অভিযোগ উঠেছিল আরামবাগের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নবপল্লি এলাকায়। সেখানে ‘নবপল্লি মাঠপাড়া সম্প্রীতি সঙ্ঘ’ নামে একটি ভুয়ো ক্লাবের হয়ে গত বছর অনুদানের লক্ষাধিক তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেতার নামে। আর পটাশপুরে অঞ্চল তৃণমূল সভাপতিও ভুয়ো ক্লাব খুলে টাকা তোলার ব্যাপারে তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধেই অভিযোগের তির তুলেছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে শাসকদলের সুপারিশেই কি এভাবে অস্তিত্বহীন ক্লাবকে টাকা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে!
ক্লাবের অনুদান পাওয়ার জন্য স্থানীয় বিধায়কের শংসাপত্রের প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে কি পটাশপুরের বিধায়ক ভুয়ো ক্লাবের জন্য শংসাপত্র দিয়েছিলেন? পটাশপুরের বিধায়ক জোতির্ময় করের জবাব, ‘‘শংসাপত্র দেওয়া নিয়ে ঠিক হয়েছিল সে সময়, তা আমার জানা নেই। প্রাথমিক ভাবে ভুয়ো ক্লাবের অভিযোগ শুনেছি। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy