চিড়িয়াখানায় সম্বর হরিণ। নিজস্ব চিত্র
নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সেই মতোই ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় আসতে চলেছে জিরাফ এবং জেব্রা। তৈরি হবে বিশেষ ‘লেপার্ড জ়োন’ও।
শীত পড়তেই ভিড় বাড়ছে জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে। তা নজরে রেখেই চিড়িয়াখানাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার পরিকল্পনা করেন বনমন্ত্রী। সেই মতো ইতিমধ্যেই একপ্রস্ত বৈঠক করেছেন বিভাগীয় বনকর্তারা। কয়েক দিন আগে ঝাড়গ্রামের ডিএফও শেখ ফরিদ, মুখ্য বনপাল (পশ্চিমচক্র) অশোকপ্রতাপ সিং ও বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা এই বৈঠক করেন। জ্যোতিপ্রিয়র কথায়, ‘‘ঝাড়গ্রামের চিড়িয়খানাকে আরও বড় করছি। চিড়িয়াখানায় জিরাফ ও জেব্রা নিয়ে আসা হবে। এ ছাড়াও আমরা লেপার্ড জ়োন করতে চাইছি।’’
২০১৭ সালে অক্টোবরে উত্তরবঙ্গের খয়েরবাড়ি চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে আনা হয়েছিল ‘সোহেল’ নামে একটি পুরুষ চিতাবাঘকে। তার পর ওই খয়েরবাড়ি থেকেই আনা হয়েছিল ‘হর্ষিণী’ নামে একটি স্ত্রী চিতাবাঘকে। এর পর ২০২০ সালে সেপ্টেম্বরে সোহেল ও হর্ষিণী দু’টি সন্তানপ্রসব করেছিল। ওই দু’টি সন্তানই ছিল পুরুষ। দু’বছর হয়ে যাওয়ায় চিতাবাঘগুলি ‘অ্যাডাল্ট’ হয়ে গিয়েছে। সাধারণত চিড়িয়াখানার মধ্যে পশু-পাখিদের বাচ্চা হতে দেখা যায় না। কিন্তু এই চিড়িয়াখানার শাল গাছে ঘেরা পরিসর প্রাকৃতিক পরিবেশের মতো হওয়ায় এখানে বিভিন্ন পশু-পাখি শাবক প্রসব করছে। প্রাণী চিকিৎসক চঞ্চল দত্তের কথায়, ‘‘চিতাবাঘের বাচ্চা দু’টি বড় হয়ে গিয়েছে। ফলে তাদের প্রজনন করারও সম্ভাবনা রয়েছে।’’
চঞ্চল দত্ত আরও জুড়ছেন, ‘‘এখানে লেপার্ড জ়োন করার মতো পরিস্থিতি রয়েছে। আমরা প্রস্তুতও রয়েছি।’’ ঝাড়গ্রাম শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ধবনী বিটে সাড়ে ২২ হেক্টর জায়গা জুড়ে রয়েছে জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কটি। এই পার্কটি ঝাড়গ্রামবাসীর কাছে ‘ডিয়ার পার্ক’ নামেই পরিচিত। বছর দশেক আগে ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়াখানার সম্প্রসারণ ঘটিয়ে জুলজিক্যাল পার্কে উন্নীত করা হয়েছে। শালবনের মাঝে চিড়িয়াখানার ‘জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক’ নামকরণ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই চিড়িয়াখানায় রয়েছে কয়েকশো চিতল হরিণ, পাঁচটি সম্বর হরিণ, ১৪টি স্বর্ণমৃগ, নীলগাই, অজস্র তারাকচ্ছপ, গোসাপ, ককটেল, এমুপাখি, সজারু, ভালুক, হায়না, নেকড়ে, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, গন্ধগোকুল, বাঁদর, হনুমান, মদনটাক পাখি, বনমুরগি, ময়ূর, কালিজ ও গোল্ডেন ফিজেন্ট, চারটি চিতা বাঘ মিলিয়ে ৩৫টি প্রজাতির প্রায় ৩৫০টি বন্যপ্রাণ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এক সময় এই চিড়িয়াখানায় কুমিরও ছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে সেই কুমিরটি মারা গিয়েছে। বনমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘মিষ্টি জলের কুমিরের পাশাপাশি নোনতা জলের কুমিরও চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসা হবে।’’
চিড়িয়াখানায় সুদৃশ্য মূল গেট ও টিকিটঘর চালু হয়েছে গত বছর অক্টোবর মাসে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সেন্ট্রাল জ়ু অথরিটির বিচারে সর্বভারতীয় স্তরে ‘মিডিয়াম ক্যাটাগরি’র চিড়িয়াখানার মধ্যে চতুর্থ স্থান পেয়েছে জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy