অরুণ দাসের আস্তানা। নিজস্ব চিত্র
দেশ থেকে ব্রিটিশদের তাড়াতে এক সময় লড়াই করেছেন। ব্রিটিশ পুলিশের নাগাল এড়াতে দিনের পর দিন পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আর পাঁচজনের মতো পাননি ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ হিসাবে সম্মান। এমনকী বসবাসের বাড়িটুকুও খুবই জরাজীর্ণ। বৃষ্টি, ঠান্ডা থেকে বাঁচতে পলিথিনের নীচে দিন কাটছে ৯৬ বছরের অরুণ দাসের। একাত্তর তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে এহেন বীর যোদ্ধার এমনই করুণ ছবি সামনে এসেছে খেজুরি-২ ব্লকের মানসিংহ বেড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের অশীতিপর বাসিন্দা অরুণবাবু পরাধীন ভারতে খেজুরির কুঞ্জপুরের বাসিন্দা জহর লাল পয়ড়্যা এবং হরি করণ প্রমুখদের সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। শুধু ব্রিটিশ সরকার নয়, পরবর্তীকালে তেভাগা আন্দোলনেও সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। যার পরিণামে তাঁর বিরুদ্ধে ৩২টি মামলা রুজু করেছিল ব্রিটিশ সরকার। দেশ স্বাধীনতা হওয়ার পরেও বেশ কয়েক বছর ধরে সেই সব মামলা চলেছিল। পরে অবশ্য সবকটি মামলা থেকে রেহাই পান অরুণবাবু।
কিন্তু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশের এই সৈনিকের কপালে আজও জোটেনি স্বাধীনতা সংগ্রামীর প্রাপ্য মর্যাদা। দুই সন্তানের মধ্যে বড়ছেলে আলাদা থাকেন। ছোট ছেলের কাছে থাকেন তিনি। তবে অশীতিপর এই স্বাধীনতা সংগ্রামীর থাকার জায়গাটুকু নেই বললেই চলে। পলিথিনের চাদরের নীচেই গরম, বর্যা আর শীত কাটে তাঁর। অরুণবাবুর আক্ষেপ, ‘‘স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে পেনশন পাওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু বামপন্থী রাজনীতি করার জন্য সেই সুযোগ পাইনি। এমনকী ব্রিটিশরা আমার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিল, সেই মামলা চালাতে গিয়ে সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হই। তারপর থেকে এমন অসহায়ভাবেই দিন কাটছে।’’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অরুণবাবুর বড় ছেলে আবাস যোজনা প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা পাওয়ার পর ঘর তৈরি করলেও অরুণবাবু ও তাঁর ছোট ছেলের কোনও ঘর নেই। পলিথিনে ঢাকা ভাঙাচোরা ঘরে বাস করেন তাঁরা। স্থানীয় বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই পরিবারকে আবাস যোজনা প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বঞ্চনার অভিযোগ পুরোপুরি ঠিক নয়।’’
অশীতিপর এই স্বাধীনতা সংগ্রামীর করুণ অবস্থা জানার পরে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএম। স্বাধীনতা সংগ্রামীর বাড়ি তৈরির জন্য সোমবার বামেদের তরফে তাঁর হাতে ২ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা তুলে দেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy