প্রতীকী ছবি। প্রতীকী ছবি।
কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো সাড়া জাগানো প্রকল্প করেও রাজ্যে নাবালিকা বিয়েতে রাশ টানা যাচ্ছে না। অতিমারি-পর্বে স্কুল বন্ধ থাকায় এই প্রবণতা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহলের জেলায় এ বার কড়া পদক্ষেপ করল প্রশাসন। ঝাড়গ্রাম জেলার এক বিডিওর অভিযোগের ভিত্তিতে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেওয়ায় বাবাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মেয়েটির এ বার উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়ার কথা ছিল।
অভিভাবকদের ডেকে বোঝানো, তার পরে ১৮ না হলে মেয়ের বিয়ে দেবেন না এই মর্মে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া— নাবালিকা বিয়ে রুখতে এমন সব পদক্ষেপই করে থাকে পুলিশ-প্রশাসন। তবে ঝাড়গ্রামের ওই অভিযোগকারী বিডিও বলছেন, ‘‘বাবা-মা মুচলেকা দিলেও বহু ক্ষেত্রেই কিছু দিন পরে জানতে পারি মেয়েটি আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছে। সেখান থেকেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তাই এ বার কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্তেরও বক্তব্য, ‘‘নাবালিকা ও নাবালককে বিয়ে দেওয়া অপরাধ। তাতে ইন্ধন জোগানোও অন্যায়। আর অন্যায় করলে শাস্তি পেতেই হবে।’’
ঝাড়গ্রামের ১৭ বছরের ওই নাবালিকা গ্রাম লাগোয়া হাইস্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত। তবে উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ করেনি সে। ফলে, অ্যাডমিট কার্ডও আসেনি। ইতিমধ্যে গত ৩ মার্চ বাড়িতেই অনুষ্ঠান করে পরিজনেরা তার বিয়ে দিয়ে দেন। পাত্র ওড়িশার। বিয়ের পরে খবর পান বিডিও। ১২ মার্চ বিডিও ওই নাবালিকার পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ‘প্রোহিবিশন অব চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট, ২০০৬’-এর ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। ওই নাবালিকার বাবাকে নোটিস পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি থানায় যাননি। তার পরে বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার ধৃতকে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।
ওই নাবালিকার বাবার বক্তব্য, ‘‘আমার তিন মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়ে বড় হলে বিয়ে দেওয়ার চাপ থাকে। ভাল পাত্র পাওয়ায় বিয়ে দিয়েছিলাম। এ রকম তো অনেকেই বিয়ে দেন। অথচ আমাকে গ্রেফতার করা হল।’’ নাবালিকা মেয়ের বিয়ের জন্য বাবাকে গ্রেফতার, জেলার কেউই সে ভাবে মনে করতে পারছেন না। ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট আইনজীবী কৌশিক সিন্হা বলেন, ‘‘আমার কর্মজীবনে এমনটা দেখিনি। বিডিও-র অভিযোগ দায়ের খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এমন নজির থাকলে মানুষজন সচেতন হবেন।’’ ঝাড়গ্রামে নাবালিকা ও বাল্য বিবাহ রোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা একটি সংস্থার কর্ণধার স্বাতী দত্তের মত, ‘‘যে হারে করোনা কালে বাল্যবিবাহ বেড়েছে, তাতে এই গ্রেফতার খুবই প্রয়োজন ছিল। আইন বলে যে কিছু রয়েছে তা মানুষকে জানানো দরকার ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy