—প্রতীকী চিত্র।
ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’য় প্রাণ হারালেন এক বিজেপি নেতার বাবা। আঙুল উঠল তৃণমূলের দিকে। বুধবার এ নিয়ে শোরগোল পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে। বিজেপির অভিযোগ, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি কেন্দ্রে ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূলের। তার পরেই বেছে বেছে তাদের নেতাদের বাড়িতে হামলা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম গৌরহরি মাইতি। ভূপতিনগর থানার অর্জুননগর অঞ্চলের ১৯৮ নম্বর বুথ ধাঁইপুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর ছেলে শশাঙ্ক মাইতি স্থানীয় বিজেপি নেতা। বিজেপির অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে শশাঙ্কের বাড়িতে হামলা করে তৃণমূল। কিন্তু বাড়িতে শশাঙ্ককে না-পেয়ে তাঁর বাবা-মা এবং স্ত্রীকে মারধর করে বেরিয়ে যায় তারা। পরে গুরতর আহত অবস্থায় বিজেপি নেতার বাবাকে নিয়ে যাওয়া হয় মুগবেড়িয়া হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ, ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল বোমা, বন্দুক নিয়ে শশাঙ্কের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা একজোট হয়ে বেরিয়ে আসায় দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তার পরে জখম গৌরহরিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শশাঙ্কের স্ত্রী খুকুমণি মাইতি অভিযোগ করেন, “গতকাল রাতে আমার বাড়িতে তৃণমূলের বিরাট দলবল হামলা চালায়। আমরা বিজেপি করি বলে টার্গেট করেছিল। আগেও বেশ কয়েকবার ওরা হামলা চালিয়েছে। প্রায়ই শাসানি দিত ওরা।’’ তিনি আরও বলেন, “রাতে হামলাকারীরা বোমা ও বন্দুক নিয়ে এসেছিল ওরা। আমাদের মারধর করছিল দেখে শ্বশুর ছুটে এসেছিলেন। তিনিও হামলার শিকার হলেন।” মৃতের বৌমার অভিযোগ, আগেও তাঁদের বাড়িতে হামলা হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তাতে নাকি আরও ‘আক্রোশ’ বেড়ে যায় তৃণমূলের।
বিজেপি নেতার বাবার মৃত্যুর ঘটনায় ভগবানপুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘এ বারের নির্বাচনে কাঁথি লোকসভায় তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে। সেই রাগেই ওরা দল বেঁধে এলাকায় হামলা চালাচ্ছে। বিজেপি কর্মীদের উপর সন্ত্রাস কায়েম করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, “মঙ্গলবার রাতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়ে নিরীহ এক প্রৌঢ়কে পিটিয়ে খুন করেছে। তাঁর ‘অপরাধ’, তিনি বিজেপি নেতার বাবা!’’ বিধায়ক জানিয়েছেন ইতিমধ্যে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলের অত্যাচারে অর্জুননগরে প্রায় দু’শো বিজেপি কর্মী এখনও বাড়িছাড়া। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। এর সঠিক বিচারের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’
যদিও গোটা ঘটনা সাজানো বলে দাবি করেছেন অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান উত্তমকুমার মাইতি। তাঁর দাবি, ‘‘গতকাল এমন কোনও হামলার খবর জানা ছিল না। যে জায়গায় হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, সেখান থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। দু’কিলোমিটার দূরে থানা। কেন তখনই কারও কাছে হামলার কোনও অভিযোগ আসেনি।’’ তাঁর দাবি, বিজেপি নেতার বাবা রাতে খাওয়া-দাওয়া করার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।’’
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের দেহ ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy