হাসপাতালে শুয়ে ছেলে। চিন্তায় মা। নিজস্ব চিত্র
পুজোর কেনাকাটা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। উৎসবের মরসুমে দিনগুলি বেশ হইচই করেই কাটছিল হলদিয়া ক্ষুদিরাম কলোনির বাসিন্দা রঞ্জিত মণ্ডল এবং তাঁর পরিবারের। হইচই, আনন্দের তাল কেটেছে শুক্রবার। ওই দিন হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালে লাগা আগুনে ঝলসে গিয়েছেন রঞ্জিত। এক লহমায় নেমে এসেছে তাঁর পরিবারের মাথায় কালো মেঘের ছায়া।
বোন এবং মা’কে নিয়ে রঞ্জিতের পরিবার। দেড় মাস হল তিনি হলদিয়া পেট্রোকেমে ঠিকা শ্রমিক হিসাবে চাকরি করছেন। প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও কাজে গিয়েছিলেন রঞ্জিত। আচমকা ন্যাপথা ক্র্যাকার ইউনিটে আগুন লাগায় আহত হন তিনি। গুরুতর আহত রঞ্জিত বর্তমানে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুজোর আগে তো দূর অস্ত পুজোর কতদিন পরে তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেন সে নিয়ে চিন্তত তাঁর পরিবার। পুজোয় আনন্দ করার কথা তো তাঁরা ভাবতেও পারছেন না।
রঞ্জিতের কাকিমা প্রতিমা বলেন, ‘‘সুস্থ ছেলেটা কাজ করতে গেল। কী যে হয়ে গেল, বুঝতে পারছি না। ঘটনার আগের দিনই মানুষটা বোনের জন্য নতুন পোশাক আর আমাকে শাড়ি কিনে দিয়ে গেল। আর আজ সে হাসপাতালে। আমাদের পুজো শেষ।’’
আবার, বিশ্বকর্মা পুজোয় ছুটি কাটিয়ে সবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন প্রদীপ ভৌমিক। হলদিয়ার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রদীপও পেট্রোকেমে ঠিকা শ্রমিক। আগুনে আহত প্রদীপও কলকাতায় চিকিৎসাধীন। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে প্রদীপের পরিবারে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা, স্ত্রী এবং সন্তান। প্রদীপের বাবা চন্দন ভৌমিক বলেন, ‘‘পুজোর মুখে সবাই যখন কেনাকাটায় ব্যস্ত তখন আমার ছেলে হাসপাতালে শুয়ে। বৌমা ভেঙে পড়েছে। বাবার অবস্থা দেখে উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে আমার বছর চোদ্দোর নাতি।’’
শুধু রঞ্জিত, প্রদীপ নন, একই অবস্থা মোট ১২টি পরিবারের। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত ১২ জনই বর্তমানে কলকাতার হাসপাতালে রয়েছএন। তাঁদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেম হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস কর্তৃপক্ষ। আহতদের পরিজনদের কলকাতায় যাওয়া-আসা, সেখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফেই। তাতেও অবশ্য স্বস্তি নেই পরিবারগুলির। তাঁদের কথায়, ‘‘পুজোর রোশনাই তো আমাদের কাছে ফিকে।’’
এ দিকে, কারখানা সূত্রের খবর, আগুন লাগার কারণ জানতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে আর কী ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করবে কমিটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy