Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা, ধৃত ২ 

পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে এটি প্রতারণার ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’

ধৃত মানস (বাঁদিকে) ও গুঞ্জন। নিজস্ব চিত্র

ধৃত মানস (বাঁদিকে) ও গুঞ্জন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোলাঘাট শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০০:১১
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনায় লোন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মহিলাদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দু’জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিল কোলাঘাট এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। প্রথমে দুই প্রতারককে কোলাঘাট কাঠচড়া ময়দান এলাকায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে আটক করে রাখা হয়। পরে কোলাঘাট বিট হাউস থানার পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায়। বিজেপি নেতৃত্ব ও প্রতারিতদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার তাদের গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে এটি প্রতারণার ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের রামতারক এলাকার গুঞ্জন রায় নামে এক যুবক মাস খানেক ধরে কোলাঘাটের বিভিন্ন এলাকায় প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনায় লোন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মহিলাদের কাছ থেকে টাকা তুলতে শুরু করে বলে অভিযোগ। এক লক্ষ টাকা লোনে ৬০ হাজার টাকা ছাড় দেওয়ার টোপ দিয়ে গুঞ্জন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা, প্রসেসিং ফি ইত্যাদি বাবদ এক একজনের কাছ থেকে পাঁচশো থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত নেয় বলে অভিযোগ। মহিলাদের বিশ্বাস অর্জন করতে গুঞ্জন দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জাল নথি ব্যবহার করত বলে অভিযোগ। গুঞ্জনের কথা শুনে কোলাঘাটের ছাতিনদা এলাকার বহু মহিলা তাকে টাকা দিয়েথিলেন বলে অভিযোগ।

মঙ্গলবার গুঞ্জন কোলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পাইকপাড়িতে লোন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মহিলাদের নিয়ে মিটিং করছিল বলে অভিযোগ। বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় বিজেপির যুব নেতা কুনাল দাসের। ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে কুনাল ফোন করেন বিজেপির কোলাঘাট মণ্ডল-৩ এর সভাপতি দেবব্রত পট্টনায়ককে। দেবব্রতবাবু খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনায় লোন পাইয়ে দিতে সরকার কোনও এজেন্ট নিয়োগ করেনি। দেবব্রতবাবুর নির্দেশে কুনাল দাস গুঞ্জন রায়কে আরও গ্রাহক জোগাড় করে দেওয়ার নাম করে নিয়ে আসেন কোলাঘাট কাঠচড়া ময়দান এলাকায় দলের অফিসে। সেখানে গুঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁরা জানতে পারেন কোলাঘাট এলাকায় তার মতো আরও আটজন যুবক এই কাজ করছে। এর পর বিজেপি নেতাদের নির্দেশে গুঞ্জন যার অধীনে এই কাজ করত সেই ব্যক্তিকে ফোন করে কোলাঘাটে ডাকে। রাত ৯টা নাগাদ বাউড়িয়ার বাসিন্দা মানস মাইতি নামে ওই ব্যক্তি কোলাঘাটে এসে হাজির হন। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, জেরার মুখে ধৃতরা প্রতারণার কথা স্বীকার করে।

ঘটনা জানাজানি হতে, প্রতারিত কয়েকজন চলে আসেন বিজেপির পার্টি অফিসে। তাঁদের কয়েকজন মারধর করতে শুরু করেন ওই দুজনকে। ধৃতদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ ও বেশকিছু নকল নথিপত্র উদ্ধার হয়। বিজেপি নেতারা খবর দেন কোলাঘাট বিট হাউস থানায়। পুলিশ এসে গুঞ্জন ও মানসকে আটক করে নিয়ে যায় থানায়। আটক করা হয় একটি বাইক, ল্যাপটপ ও নকল নথিপত্র। বিজেপি নেতৃত্ব ও প্রতারিতরা পৃথকভাবে দুটি অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার আটক দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।

বিজেপি নেতা দেবব্রত পট্টনায়ক বলেন, ‘‘এটা একটা প্রতারণা চক্র। রাজ্যে কর্মসংস্থান না হওয়ায় বেকার যুবকরা এই ফাঁদে পা দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীকে হেয় করতে এটা তৃণমূলের চক্রান্তও হতে পারে।’’

বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের কোলাঘাট ব্লক সভাপতি মদনমোহন মিশ্র বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনলাম। খোঁজ নিয়ে দেখব। বিজেপি অনেক কথাই বলে। সে সব কথার কোনও সত্যতা নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Forgery Arrest Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy