বাঁধের সামনে মা হাতি। নিজস্ব চিত্র
মানুষের তাড়া খেয়ে ডেরা বদলেও সদ্যোজাতকে বাঁচাতে পারল না মা। জঙ্গলের মাঝে বাঁধে জল খেতে নেমে আর উঠতে পারল না দু’দিনের বাচ্চা হাতি। তার দেহ উদ্ধারে গিয়ে দলের অন্য হাতিদের বাধায় ফিরে আসতে হল বনকর্মীদের। বুধবার সকালে গোয়ালতোড়ের হুমগড় রেঞ্জের পাথরমারি মৌজার কদমডাঙা জঙ্গলের ঘটনা। মৃত বাচ্চা হাতির দেহ নিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ উজিয়ে অন্য জঙ্গলে চলে গেল হাতির দলটি।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ৫০টির মতো হাতির একটি দল গড়বেতার দিক থেকে কালীপুর হয়ে সখীশোলের জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানেই একটি হস্তিনীর বাচ্চা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকেই স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ হাতে লাঠি, ইট নিয়ে চিৎকার করে হাতি তাড়াতে শুরু করেন। অনেকে পটকা ফাটান। মানুষের তাড়া খেয়ে মা হাতিটি সদ্যোজাতকে নিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার পথ পেরিয়ে হদহদির জঙ্গলে চলে যায়। দলের বাকি হাতিরা তাকে পাহারা দেয়। মঙ্গলবার সারা দিন হদহদির জঙ্গলে থাকার পরে রাতের দিকে বাচ্চাটিকে নিয়ে পাশের কদমডাঙার জঙ্গলে চলে আসে মা হাতিটি। ওই জঙ্গলটি বন দফতরের হুমগড় রেঞ্জের মধ্যে পড়ে।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জঙ্গলে বন দফতরের একটি বাঁধ আছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সেখানে জল বেড়েছে। ক্লান্ত বাচ্চা হাতিটি বুধবার ভোরে সেই বাঁধে জল খেতে নেমে কাদায় আটকে যায়। মা হাতিটি তাকে তোলার চেষ্টা করেও সফল হয়নি। মা হাতির চিৎকারে নজরদারিতে থাকা বনকর্মীরা গিয়ে দেখেন বাঁধের মধ্যে বাচ্চা হাতিটি মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বনকর্মীরা বাচ্চা হাতিটির দেহ বাঁধ থেকে তোলার চেষ্টা করলে হাতির দলের দাঁতালেরা বাধা দেয়। তাই দেহটি না তুলেই ফিরে আসেন বনকর্মীরা। বাচ্চা হাতির দেহটিকে বাঁধ থেকে তুলে শুঁড়ে করে নিয়ে টাঙাশোলের জঙ্গলে চলে যায় ওই হাতির দলটি। প্রায় দেড় কিলোমিটার হেঁটে যাওয়ার সময়ে ঘন জঙ্গলের ভেতরের গাছের ডাল ভেঙে দেয় ওই দলটি। বন দফতরের হুমগড় রেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বাবলু মাণ্ডি বলেন, ‘‘হাতিদের এই আচরণ সত্যিই অভিনব।’’
বন দফতরের রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও অসিতাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাঁধের জলে পড়ে একটি বাচ্চা হাতির মৃত্যু হয়েছে। বনকর্মীরা বহু চেষ্টা করেও বাকি হাতিদের বাধায় বাচ্চাটিকে তুলতে পারেনি। পরে হাতিরা নিজেরাই বাচ্চার দেহটিকে তুলে অন্য জঙ্গলে চলে যায়। ওই হাতির দলটির গতিবিধির ওপরে নজর রাখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy