প্রতীকী চিত্র
বাম সরকার বিরোধী আন্দোলনে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের সঙ্গেই উচ্চারিত হয় নেতাইয়ের নাম। লালগড় ব্লকের বর্ধিষ্ণু গ্রাম নেতাই। শাসক দলের অন্দরে জল্পনা, দীর্ঘ ৯ বছর পর সম্প্রতি সেই লালগড়ের যুব তৃণমূল সভাপতি পদে রদবদলের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নয়া পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা না হলেও তৃণমূল সূত্রেই একটি তালিকা প্রকাশ্যে এসেছে। সেই তালিকা (তালিকার সত্যাসত্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার) অনুয়ায়ী তন্ময় রায়ের পরিবর্তে দায়িত্ব নিতে পারেন প্রশান্ত রাউত। শোনা যাচ্ছে, এতেই নিষ্ক্রিয় হয়েছেন তন্ময়।
এখন কেন্দ্র সরকার বিরোধী নানা কর্মসূচি নিচ্ছে তৃণমূল। কিন্তু সে সব কর্মসূচিতে নাকি দেখা যাচ্ছে না তন্ময়কে। নেতাই গ্রাম থেকে লালগড় ব্লক সদরের দূরত্ব মেরেকেটে তিন কিলোমিটার। গত ৮ সেপ্টেম্বর লালগড় ব্লক সদরে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ব্লক তৃণমূলের পথসভা ও মিছিলে যোগ দেননি তন্ময় ও তাঁর সঙ্গী, অনুগামীরা। তৃণমূল সূত্রের খবর, ব্লক স্তরের কর্মসূচিতে নেতাইয়ের সার্বিক প্রতিনিধিত্বও নাকি থাকছে না। তন্ময় অবশ্য বলেন, ‘‘আমি কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। তাই বাইরে বোরোচ্ছি না।’’ যদি অসুস্থই হন, তাহলে রোজই তাঁকে ব্যক্তিগত কাজে মোটরবাইকে চেপে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে কেন? জবাব না দিয়ে ফোন কেটে দেন যুব নেতা। আর ফোন ধরেরনি। মেসেজেরও জবাব মেলেনি।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাই গ্রামে সিপিএমের শিবির থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। মৃত্যু হয় চার মহিলা-সহ ৯ গ্রামবাসীর। ওই ঘটনার পরেই নেতাই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রতি বছর ৭ জানুয়ারি নেতাই দিবসে নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির অনুষ্ঠানে আসেন তিনি। তন্ময় শুভেন্দু অনুগামী হিসেবে পরিচিত। বর্তমান পরিস্থিতিতে দলহীন জনসংযোগে দেখা যাচ্ছে শুভেন্দুকে। গত ৩০ জুন রামগড়ে একটি বেসরকারি ক্লাবের হুল দিবসের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন শুভেন্দু। ওই মঞ্চে শুভেন্দুর পিছনে তন্ময়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। ওই দিনই ঝাড়গ্রামে রাজ্যস্তরের সরকারি হুল দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আমন্ত্রিত হয়েও সরকারি অনুষ্ঠানে যাননি শুভেন্দু। ঘটনাচক্রে তার কয়েক মাস পরে জেলা নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্য নেতত্ব। সেই বৈঠকের পরই প্রকাশ্যে আসে প্রস্তাবিত রদবদলের তালিকা।
তন্ময় নিজে জানিয়েছেন, দলে কোনও বিরোধ নেই। যদিও নেতাই-কাণ্ডের গুলিতে জখম নয়ন সেন বলেন, ‘‘তন্ময়কে ব্লক যুব সভাপতির পদ থেকে সরানোয় খুবই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। শুভেন্দুদার মতো তন্ময়ও আমাদের আপনজন। তন্ময় যে দিকে থাকবে আমরাও সে দিকে থাকব।’’ জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি শান্তনু ঘোষ বলছেন, ‘‘তন্ময়কে ফোন করে দলীয় সাংগঠনিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে বলেছি। তারপরও উনি দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছেন না বলে শুনছি। অসুস্থতার খবর জানা নেই।’’
লালগড়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরও একটি নাম। ছত্রধর মাহাতো। জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন নেতা এখন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। জঙ্গলমহলে শাসক দলের ‘মুখ’। ভোটের আগে জনসংযোগে নেমেছেন তিনিও। তন্ময় প্রসঙ্গে ছত্রধরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘তন্ময় ইদানীং সভা-মিছিলে আসছেন না। নেতাইয়ের লোকজন অনেক কিছু পেয়েছেন। দলীয় কর্মসূচিতে তাঁদের যোগ দেওয়া উচিত।’’ বৈতা অঞ্চলের যুব সভাপতি প্রশান্তের নাম প্রাথমিক তালিকায় লালগড় ব্লক সভাপতি হিসেবে ছিল। প্রশান্ত বলেন, ‘‘ব্লকের যুব-র কাজ আপাতত আমিই দেখছি। কে ব্লক সভাপতি হবে সে বিষয়ে দলনেত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy