গনগনির অপরূপ নিসর্গ (বাঁ-দিকে)। তালা বন্ধ দেখে ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকেরা। ছবি: দেবাশিস চৌধুরী, নিজস্ব চিত্র
উদ্বোধনের পরে আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও তালা খোলেনি গনগনি পর্যটন প্রকল্পের।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর খড়্গপুর থেকে গনগনি পর্যটন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার মুখে সেদিন গনগনির সৌন্দর্যায়নের কথা উঠে এসেছিল। তিনি সেদিন বলেছিলেন, ‘‘মেদিনীপুরে গনগনি বলে একটা জায়গা আছে। খুবই সুন্দর। আমরা অল রেডি কটেজ করে দিয়েছি। ডিএম-কে বলেছিলাম যত তাড়াতাড়ি পারা যায় এটা করার জন্য।’’ কিন্তু তারপরে প্রায় আড়াই মাস কেটে গেল। গনগনি পর্যটন প্রকল্পের প্রবেশপথ এখনও বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা। প্রকল্পের নবনির্মিত অংশে প্রবেশে ছাড়পত্র নেই। পর্যটকেরা বাঁশের ব্যারিকেডের বাইরে থেকেই ভিতরের ঝাঁ চকচকে কটেজ, নানা রঙের কংক্রিটের ছাতা, নজর মিনার, ফুডকোর্ট দেখছেন।
সোমবার গড়বেতায় এসেছিলেন হুগলির শ্রীরামপুরের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী সুর্নিমল পাণ্ডে। তিনি বললেন, ‘‘খবরে শুনেছিলাম গনগনিতে পর্যটন কেন্দ্রের কথা। মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। তাই শীত পড়তেই সবাই মিলে চলে এসেছি। কিন্তু এসে হতাশ হতে হল। গনগনির সৌন্দর্য দেখতে পেলেও কটেজ, ফুডকোর্ট-সহ নতুন যেসব কাজ হয়েছে তা দেখতে পেলাম না। নজর মিনারেও উঠতে পারলাম না।’’ তাঁদের মতো অনেকেই ইচ্ছে থাকলেও গনগনিতে রাত্রিযাপন অথবা নানা পদের খাওয়াদাওয়া না করেই ফিরছেন।
জানা গিয়েছে, গনগনিতে দু’টি কটেজ, একটি প্রশাসনিক ভবন, ৯টি কংক্রিটের ছাতা, অনেকগুলি ঘর বিশিষ্ট ফুডকোর্ট, ৪০ ফুটের নজরমিনার করা হয়েছে। বাহারি বাতিস্তম্ভে সাজিয়ে তোলা হয়েছে গনগনির নবনির্মিত অংশ। সেপ্টেম্বরে উদ্বোধনের পরে অনেকেই ভেবেছিলেন এবারে শীতের মরসুমের শুরু থেকেই গনগনি পর্যটন প্রকল্প পুরোদমে চালু হয়ে যাবে। কিন্তু কোথায় কি! হতাশ পর্যটকেরা। জেলা তো বটেই, অন্য জেলা, এমনকি কলকাতা থেকেও অনেকে এসে কটেজ, ছাতা বা নজরমিনার ব্যবহার করতে না পেরে হতাশ। নতুন নির্মিত নানা রঙে সাজানো কংক্রিটের ছাতা, ফুডকোর্ট, নজরমিনারের রাস্তা ইতিমধ্যেই ঝোপঝাড়ে ঢাকতে শুরু করেছে। ভাঙছে বাতিস্তম্ভের অংশ। ব্যারিকেডের বাইরে গনগনির খোলা এলাকার অবস্থাও ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। খাদ বেয়ে নিচে নামার সিঁড়ির পলেস্তারা খসে পড়ছে। ভাঙছে সিমেন্টের প্লেট। খাদের ধারে না যাওয়ার জন্য করা রেলিংয়ের সামনে বাড়ছে ঝোপঝাড়।
কবে চালু হবে গনগনির পর্যটন প্রকল্প? স্থানীয় বিধায়ক উত্তরা সিংহের দাবি, ‘‘এই জায়গা দ্রুত পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। পর্যটকেরা তখন সুন্দরভাবে সাজানো কটেজ, ফুডকোর্ট, নজরমিনার ঘুরে দেখতে পারবেন।’’ জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘পর্যটন দফতর খুব তাড়াতাড়ি আমাদের জানিয়ে দেবে। তারপরই সব ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাবে।’’ তিনি জুড়েছেন, ‘‘এক্ষেত্রে গনগনি দেখার ক্ষেত্রে তো পর্যটকদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। মূল এলাকা তো খোলাই আছে।’’ গড়বেতা ১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, টেন্ডারের মাধ্যমে কটেজ, ফুডকোর্ট চালানোর জন্য দেওয়া হবে কোনও সংস্থাকে। পর্যটন কেন্দ্র পরিচালনা করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy