খড়্গপুর ডিভিশনের উদ্যোগে বিশ্ব হাতি দিবসে পথ নাটিকা। — নিজস্ব চিত্র।
বিশ্ব হাতি দিবস ঘটা করেই পালিত হল। শনিবার নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। কিন্তু হাতির সমস্যা মিটছে কই! ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে একশোটির মতো হাতি রয়েছে একমাস ধরে। হাতির হানায় ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি হচ্ছে। হাতিও মারা পড়ছে। শুক্রবার রাতেও গিধনি রেঞ্জের আমতলিয়া বিটের সানকিশোলে গ্রামে হাতির হানায় বাড়ি ভেঙেছে। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে বিশ্ব হাতি দিবসের অনুষ্ঠানে ছিলেন ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের ডিএফও পঙ্কজ সূর্যবংশী, প্রাণী চিকিৎসক চঞ্চল দত্ত, জুলজিক্যাল পার্কের রেঞ্জ অফিসার অতুলপ্রসাদ দে-সহ বন দফতরের আধিকারিকরা। সচেতনতা মূলক ট্যাবলোর উদ্বোধন করেন ডিএফও। আঁকা প্রতিযোগিতার পাশাপাশি পড়ুয়াদের হাতি সম্পর্কিত নানা তথ্য জানানো হয়।
খড়্গপুর ডিভিশনেও একাধিক কর্মসূচি হয়েছে। বেলদায় হাতি ও মানুষের সংঘাত এড়াতে পথনাটিকা পরিবেশিত হয়। খাজরায় বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যদের সার্চ লাইট বিলি করা হয়। নয়াগ্রামের খড়িকামাথানি থেকে কেশররেখা সাইকেল র্যালি, ফুটবল টুর্নামেন্ট, চাঁদাবিলা রেঞ্জের পাঁচকাহানিয়াত, খড়্গপুরে, সাঁকরাইলে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে আঁকা প্রতিযোগিতা হয়েছে। খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘাত বন্ধ করা। তার উপরেই পথনাটিকা, আলোচনাসভা ও বসে আঁকার আয়োজন করেছিলাম।”
রূপনারায়ণ ডিভিশনের পক্ষ থেকে গোয়ালতোড়ের হুমগড় থেকে গড়বেতা পর্যন্ত বনকর্মীদের সাইকেল র্যালি হয়। ধাদিকার কুইলিবাদ মাঠে বন সুরক্ষা কমিটি ও বন দফতরের কর্মীদের নিয়ে গড়া ১০টি দলের মধ্যে ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়। বন দফতরের দলের হয়ে খেলেন রূপনারায়ণের ডিএফও মনীশ যাদব-সহ কয়েকজন রেঞ্জার। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কুইলিবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হয় বসে আঁকা।
হাতির হানায় ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুতে অবশ্য রাশ নেই। গত আর্থিক বর্ষে ঝাড়গ্রাম ও খড়্গপুর বন বিভাগে মোট ৩৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে ২৮ জনের মৃত্যু হয়। চলতি আর্থিক বর্ষে ঝাড়গ্রাম জেলায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে মাত্র চার মাসে। চলতি বছরে দু’টি শাবক-সহ জেলায় ৬টি হাতিরও মৃত্যু হয়েছে। আর ক্ষয়ক্ষতি তো রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে সানকিশোল গ্রামে একটি হাতি ঢোকে। খাবারের সন্ধানে একটি বাড়ি ভাঙে দলছুট হাতিটি। সানকিশোল প্রাইমারি স্কুলেও ভাঙচুর চালায়। খেতের ফসল নষ্ট করে। স্থানীয় ডমন মুর্মু বলেন, ‘‘এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।’’
হাতি এখন বারোমাসের সমস্যা। রাত হলেই জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দাদের ঘুম ছুটছে হাতির তাণ্ডবে। হাতির দল খাবারের খোঁজে গ্রামে ঢুকছে। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বলেন, ‘‘যেখানে হাতির জেরে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, সেখানে ট্যাবলো প্রচার হবে। ক্ষতিপূরণের আবেদন কী ভাবে করতে হবে জানানো হবে। হাতিকে উত্যক্ত করা যাবে না বলেও প্রচার করা হচ্ছে।’’ হাতিদের গতিবিধির উপর নজর রয়েছে বলেও জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy