ঝাড়গ্রামের কুসুমডাঙ্গা এলাকায় হাতির দল। নিজস্ব চিত্র।
আগামী দু’বছরে জেলার সমস্ত রেঞ্জে শুধুমাত্র ফলের চারা তৈরির নির্দেশ দিল বন দফতরের ঝাড়গ্রাম ডিভিশন। এই সময়ে বন দফতরের নার্সারিগুলিতে আম, কাঁঠাল, বেল-সহ বিভিন্ন ফলের গাছ চারা তৈরি হবে। লক্ষ্য, হাতির খাদ্যাভ্যাসে বদল আনা।
বেশ কয়েক বছর ধরেই জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে অন্যতম আতঙ্কের নাম হাতি। জেলা জুড়ে জমির ধান, আনাজ খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে হাতির দল। চালের বস্তার খোঁজে হানা দিচ্ছে স্কুল, বাড়ির রান্নাঘরে। বন দফতরের আশা, হাতির খাদ্যাভাসে বদল এলে এই পরিস্থিতির বদল হবে। বন দফতর সূত্রে খবর, এখন প্রায় সারা বছরই হাতির দল থাকে জেলায়। ঝাড়গ্রাম জেলার জঙ্গলে সেরকম ফলের গাছ নেই। ফলে হাতির খাবার হিসেবে আনাজ, চাল, ধানকেই বেশি পছন্দ করে। ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে মোট ১২টি রেঞ্জেই ফলের বাগান তৈরি করে সেই প্রবণতা বদলাতে চাইছে বন দফতর।
এতে শুধু হাতি নয়, জঙ্গল লাগোয়া প্রত্যন্ত এলাকার মানুষও উপকৃত হবেন নানা ভাবে। ক্ষতিও অনেক কমবে। বন দফতর সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে ভাবা হয়েছে হাতি যে রুট দিয়ে যাতায়াত করে, যে জঙ্গলে থাকে সেখানে ফলের গাছের চারা লাগানো হবে। প্রথম পর্যায়ে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে ৫০ হেক্টর জায়গা জুড়ে তৈরি করা হবে ওই ফলের বাগান। সেখানে প্রায় ৫০ হাজার ফলের চারা গাছ রোপণ করা হবে। বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ফলের মধ্যে সব থেকে বেশি কাঁঠাল গাছের চারা তৈরি করা হবে। কারণ, হাতি কাঠাল গাছের ফল তথা কাঁঠাল পাতা, ডাল সব কিছুই খায়।’’
যে জঙ্গলে বা জঙ্গলের পাশে ফলের গাছের চারা পোঁতা হবে সেখানে জলের ব্যবস্থাও করা হবে। জঙ্গলে পর্যাপ্ত খাবার ও জলের ব্যবস্থা থাকলে হাতি লোকালয়ে কম ঢুকবে বলেই দাবি বন দফতরের। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের জঙ্গলে পর্যাপ্ত খাবার কম থাকায় হাতি জমিতে গিয়ে ধান ও ফসল বেশি খাচ্ছে। হাতিকে লোকালয় থেকে দূরে রাখতে হলে খাদ্যাভাসের পরিবর্তনের প্রয়োজন।’’
ডিএফও জানান, আম, কাঁঠাল, বেলের মত যে সব ফল হাতি খেতে ভালবাসে সে ধরণের গাছ লাগানো হবে। সেই লক্ষ্যে আগামী দু’বছর ডিভিশনের সমস্ত নার্সারিতে শুধুমাত্র ফলের চারা তৈরি করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy